নেতা হয়েই আছেন থাকবেনও; আমাদের গর্বের নেতাজি সুভাষ। #Najarbandi
নজরবন্দি ব্যুরো: এবছর সুভাষচন্দ্র বসুর ১২৩ তম জন্মবার্ষিকী বর্তমান দক্ষিণ ২৪ পরগনার কোদালিয়া গ্রামে তার পৈতৃক নিবাস হলেও ওকে কর্মসূত্রে থাকতে হতো উড়িষ্যার কটকে। সেখানেই জানকীনাথ প্রভাবতী ষষ্ঠ সন্তান সুভাষের জন্ম হয়েছিল। সেই ১৮৯৭ সালের জাতককে কিরে আজও দেশে-বিদেশে আলোচনার অন্ত নেই। শুধু ২৩শে জানুয়ারি তাঁর জন্মদিবসেই নয় প্রায় বছরভর নানা সূত্রে যেভাবে তিনি আলোচনায় উঠে আসেন আজ এতো বছর পরেও তাতে তাঁর ঈর্ষণীয় জনপ্রিয়তা প্রশ্নাতীত মাত্রা পেয়েছে। এই বীর বাঙালির সাহস, মেধা, শোর্য ও কর্ম চেতনা, সর্বোপরি দেশ প্রেম আজও নিশ্চিতভাবে অনুকরণযোগ্য।
কটকেই শিক্ষালাভের সূচনা হয়েছিল সুভাষের। পাঁচ বছর বয়সে কটকে রাভেনাশ কলেজিয়েট স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিনটি সুভাষ নিজেই পরবর্তীতে জানিয়েছেন এইভাবে: "আমার কাছে এটি একটি উৎসবের দিন বলেই মনে হয়েছিল।..... আমার প্রায় সমবয়সী দুই মামা ও আমার সঙ্গে স্কুলে ভর্তি হবেন। তৈরি হয়ে যে গাড়ি চড়ে আমরা স্কুলে যাব, তার দিকে ছুটে গেলাম ঠিক তখনই দুর্ভাগ্যবশত পা পিছলে আমি পড়ে গেলাম। আমার লেগে ছিলো মাথায়, ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়েছিল; হুকুম হল আমাকে শুয়ে থাকতে হবে। গাড়ির চাকার ঘরঘর শব্দ তিন থেকে ক্ষীণতর হয়ে দূরে মিলিয়ে গেল। ভাগ্যবান যারা চলে গেল, আর আমি পড়ে রইলাম।" কিন্তু ওস্তাদের মার তো শেষ রাতে। তাই সূচনাতেই যে পদস্খলন ঘটেছিল তা মিথ্যা হয়ে গেল অচিরেই। উঠে দাঁড়িয়ে জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিলেন তিনি। প্রবেশিকা পরীক্ষায় সুভাষ পেলেন স্থান। কলকাতায় এসে ভর্তি হলেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। পরে ইংল্যান্ডে গিয়ে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থ হয়ে দেশে ফিরলেন।
এইবার শুরু হল সুভাষ এর রাজনৈতিক জীবন। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন এর ডাক তাঁকে এনে ফেলল জাতীয় আন্দোলনের উত্তাল প্রবাহে। এদেশে ছাত্রদের জন্য 'গৌড়ীয় বিদ্যায়তন' নামে এক জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছিলেন দেশবন্ধু। সুভাষ প্রথমে হলেন তার অধ্যক্ষ।১৯৩১ সালে কলকাতা কর্পোরেশনের মেয়র হলেন। ১৯৩৮ ও ১৯৩৯ সালে পরপর দুবার জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলেন। কিন্তু কংগ্রেসের নরমপন্থী দের মতে সায় দিয়ে চলতি হাওয়ার পন্থী হতে চাননি সুভাষ। তাই কংগ্রেস ছেড়ে 'ফরওয়ার্ড ব্লক' নামে নিজস্ব একটি দল গঠন করলেন।
ইতিমধ্যে দেশ আরও উত্তাল হয়ে উঠল।১৯৪১ সাল ২৬শে জানুয়ারি পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে দেশ ত্যাগ করলেন। সর্বশক্তি নিয়ে ব্রিটিশ কে দেশ থেকে উৎখাত করতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। আগে থেকেই জাপানে ষাট হাজার পরিতক্ত ভারতীয় সিপাহিকে নিয়ে একটা বাহিনী গড়েছিলেন রাসবিহারী বসু ও মোহন সিং।১৯৪৩ সালে জাপানে সেই আজাদ হিন্দ ফৌজের দায়িত্ব নিলেন সুভাষ।
এরপরের ইতিহাস সকলেরই জানা।১৯৪৫ সালের পর হঠাৎ নীরব হয়ে গিয়েছে ইতিহাস সুভাষকে নিয়ে।কিন্তু বাঙালির ছেলে সুভাষের এইযে দুঃসাহসী জীবন এর আসল প্রেরণা স্থল স্বামী বিবেকানন্দ। সুভাষ লিখেছেন," আমার জীবনে যখন বিবেকানন্দের আবির্ভাব ঘটে তখন সবে পনেরোয় পড়েছি। তারপর আমার মধ্যে শুরু হলো এক বিপ্লব এবং সমস্ত কিছু ওলট-পালট হয়ে গেল।... আমার মনে শুরু থেকেই এমন দাগ পড়ে ছিল যা মুছবার নয়। যুগপৎ তাঁর ছবি আর শিক্ষা থেকে বিবেকানন্দকে এক পূর্ণ বিকশিত ব্যক্তিত্ব বলেই আমার মনে হয়েছিল।" তবে তারও আগে স্কুলের শিক্ষক বেণীমাধব দাস সুভাষের চরিত্রে এনে দিয়েছিলেন দৃঢ়তার দীক্ষা। সেই দৃঢ়তার জোরেই কলেজে অধ্যাপক ওটেন সাহেবের ভারতীয়দের প্রতি অপমানজনক উক্তির প্রতিবাদ করেছিলেন সুভাষ। সুভাষের হৃদয়ের প্রজ্জ্বলিত অগ্নি পরিণত করেছিলেন দেশবন্ধু।
বিভিন্ন সময়ে লেখা সুভা চিঠিপত্র, প্রবন্ধ ও আত্মজীবনী প্রভৃতি তাঁকে সম্যকরূপে চিনতে আমাদের বিশেষভাবে সাহায্য করে তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর নাম 'ভারত পথিক'।১৯৩৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অস্ট্রিয়ায় বাদগাস্তাইনের স্বাস্থ্য নিবাসে সাময়িক অবসর যাপনের সময় তিনি সেটি লিখেছিলেন।১৯৩৪ সালে পিতৃবিয়োগের পরে তিনি পিতার একটি জীবন চরিতও লিখেছিলেন।সুভাষের মূল্যবোধ ও শ্রদ্ধাশীল হৃদয়ের পরিচয় এতে ধরা রয়েছে। তাঁর মৌলিক রচনা গুলির মধ্যে রয়েছে দেশের ডাক, তরুণের স্বপ্ন, দেশবন্ধু স্মৃতি, বাঙালির অধঃপতন প্রভৃতি প্রবন্ধ।' নেতাজি' অভিধায় দেশবাসী তাঁকে সম্মানিত করেছে। দেশের তরুণ সমাজের কাছে আজ ও নেতাজি এক স্বপ্নের আইকন। তিনি দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক। বাংলা তথা ভারতকে সুভাষচন্দ্র আলোর পথ দেখিয়ে চলবেন আগামী দিনেও। কলকাতার বসু পরিবার মূলত তাঁর কীর্তির আলোয় আলোকিত। নেতাজী, প্রণাম।
কটকেই শিক্ষালাভের সূচনা হয়েছিল সুভাষের। পাঁচ বছর বয়সে কটকে রাভেনাশ কলেজিয়েট স্কুলে যাওয়ার প্রথম দিনটি সুভাষ নিজেই পরবর্তীতে জানিয়েছেন এইভাবে: "আমার কাছে এটি একটি উৎসবের দিন বলেই মনে হয়েছিল।..... আমার প্রায় সমবয়সী দুই মামা ও আমার সঙ্গে স্কুলে ভর্তি হবেন। তৈরি হয়ে যে গাড়ি চড়ে আমরা স্কুলে যাব, তার দিকে ছুটে গেলাম ঠিক তখনই দুর্ভাগ্যবশত পা পিছলে আমি পড়ে গেলাম। আমার লেগে ছিলো মাথায়, ব্যান্ডেজ বাঁধা হয়েছিল; হুকুম হল আমাকে শুয়ে থাকতে হবে। গাড়ির চাকার ঘরঘর শব্দ তিন থেকে ক্ষীণতর হয়ে দূরে মিলিয়ে গেল। ভাগ্যবান যারা চলে গেল, আর আমি পড়ে রইলাম।" কিন্তু ওস্তাদের মার তো শেষ রাতে। তাই সূচনাতেই যে পদস্খলন ঘটেছিল তা মিথ্যা হয়ে গেল অচিরেই। উঠে দাঁড়িয়ে জয়ের মুকুট ছিনিয়ে নিলেন তিনি। প্রবেশিকা পরীক্ষায় সুভাষ পেলেন স্থান। কলকাতায় এসে ভর্তি হলেন প্রেসিডেন্সি কলেজে। পরে ইংল্যান্ডে গিয়ে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় চতুর্থ হয়ে দেশে ফিরলেন।
এরপরের ইতিহাস সকলেরই জানা।১৯৪৫ সালের পর হঠাৎ নীরব হয়ে গিয়েছে ইতিহাস সুভাষকে নিয়ে।কিন্তু বাঙালির ছেলে সুভাষের এইযে দুঃসাহসী জীবন এর আসল প্রেরণা স্থল স্বামী বিবেকানন্দ। সুভাষ লিখেছেন," আমার জীবনে যখন বিবেকানন্দের আবির্ভাব ঘটে তখন সবে পনেরোয় পড়েছি। তারপর আমার মধ্যে শুরু হলো এক বিপ্লব এবং সমস্ত কিছু ওলট-পালট হয়ে গেল।... আমার মনে শুরু থেকেই এমন দাগ পড়ে ছিল যা মুছবার নয়। যুগপৎ তাঁর ছবি আর শিক্ষা থেকে বিবেকানন্দকে এক পূর্ণ বিকশিত ব্যক্তিত্ব বলেই আমার মনে হয়েছিল।" তবে তারও আগে স্কুলের শিক্ষক বেণীমাধব দাস সুভাষের চরিত্রে এনে দিয়েছিলেন দৃঢ়তার দীক্ষা। সেই দৃঢ়তার জোরেই কলেজে অধ্যাপক ওটেন সাহেবের ভারতীয়দের প্রতি অপমানজনক উক্তির প্রতিবাদ করেছিলেন সুভাষ। সুভাষের হৃদয়ের প্রজ্জ্বলিত অগ্নি পরিণত করেছিলেন দেশবন্ধু।
বিভিন্ন সময়ে লেখা সুভা চিঠিপত্র, প্রবন্ধ ও আত্মজীবনী প্রভৃতি তাঁকে সম্যকরূপে চিনতে আমাদের বিশেষভাবে সাহায্য করে তাঁর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর নাম 'ভারত পথিক'।১৯৩৭ সালের ডিসেম্বর মাসে অস্ট্রিয়ায় বাদগাস্তাইনের স্বাস্থ্য নিবাসে সাময়িক অবসর যাপনের সময় তিনি সেটি লিখেছিলেন।১৯৩৪ সালে পিতৃবিয়োগের পরে তিনি পিতার একটি জীবন চরিতও লিখেছিলেন।সুভাষের মূল্যবোধ ও শ্রদ্ধাশীল হৃদয়ের পরিচয় এতে ধরা রয়েছে। তাঁর মৌলিক রচনা গুলির মধ্যে রয়েছে দেশের ডাক, তরুণের স্বপ্ন, দেশবন্ধু স্মৃতি, বাঙালির অধঃপতন প্রভৃতি প্রবন্ধ।' নেতাজি' অভিধায় দেশবাসী তাঁকে সম্মানিত করেছে। দেশের তরুণ সমাজের কাছে আজ ও নেতাজি এক স্বপ্নের আইকন। তিনি দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক। বাংলা তথা ভারতকে সুভাষচন্দ্র আলোর পথ দেখিয়ে চলবেন আগামী দিনেও। কলকাতার বসু পরিবার মূলত তাঁর কীর্তির আলোয় আলোকিত। নেতাজী, প্রণাম।
কোন মন্তব্য নেই