বিজেপি কে মাত দিতে সীতারাম নয়; রাজ্যসভায় পাঠানো উচিত কানহাইয়া কে। #Editorial
অর্ক সানা, সম্পাদক(নজরবন্দি): কথা উঠেছিল গতবারেই; কিন্তু হাত ধরি ধরি করেও ধরেনি বামেরা! অবশ্য বাম বলার থেকে বলা ভাল সিপিআইএম। সীতারাম ইয়েচুরি কে রাজ্যসভায় পাঠিয়ে কংগ্রেস চেয়েছিল ২০১৬ সালের বিধানসভার প্রতিদান দিতে; কিন্তু অনেক জল গড়ালেও শেষপর্যন্ত প্রস্তাবে 'না' করেছিল আলিমুদ্দিন থেকে এ.কে. গোপালন ভবন।
শেষ মুহুর্তে বিকাশ রঞ্জন ভট্টাচার্যের নাম প্রস্তাব করে আলিমুদ্দিন; বিকাশে রাজি না হয়ে রাজ্য থেকে অভিষেক মনু সিংভি কে রাজ্য সভায় পাঠায় কংগ্রেস।
কয়েক বছর কেটে গেছে আবার রাজ্যসভা নির্বাচন আসন্ন। রাজ্যে বামেদের যা শক্তি সেই শক্তি তে একক ভাবে সিপিআইএম বা কোন বাম দলই রাজ্যসভায় পাঠাতে পারবে না কোন প্রতিনিধি। কংগ্রেসের হাত ধরতেই হবে! গতবার রাহুল গান্ধী বিজেপি-র বিরুদ্ধে সংসদের উচ্চ কক্ষে বিরোধীদের বিজেপি বিরোধী লড়াইকে জোরদার করতে নিজেই বার্তা দিয়েছিলেন সিপিআইএম কে সমর্থন করার; অর্থাৎ এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভার প্রতিনিধি রুপে দেখতে চেয়েছিলেন সীতারাম ইয়েচুরি-কে; পিছিয়ে এসেছিল সিপিআইএম। কিন্তু এবার যা খবর তাতে আলিমুদ্দিন চাইছে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে রাজ্যসভায় প্রতিনিধি পাঠাতে। আর সেই প্রতিনিধির নাম সীতারাম ইয়েচুরি।
কিন্তু আবার সীতারাম ইয়েচুরি কেন? ১৯ অগাস্ট ২০০৫ থেকে ১৮ই অগাস্ট ২০১৭ পর্যন্ত টানা ১২ বছর রাজ্য থেকে রাজ্য সভার প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন ভিন রাজ্যের সীতারাম।
বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বিজেপি বিরোধী বক্তব্য রাখার জন্যে সীতারাম অবশ্যই ভাল মুখ, কিন্তু তিনি একাধারে সিপিআইএমের সর্বভারতীয় সম্পাদকও বটে। দলের মধ্যে জনপ্রিয়তা থাকলেও সীতারাম নতুন প্রজন্ম বা সাধারন মানুষের কাছে তেমন পরিচিত বা জনপ্রিয় মুখ নন।
অন্যদিকে এই মুহুর্তে দেশে বাম শক্তির অন্যতম মুখ হলেন কানহাইয়া কুমার। দেশ জুড়ে CAA/NRC/CAB বিরোধী সভা করে চলেছেন তিনি। দেশ জুড়ে বিজেপি বিরোধী সব দলের কাছেই কানহাইয়ার জনপ্রিয়তা রয়েছে; সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম গুলো সবসময় নজর রাখে কানহাইয়ার কার্যকলাপের ওপর। তাকে যথেষ্ট সমঝে চলে বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্ব। এক কথায় বলা যায় দেশের মধ্যে এই মুহুর্তে সর্বভারতীয় বাম রাজনীতির সবথেকে আলোচিত এবং জনপ্রিয় মুখ কানহাইয়া কুমার।
কানহাইয়ার বক্তব্যে যেমন থাকে আবেগ তেমনি থাকে চাঁচাছোলা যুক্তি। নব প্রজন্মের এমন নেতা কে যদি সংসদে পাঠানো হয় তাহলে বিজেপি যে বেকায়দায় পড়বে তা বলাই বাহুল্য। সীতারাম থেকে ডি রাজা সবাই পছন্দ করেন কানহাইয়া কুমার কে। তাই কানহাইয়া কে রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় পাঠানোর উদ্যোগ নিক আলিমুদ্দিন, ইয়েচুরি না হয় সংগঠনের কাজই করুন।
প্রশ্ন উঠতে পারে কানহাইয়া তো সিপিআই দলের সদস্য তাকে কেন রাজ্যসভায় পাঠানোর উদ্যোগ নেবে সিপিআইএম। সন্দেহ নেই ভাল প্রশ্ন। উত্তর হল সিপিআইএম কেন তাকে রাজ্য সভায় পাঠাবে? সিপিআই পাঠাবে! এই মুহুর্তে রাজ্য বিধানসভায় বামেদের প্রতিনিধি সংখ্যা ৩১ জন। যার মধ্যে সিপিআইএম ২৫, আরএসপি ৩, ফরোয়ার্ড ব্লক ২ এবং সিপিআই ১।
সিপিআই প্রস্তাব করুক কানহাইয়া কুমারের নাম এবং তাকে সমর্থন করুন অন্য বামদল গুলো; অবশ্যই উদ্যোগ নিতে হবে সিপিআইএম এবং খোদ সীতারাম ইয়েচুরি কে।
সিপিআইএমের এই একটা উদ্যোগ দেশের মানচিত্রে বদলে দিতে পারে আগামীদিনে বামপন্থার ভবিষ্যৎ। অন্যদিকে বার্তা দেওয়া হবে নবীন প্রজন্মকেও।পাশাপাশি কানহাইয়া কুমার রাজ্যসভায় গেলে যথেষ্ট খুশি হবে কংগ্রেসও সেক্ষেত্রে সমর্থনের সম্মতি দিতে কার্পণ্য করবে না কংগ্রেস হাই কমান্ড।
ভেবে দেখবেন কমরেড।

No comments