Header Ads

শিক্ষার উপর রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস, সিএএ ইস্যুতে যাদবপুরের ছাত্রকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ

সৈকত ঘোষ, কলকাতাঃ বাংলা ভাষার টানে নিজের দেশ ছেড়ে এক তরুণ চলে এসেছিলেন ভারতে। কবিগুরুর শান্তিনিকেতনে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করেন তিনি। পরে কলকাতার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে তুলনামূলক সাহিত্যে ভর্তি হন। কিন্তু স্নাতকোত্তর পাঠ অসম্পূর্ণ রেখেই তাঁকে ফিরে যেতে হচ্ছে নিজের দেশে। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে হওয়া একটি মিছিলে দেখা গিয়েছিল তাঁকে, আর তাতেই কেন্দ্রীয় সরকারের রোষের মুখে পড়লেন পোলিশ ছাত্র কামিল শেদচিনস্কি। সিএএ-এর বিরোধিতার অভিযোগে ওই ছাত্রকে ভারত ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের 'ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস'।
কয়েক দিন আগেই পোলিশ ছাত্র কামিলের হাতে আসে সেই নির্দেশনামা। ১৫ দিনের মধ্যে তাঁকে ভারত ছাড়তে বলা হয়েছে। তবে বিষয়টি নিয়ে পোলিশ ছাত্র কামিল কোন মন্তব্য করতে চাননি। কেন্দ্র সরকারের এই নির্দেশ মেনে নিতে পারছেন না কামিলের সহপাঠীরা। যাদবপুরের এক ছাত্রী তথা কামিলের সহপাঠী শ্রেয়সী দাশগুপ্ত বলেন "ওর সঙ্গে কথা বললেই বোঝাযায় বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতি নিয়ে কতটা প্যাশনেট। নিজের দেশ ছেড়ে এত দুরে এসেছিল। এখন তাকে দেশ ছাড়তে বলা হচ্ছে। একজন ছাত্রকে জোর করে শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে। এটা কখনওই মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। বন্ধু কামিলের জন্য খুব কষ্ট হচ্ছে। কেন্দ্র সরকারের এহেন সিদ্ধান্ত অত্যন্ত অপমান জনক। স্বপ্নেও ভাবিনি এভাবে একজন বিদেশি ছাত্রকে দেশ ছাড়া করা হবে। দেশের বুকে কালো অধ্যায় নেমে আসছে।” তবে 'ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস’কে চিঠি দিয়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে পোলিশ ছাত্র কামিল শেদচিনস্কি সিএএ-এর বিরুদ্ধে আন্দোলনে পথে নামেন নি। বর্তমান পরিস্থিতি ও মানুষের অবস্থা বুঝতে দাঁড়িয়ে থেকে মিছিল দেখছিলেন।
উল্লেখ্য কয়েকদিন আগে একই ভাবে বিশ্বভারতীর বাংলাদেশী পড়ুয়া আফসারা অনীকা মীমকেও ঠিক একই ভাবে সিএএ-এর বিরধিতার অভিযোগ তুলে দেশ ছাড়তে বলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের 'ফরেন রিজিওনাল রেজিস্ট্রেশন অফিস'। এবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াকেও একই ভাবে নির্দেশ দেওয়ায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে শিক্ষা মহলে। ইতিমধ্যেই বিষয়টি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সমালোচনায় মুখর হয়েছেন শিক্ষাপ্রেমীরা। বিষয়টিকে ‘শিক্ষা ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস’ বলে উল্লেখ করেছেন রাজ্যের বুদ্ধিজীবীরা।

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.