Header Ads

বাংলার প্রথম স্পেস ফিকশন ছবি 'দিন রাত্রির গল্প'

নজরবন্দি ব্যুরো :মঙ্গলের বুকে প্রথম মানুষ বাংলার মেয়ে- স্পেস ফিকশন এবার বাংলা সিনেমার হাত ধরে। দিন আনি দিন খাই এর মধ্যবিত্ত জীবনে বাঙালি কিন্তু আকাশ দেখার চর্চা ছাড়েনি। এখনো কোন কোন বাবা তাঁর সন্তানকে চিনিয়ে দেন শুকতারা অথবা সপ্তর্ষিমন্ডল।

 আকাশ ছুঁতে চাওয়ার ইচ্ছা তো সব মানুষের থাকে , তাই না? সেই আকাশ ছোঁয়া স্বপ্নগুলো এবং বাংলার প্রথম স্পেস ফিকশন নিয়ে আসছেন পরিচালক প্রসেনজিৎ চৌধুরী। তাঁর আগামী সিনেমা 'দিন রাত্রির গল্প' তে। নাসার থেকে এক গোপন অভিযানে যাচ্ছেন অরণিমা চ্যাটার্জী, অথচ তার বাবা মা জানেন না সেটা। সাতদিন মেয়ের খোঁজ না পেয়ে যখন দুজনেই চিন্তিত, বাড়িতে আসে এক অদ্ভুত কল। নাসার থেকে লোক আসছেন মেয়ের খবর জানাতে। রহস্য আরো ঘনীভূত হয় যখন জানা যায় মঙ্গলগ্রহে প্রথম পা রাখতে চলেছেন অরুণিমা। এরপরের চমক নাহয় উহ্যই থাক। দর্শক চমকে যাবেন এর পরের ঘটনাপ্রবাহে। এক জোরালো সূর্যের আলোয় শুধু ধাধিয়ে যেতে পারে চোখ। আলোতেই যদিও শেষ নয় এই সিনেমা। এক গভীর কালো রাতের গল্পও বুনেছেন পরিচালক। এক বৃষ্টির রাতে অচেনা পথে একটি মেয়ে এবং একটি লোকের দেখা হল। লোকটি সেই দুর্যোগের রাতে আশ্রয় দিল মেয়েটিকে। কিন্তু সেই গোটা বাড়িতে জেগে আছে যেন এক অদ্ভুত অস্বস্তি। ভদ্রলোক জানতে চেষ্টা করেন মৃত্যুর রহস্য, সঠিক পথ অনুসরণ করলে কথা বলা যায় মৃত্যুর সাথেও বলে মানেন তিনি। শুরু হয় গল্পের রোমাঞ্চকর অধ্যায়। মেয়েটি কি বাড়িতে বন্দী? কি করেন ভদ্রলোক? তবে কি সত্যিই আছে আলৌকিক -এরকম নানা প্রশ্ন দর্শককে বসিয়ে রাখবে শেষ পর্যন্ত। এমনকি সিনেমার শেষেও চমকেই উঠবেন তারা। দিন ও রাত্রি মিশে গেছে এই গল্পে অনায়াস দক্ষতায়, প্রসেনজিৎ চৌধুরী এবং সুপ্রীতি চৌধুরী দুজনে মিলে লিখেছেন এই গল্প। সুপ্রীতির অভিনয়ক্ষমতাও ঋদ্ধ করেছে সিনেমাটিকে। সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক শান্তনু দত্ত। মুহূর্তদের ক্যামেরাবন্দী করেছেন মৃন্ময় মন্ডল। সিনেমাটির ভিএফ এক্স এর দায়িত্বে রয়েছেন দীপঙ্কর দাস। সম্পাদনা করেছেন প্রদীপ দাস। কিছু অসামান্য চরিত্র দেখবেন দর্শকেরা এই সিনেমায়। প্রতিটি চরিত্রই মনে দাগ রেখে যাবে।

 প্রদীপ মুখার্জী, রুমকি চ্যাটার্জী, রজতাভ দত্ত , দেবেশ রায় চৌধুরী, সৌরভ চক্রবর্তী , রায়তী ভট্টাচার্য-র মত কিছু অসামান্য অভিনেতারা জুড়ে আছেন এই সিনেমায়। অরুণিমার বাবার চরিত্রে প্রদীপবাবুর অভিনয় আপনার চোখের কোণকেও একটু ভিজিয়ে তুলবেই। সত্যজিৎ রায়ের সিনেমার নায়কের অভিনয় মুগ্ধ করেই আমাদের সবসময়। তবে আলাদা করে বলতে হবে রজতাভর কথা। অভিনয় নিয়ে নিরন্তর কাটাছেঁড়া করে চলেছেন তিনি। ইতিমধ্যেই লঞ্চ করে যাওয়া ট্রেলারে যখন তিনি বলে ওঠেন ' পৃথিবীর সবচেয়ে বড় খুনি, আমাদের ঈশ্বর।' বুকের ভিতরটা একটু কেঁপে যায় বোধহয় আপনারও। সব মিলিয়ে অপেক্ষার শুরু। ২৮শে ফেব্রুয়ারি আসতে চলেছে 'দিন রাত্রির গল্প'। সত্যি যদি এমন হত? মঙ্গল গ্রহে পা রাখত বাঙালী মেয়ে? বাস্তবে না হলেও সিনেমায় কিন্তু ইতিমধ্যে মঙ্গল গ্রহে পারি দিয়েছে আমাদের ঘরের মেয়ে অরুণিমা। কিন্তু সে কি পৌঁছতে পাড়বে মঙ্গল গ্রহে? না আগাগোড়া সব মিথ্যে? কোন এক অশনি ষড়যন্ত্র? আমাদের কোলকাতা শহরের এক ছোট্ট গলির বাড়িতে নাসার লোকজন এসে যদি বৃদ্ধ বাবা মা কে জানায় তাদের একমাত্র মেয়ে পারি দিচ্ছে মঙ্গল গ্রহে সেটা কতটা বিশ্বাস যোগ্য? এমনই সব প্রশ্ন নিয়ে আসছে “দিন রাত্রির গল্প” ।

ইতিমধ্যে এই সিনেমার ট্রেলারে দেখা গিয়েছে তাক লাগানো মহাকাশযানের দৃশ্য। বাংলায় যা সর্বপ্রথম। এই সিনেমার অন্যতম সম্পদ, প্রদীপ মুখার্জি, দেবেশ রায় চৌধুরী ও রুমকি চ্যাটার্জীর পাশাপাশি সুপ্রিতি চৌধুরী ও রায়তি ভট্টাচার্যের অসামান্য অভিনয়। দিনের গল্পে মঙ্গল পারির কাহিনী থাকলেও রাতের গল্প কিন্তু একদম গা ছমছমে সাসপেন্স থ্রিলার। রজতাভ দত্তের হারহিম করা অভিনয়, অভিনব গল্প আর অসামান্য ক্যামেরা ও শব্দের কাজ আপনাকে মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে। ডিরেক্টর প্রসেঞ্জিত চৌধুরী এই দুটি গল্পকে জুড়ে দিয়েছেন নিপুণ মুন্সিয়ানায়। কোলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নির্বাচিত এই ছবি ইতিমধ্যে প্রশংসিত হচ্ছে গুনি মহলে। অভিনেতা রজতাভ দত্ত নিজে উচ্ছসিত এই ছবি নিয়ে। তিনি বলেছেন এখনও পর্যন্ত বাংলায় এই ধরনের ছবি হয় নি। এই সিনেমার কার্যকারী প্রযোজক আসিক ইকবাল ও সায়ন্তন দেবনাথ ইতিমধ্যে ছবিটি দেখিয়েছেন অনেক নামী দামী পরিচালক ও সমালোচকদের। ইতিমধ্যে ছবিটি দেখানো হয়েছে সত্যজিৎ রয় ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটুট এর ডিন অশোক অশোক বিশ্বনাথনকে। তিনি এই ছবির প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিনি বলেছেন এই ছবির মেকিং স্টাইল এর আগে তিনি বাংলা সিনেমায় দেখেন নি। ডিরেক্টর অনিকেত চট্টোপাধ্যায় এর মতে এই ছবি দেখে তিনি বিস্মিত, এমন একটা ভাবনা নিয়ে যে ছবি করা যায় তা অবিশ্বাস্য। ডিরেক্টর রাজা সেন প্রশংসা করেছেন এই সিনেমার VFX (VFX Supervisor দীপঙ্কর দাস ) ও এডিটিং এর (এডিটর-প্রদীপ দাস) । রাজা সেন অকপটে স্বীকার করেছেন এই ছবি দেখে তিনি চোখের জল ধরে রাখতে পারেন নি। ডিরেক্টর সুব্রত সেনের মতে দিন রাত্রির গল্প বাংলা সিনেমায় একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা করল। কবির সুমন, ব্রাত্য বসু, কৌশিক সেন, মনোময় , সোমলতা, মানসী সিনহা, দেবদূত, পার্থ প্রতিম দেব থেকে শুরু করে বহু গুনি মানুষ আশাবাদী এই সিনেমার সাফল্য নিয়ে। ডিরেক্টর প্রসেঞ্জিত চৌধুরী বলেছেন বাংলার প্রথম স্পেস ফিক্সান বানানোর জন্য তিনি এই সিনেমা বানান নি বরং অন্য রকম দুটো গল্প তিনি বলতে চেয়েছেন, যে দুটো গল্পের মাধ্যমে তিনি তাঁর বিশ্বাসকে খুঁজতে চেয়েছেন।
 কিন্তু ডিরেক্টরের বক্তব্য যাই থাক না কেন নেট দুনিয়া ইতিমধ্যে সরগরম বাংলার প্রথম স্পেস ফিক্সান নিয়ে। কারণ বাংলা সিনেমায় নাসা আর মহাকাশযান! সত্যি ভাবা যাচ্ছে না। রিলিসের আগেই বহু প্রশংসিত ছবিটি মুক্তি পেতে চলেছে আটাশে ফেব্রুয়ারি কোলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী হল গুলিতে।

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.