Header Ads

শেষ বয়সের ঠিকানা গোয়ালঘর, স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করলেন লাঞ্ছিত বৃদ্ধা। #Exclusive

নজরবন্দি ব্যুরোঃ বেশ কয়েক বছর আগে স্বামীর মৃত্যুর পর নবতিপর এক বৃদ্ধা ভেবেছিলেন মেয়ে নাতনিকে নিয়ে শেষ জীবনটা সুখ-শান্তিতে কাটাবেন। কিন্তু সুখতো কোন ছাড়, নাতনি-নাতজামাই বৃদ্ধাকে গোয়ালঘরে থাকতে দিতেন। অসম্মান সইতে না পেরে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন করলেন বৃদ্ধা। কাকদ্বীপ মহকুমা শাসকের দপ্তরে হাজির হন তারারানি ডগর(৯০)। সব শুনে নাতনি-নাতজামাইকে ডেকে পাঠিয়েছেন মহকুমাশাসক। বৃদ্ধাকেও বুঝিয়েসুঝিয়ে বাড়িতেই পাঠানো হয়।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃদ্ধা তারারানি ডগর কাকদ্বীপের গণেশনগরের বাসিন্দা। মেয়ে ও নাতনিকে নিয়ে থাকতেন তিনি । পরে নাতনির বিয়ে হয় কাকদ্বীপ আদালতের আইনজীবী তপন মাইতির সঙ্গে। বৃদ্ধা জানিয়েছেন, নাতজামাই তপনের কথায় সমস্ত জায়গা জমি বিক্রি করে সেই টাকায় তারা ঘর তোলে। বাকি কয়েক লক্ষ টাকা তারারানি নিজের জন্য পোস্ট অফিসে মাসিক সঞ্চয় প্রকল্পে রেখেছিলেন। কিন্তু এরপরও নাতনি-নাতজামাই পোস্ট অফিস থেকে টাকা তুলে নেওয়ার জন্য বৃদ্ধাকে চাপ দিচ্ছিল বলে অভিযোগ। বৃদ্ধার কথায়, চাপে পড়ে সেই টাকাও তুলে নিতে হয়। সব কিছু হাতিয়ে নেওয়ার পর তারারানির প্রয়োজন ফুরোয়। এরপর দিদাকে ঘর থেকে বের করে গোয়ালঘরে পাঠিয়ে দেয় নাতনি। তারারানির অভিযোগ, নিয়মিত তাঁকে খেতেও দেওয়া হয় না। তা নিয়ে কিছু বলতে গেলে জোটে মারধর। দিনের পর দিন এই লাঞ্ছনা আর সইতে পারছিলেন না তারারানি। প্রতিবেশীদের থেকে চেয়েচিন্তে আর কতদিন খাবেন? এর চেয়ে মরাই ভালো বলেই মনেকরেন তারারানির। তাই স্বেচ্ছামৃত্যুর কথা ভাবেন।
কাগজে স্বেচ্ছামৃত্যুর আবেদন জানিয়ে চিঠি লিখে বুধবার হাজির হন কাকদ্বীপের মহকুমাশাসকের দপ্তরে। ৯০ বছরের বৃদ্ধাকে নিজের ঘরে বসিয়ে তাঁর কথা শুনতে চান মহকুমাশাসক শৌভিক চট্টোপাধ্যায়। সব কথা মন দিয়ে শোনেন। তারপর তারারানিকে আশ্বস্ত করে বাড়ি পাঠান। পরে মহকুমা শাসকের দপ্তর থেকে বৃদ্ধার বাড়ির লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। বৃহস্পতিবার মহকুমাশাসকের দপ্তরে আসতে হবে নাতনি-নাতজামাইকে। বিষয়টি নিয়ে কাকদ্বীপের মহকুমাশাসক সৌভিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, 'বিষয়টি মিটিয়ে দেওয়ার জন্য পরিবারের লোকেদের আসতে বলেছি। তারপরেও যদি বৃদ্ধা লাঞ্ছিত হন, তখন আইনত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’ ‌
তবে লাঞ্ছনার বিষয়টি অস্বীকার করেছে বৃদ্ধা তারারানির নাতনি-নাতজামাই।নাতজামাই তপন মাইতি বলেন, ‘দিদিমা মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছেন। এক আত্মীয়ের প্ররোচনায় উনি এই কাজ করেছেন। যিনি আমাদের অজান্তে দিদিমার কিছু জিনিস হাতানোর চেষ্টা করেছিল। আমরা তা ধরে ফেলাতেই দিদিমাকে ভুল বুঝিয়ে এসব করাচ্ছে। দিদিমা আমাদের কাছেই থাকেন। আজ সকালে একসঙ্গে চাও খেয়েছিলেন। কিন্তু অন্যের প্ররোচনায় তিনি যে এমন কান্ড ঘটাবেন বুঝিনি।"

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.