Header Ads

বেসরকারি শিক্ষার খরচে লাগাম পরিয়ে হিরো কেজরিওয়াল,আমাদের রাজ্যে কবে হবে?

অরুনাভ সেনঃ অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে হ্যাটট্রিকের পিছনে শিক্ষা-স্বাস্থ্য সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ন বিষয়ে অগ্রাধিকার দেওয়ার সুফল ভোটবাক্সে ডিভিডেন্ট দিয়েছে সেটা অস্বীকারের কোনও উপায় নেই৷ হ্যাঁ অনেকে স্বীকার করুন বা না করুন সব অভিভাবক চান তাদের সন্তান ভাল স্কুলে পড়বে৷ভালভাবে শিক্ষা অর্জন করবে৷স্বভাবত সন্তানের শিক্ষা আরম্ভের শুরুতেই মোটা ফি দিয়ে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোতে ভর্তির জন্য কার্যত প্রতিবছর অভিভাবকদের মাথার চিন্তা বেড়ে যায়৷কিন্তু সবার সাধ থাকলেও সাধ্যটা থাকেনা৷বেসরকারি স্কুলগুলির আকাশছোঁয়া ফি,বহু ক্ষেত্রে যা অন্যায্য,বাড়তি বলেই মনে হয়েছে বেশীরভাগ মানুষের কাছে৷আমাদের রাজ্যে বেসরকারি স্কুলগুলোর বাড়তি ফি আদায়ে লাগাম টেনে ধরার একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা সরকারি স্তরে হলেও খুব বিরাট সাফল্যের মুখ দেখেছে বলে মনেই করেন না অধিকাংশ মানুষ৷অর্থাৎ কোথাও না কোথাও সাধারন মানুষ মনে করেন রাজ্য সরকার মনে করলে বেসরকারি স্কুলগুলির বাড়তি ফি,র লাগাম পরানো সম্ভব৷অন্তত অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সরকার মুখে নয় সেই কাজটি বাস্তবে করে দেখিয়েছেন৷
 দিল্লিতে আম আদমি পার্টি ক্ষমতায় আসার আগে বেসরকারি বিদ্যালয়গুলি প্রতিবছর নিজেদের ইচ্ছামতো বেতন বৃদ্ধি করত। কিন্তু কেজরিওয়ালের সরকারের বড় সাফল্য তার লাগাম টেনে ধরতে অনেকটাই সফল হয়েছে। তার সরকার বেসরকারি স্কুলগুলোকে অস্বাভাবিক বেতন বৃদ্ধি করার কোনো সুযোগই দেয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবায় বেসরকারি হাসপাতালগুলি অবিশ্বাস্য খরচে কিছুটা লাগাম পরাতে সফল হলেও, বেসরকারি স্কুলগুলির মর্জিমাফিক ফি বৃদ্ধিতে লাগাম পরাতে পেরেছেন বলে মনে করেন না বেশীরভাগ মানুষ৷অথচ রাজ্যের অধিকাংশ মানুষ মনে করেন এই বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে অনুধাবন করা উচিৎ সরকারের৷এবং নাগরিক তথা অভিভাবকদের স্বার্থ রক্ষিত হয় এমন কোনও পদক্ষেপ সরকারের আশু নেওয়া প্রয়োজন৷ নির্বাচনের আগে দিল্লির সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করে কেজরিওয়াল ট্যুইট করেছিলেন যতদিন দিল্লিতে এই সৎ সরকার থাকবে, ততদিন অভিভাবকদের স্কুলের বেতন নিয়ে চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই। কোনো বেসরকারি বিদ্যালয়কে ইচ্ছামতো বেতন বাড়ানোর সুযোগ দেওয়া হবে না। আগের পাঁচ বছরের মতো আগামীতেও এই বিষয়টি আমরা নিয়ন্ত্রণ করবো। রাজ্যের মানুষ থেকে ভোটাররা একজন মুখ্যমন্ত্রীর মুখে এমন কথা শুনলে সত্যিই সেই সরকারের প্রতি মনের অজান্তেই অনুরাগ তৈরি হয়৷ তবে কেজরিওয়ালের সরকার শুধু বেসরকারি বিদ্যালয়গুলোর বাড়তি বেতন নেওয়াই বন্ধ করেনি। সেই সাথে যারা অতিরিক্ত বেতন নিয়েছে, তাদের বাড়তি টাকা ফেরত দিতে বাধ্য করেছে৷ আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সরকারি বিদ্যালয়গুলোর উন্নয়নে দিল্লি সত্যি সারাদেশের মডেল হতে পারে৷ আপ সরকার সরকারি বিদ্যালয়গুলোর নজিরবিহীন উন্নয়ন করেছে। বিদ্যালয়ের পরিকাঠামো থেকে শুরু করে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ এবং স্কুলের সাথে অভিভাবকদের সম্পর্ক তৈরি, সবকিছুতেই একটা বৈপ্লবিক পরিবর্তনের ছোঁয়া পরিলক্ষিত হয়েছে৷
এই প্রসঙ্গে কেজরিওয়ালের বক্তব্য কত সদর্থক, তিনি বলেছিলেন আমাদের সরকারি বিদ্যালয়গুলো বেসরকারি বিদ্যালয়ের চেয়ে ভালো না হলেও অন্তত একেবারেই মন্দ নয় তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেছি। কথাগুলো মিথ্যা নয়৷ দিল্লির বাজেটের শতকরা ২৫ ভাগই শিক্ষার পেছনে ব্যয় করা হয়৷ সেইজন্য দিল্লির সরকারি স্কুলগুলির বিশ্বমানের পরিকাঠামো, স্মার্ট ক্লাসরুম, সুইমিং পুল, পাঠাগার, আধুনিক ডেস্ক এবং উন্নতমানে ল্যাব সবই আছে৷ কোথাও কোথাও ভ্রম হতেই পারে বেসরকারি স্কুলগুলিকে পরিকাঠামোয় পিছিয়ে দিয়েছে কেজরিওয়ালের সরকার৷ এত কথা বলার মূল কারন আমাদের সবার ভিন্ন রাজনৈতিক মতাদর্শের প্রতি আস্থা,বিশ্বাস আছে৷ কিন্তু আমার রাজ্যেও যদি সরকারি স্কুল পরিকাঠামোয় বেসরকারি স্কুলকে টেক্কা দেয়, প্রায় নিখরচায় আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম বিশ্বমানের শিক্ষা পরিষেবা পায় তবে বোধহয় আমাদের সবারই লাভ৷ কেজরিওয়ালের রাজনীতির আঙ্গিক বদল,বা মোদি সম্পর্কে তার আক্রমনাত্মক রাজনীতির ঘরানা বদল নিয়ে অনেক আলোচনা হচ্ছে৷ হতেই পারে.সবাই তার মতামত প্রকাশ করতে পারেন, আমাদের সংবিধান আমাদের সেই স্বাধীনতা দিয়েছে৷ কিন্তু সবকিছু করেও তার দলের রাজনৈতিক নীতির পক্ষে বা বিপক্ষে থাকিনা কেন,দিনের শেষে তার সরকারের উন্নয়নের মডেলকে আমরা কেউ অস্বীকার করতে পারছি না৷
Loading...

1 টি মন্তব্য:

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.