Header Ads

তিন উপনির্বাচনে বিজেপি-র খারাপ ফলের পর এক বিজেপি সমর্থকের খোলা চিঠি অমিত শাহকে। পড়ুন

নজরবন্দি : #BOSS গতকাল পুরো পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির জন্য হতাশা ভরা দিন ছিল....দিনের শেষে আপনার অভয়দান জানিনা কতজনের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করতে পারবে! আমি কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির ভবিষ্যৎ এবং 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে দুশ্চিন্তায় আছি। এই নিয়ে কোন সন্দেহ নেই যে রাজনীতির প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন তীক্ষ্ম, দক্ষ সংগঠক আপনি। আপনি জানেন কিভাবে জিততে হয়। তবু কিছু কথা না বলে থাকতে পারছিনা। লোকসভা ভোটে মানুষ ভোট দেয় মূলত জাতীয় ইস্যু দেখে এবং দলের প্রধান নেতা যিনি দেশকে নেতৃত্ব দেবেন বা আগে দিয়েছেন তাকে দেখে...কাজ দেখে। বিধানসভা নির্বাচনে সর্বভারতীয় ইস্যুগুলো নিশ্চয়ই থাকে.... দেশ তো আর প্রদেশগুলো থেকে আলাদা নয় প্রদেশের মেলবন্ধনেই দেশ গঠিত হয়। তবু একটা কথা অস্বীকার করা যায় না, রাজ্য ভিত্তিক বিধানসভা নির্বাচন গুলোতে মানুষ ভোট দেয় রাজ্যের শাসক দলের উপলব্ধি খামতি ইত্যাদি দেখে আর বিরোধীদলগুলো কিভাবে সরকারের ভুল ত্রুটি গুলো সামনে আনতে পারছে, প্রতিবাদ - আন্দোলন সংগঠিত করতে পারছে আর বিকল্প হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে পারছে,তার ওপরে।
ভুল ত্রুটি হলে মার্জনা করবেন, তবু বলছি...অন্যান্য রাজ্যের ক্ষেত্রে কি হয়েছে জানিনা তবে পশ্চিমবঙ্গের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে দলের মুখ একটা বড় ব্যাপার। পশ্চিমবঙ্গের কিন্তু আমাদের দলের মুখ নিয়ে সাধারন মানুষের মধ্যে অনেক দ্বিধা- দ্বন্দ্ব আছে। মানুষের একসময় ভাবছে দিলীপ ঘোষ মুখ, কিছুদিন পর মনে করছে দিলীপ ঘোষ নয় মুকুল রায় কে মুখ হিসেবে ভাবতে বাধ্য হচ্ছে। অতঃপর দিলীপ ঘোষ এর আবোল তাবোল কথা বলা আর মুকুল রায় এর আবোল তাবোল লোককে দলে নিয়ে আসা.... হতাশ করেছে অনেক কর্মীদের এবং হতাশ করেছে সাধারণ মানুষদের। সাধারণ মানুষ তো পরিত্রাণ চাইছে শাসকদলের অনৈতিক অগণতান্ত্রিক কর্মকাণ্ড থেকে তাই বিকল্প মুখ খুঁজে বেড়াচ্ছে., কখনো সৌরভের নাম হাওয়াতে ভাসাচ্ছে তো কখনো অন্য কারো। এবার সংগঠনের কথায় আসি, আমার তো মনে হয় লোকসভা ভোটের আগে পর্যন্ত এরাজ্যের সংগঠন মোদীজির কাজের প্রচারেই মূলত ব্যবহার হয়েছে... এপর্যন্ত ঠিক আছে কিন্তু ভোটের পরেও 18 জন সাংসদের এছাড়া নতুন কোনো কাজ নেই, কর্মসূচি নেই হতাশ করছে সাধারণ মানুষকে। যেখানে মোদীজী নিজে বলেছেন সাংসদরা নিজের কাজের মাধ্যমে পরিচিতি লাভের চেষ্টা করুন যাতে ওনার নাম ভবিষ্যতে জেতার জন্য ব্যবহার করতে না হয় ...সেইদিকে কোনো চেষ্টা সেভাবে চোখে পড়ছে না। রাজ্যের মানুষ প্রভাবিত হচ্ছে,প্রতারিত হচ্ছে,নির্যাতিত হচ্ছে এরকম কোনো বিষয়ে দীর্ঘমেয়াদী আন্দোলন রাজ্য বিজেপি গড়ে তুলতে পারেনি। একটা ইস্যু নিয়ে একদিন দুদিন নাড়াচাড়া হচ্ছে তারপর যেমন কা তেমন পড়ে আছে। মানুষ ভরসা করবে কিভাবে? চাকরির নামে রাজ্যজুড়ে সিন্ডিকেট চলছে কয়েক বছর ধরে, তাতে কমবেশি প্রত্যেকটি পরিবার প্রভাবিত হচ্ছে... কি করতে পেরেছে রাজ্য বিজেপি শুধু ভাষণ দেওয়া ছাড়া। কাটমানি,কাটমানি করে কয়েকদিন হইচই করলে সব সমাধান হয়ে যায়? একটিও প্রমাণ হাতে নিয়ে কোর্টের সামনে সরকারকে ঘিরতে পেরেছি কি? প্রতারিত মানুষ আবার প্রতারণার লাইনে দাঁড়াচ্ছে.... কারণ এছাড়া তাদের সামনে আর কোনো উপায় নেই। শিক্ষিত বেকারদের/ যোগ্য প্রার্থীদের কান্না কষ্ট বুকে চাপা থেকে যাচ্ছে, শতাধিক বিজেপি কর্মী রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছে। আপনি নিজেও জানেন, লোকসভা ভোটের প্রচারে এসে বলেছিলেন... জানেন মোদীজিও, কিভাবে পশ্চিমবঙ্গের লোকতন্ত্র প্রতিনিয়ত হত্যা হচ্ছে।
কিন্তু এত কিছুর পরেও একবারের জন্য ও এরাজ্যে ধারা 356 প্রয়োগের কথা আপনারা ভাবেন নি,অথচ প্রয়োগের জন্য কারণ এবং উপাদানের কোনো অভাব এখানে নেই। কি ভেবেছেন লোকে কি বলবে? বিরোধী দল কি বলবে? মিডিয়া কি বলবে?কারো কিছু মন্তব্য সত্যি কি এক্ষেত্রে বেশি পাত্তা দিতে হতো? আমরা কাশ্মীরি ধারা 370 তুলে দেইনি? কে কি বলছে তার জন্য তো ওখানে অপেক্ষা করেছি? এ রাজ্যের পরিস্থিতি কি কিছুদিন আগের কাশ্মীর থেকে খুব বেশি আলাদা? এখানে কি বিদেশি শক্তি, জামাতি শক্তি, ইসলামিক শক্তি, দেশবিরোধী শক্তি দেশের অখন্ডতাকে চ্যালেঞ্জ করছে না? এই সেই রাজ্য যেখানে আপনাকে ঠিকমতো প্রচারের অনুমতি দেওয়া হয় না ঠিকমতো যোগীজির হেলিকপ্টার নামতে পারে না অন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ঠিক সময় ঢুকতে পারে না, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হতেই থাকে....এটি আরও একটি কাশ্মীর নয়ত কি? মনে আছে নিশ্চই লোকসভা ভোটের আগে এরাজ্যে বিজেপি গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা করতে পারেনি বা বলাচলে করতে দেওয়া হয়নি...তার বদলে যে যাত্রা কিছুদিন আগে বের হলো, তার নাম গান্ধী সংকল্প যাত্রা। শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির ভূমিতে এই যাত্রা কি আমাদের জন্য কোনোভাবে উপযোগী? গান্ধীজি কে নিয়ে অন্তত বাংলায় রাষ্ট্রবাদী দের মনে বিশেষ কি কোনো কৌতহল আছে আছে বলে আমার মনে হয়? জোর করে একটা প্রোগ্রাম চাপিয়ে দেওয়া আর সেটা নিয়ে ধেই ধেই করে ঘুরে বাংলায় বিজেপির কি কোনো বিশেষ লাভ হবে? মাঝে মাঝেই হুংকার শাসক দলের 100 জন বিধায়ক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে,শেষে আসলো কে মনিরুল এর মত লোক। শোভন চ্যাটার্জী কে মানলাম তা বলে কি ওনার সাথে সাথে আমাদের অভিমানী বৈশাখীকে মানতে হবে!আর এদের মুখরোচক গল্পঃ শুনতে মাস ধরে। অর্জুন সিং ঠিক আছে, সব্যসাচী ঠিকমতোই এসছে, নিশীথ প্রামাণিক - শুভ্রাংসু - শঙ্কু আসার পর তেমন বিতর্কে জড়ায় নি....কিন্তু সংখ্যাটা কি একশো এর কাছে গেলো কোনোভাবে? আজ শুনলাম হুমায়ূন কবীর ফিরে যাচ্ছে, শোভন চ্যাটার্জির ওই অবস্থা...কালকে কে ফিরবে কোনো গ্যারান্টি নেই। নিজেদের মধ্যে সৎ,পরিশ্রমী,দেশভক্ত কর্মী কি খুব অভাব? হোক না পুরনো এবং নতুনদের মিশেল তৈরি করে দায়িত্ব বন্টনের চেষ্টা। দলীয় অফিসগুলোতে গ্রুপ বাজির নামে কব্জা হয়ে আছে...একজন অন্যজনকে তীক্ষ্ম নজরে রাখছে যাতে একজনের আগে অন্যজন ওপরে না উঠে যায়!! এসব বন্ধ করার কোনো চেষ্টা কি ওপর মহল থেকে করা হচ্ছে? NRC,NRC,NRC প্রতিদিন গর্জন চলছে। কি দরকার গর্জনের? আপনারা বলছেন, শুনে রাজ্য নেতারা হুংকার দিচ্ছে তারপর জেলা,মণ্ডল সর্বত্র NRC করতেই হবে,ঠিক তো করতে হবে তো,কিন্তু এত ঢাক কেন পেটাবো? আগে CAB পাশ করি, লোকদের বোঝানো হোক CAB কি? এতে কারা সুবিধা পাবে? কি সুবিধা পাবে? তারপর NRC লোকসভায় এবং রাজ্যসভায় উপস্থাপনের পর হইচই করি। যেখানে মানুষ বোঝালেও বোঝেনা সেখানে বোঝানোর জন্য কর্মী/নেতার অভাব থাকলে... শুধু মিডিয়াতে টিআরপি বাড়ানোর জন্য ভাষণে চিল্লামিল্লি করে তো লাভ নেই। গোদের ওপর বিষফোঁড়া হয়েছে আসামের NRC সেখানে 12 লক্ষ হিন্দুর NRC তালিকায় নাম নেই যেখানে মুসলিমের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা মাত্র 7 লক্ষ। মানুষ বিশেষত হিন্দুরাও কি আতঙ্কিত হবে না? তারা কি জানে....ডিটেনশন ক্যাম্পে কি? আসামের NRC সুপ্রীম কোর্ট করছে? ওখানে কাদের দাবিতে NRC হচ্ছে? ভিত্তিবর্ষ কি? মাফ করবেন যদি বেশি বলে থাকি।
সার্জিক্যাল স্ট্রাইক, বালাকোট, ধারা 370 রদ, তিন তালাক উঠিয়ে দেওয়া এবং রাম মন্দির রায় এর জন্য অপেক্ষা করে যতটা সুনিয়ন্ত্রিত ভাবে সম্পন্ন করা গেছে, নোটবন্দি, জি এস টি কিংবা ক্যাব বা এন আর সি নিয়ে আমরা কিন্তু পরিকল্পনা নিয়ে এগোতে পারিনি। ব্যাংক ম্যানেজার ও কর্মীদের জন্য এবং পেট্রোল পাম্প ও এরকম কিছু জায়গায় মাধ্যমে কালো টাকা সাদা হাওয়া থেকে বেশি আটকানো যায়নি। জি এস টি কাউন্সিল বারবার আলোচনা করে দর ঠিক করছে এবং কাঠামোর সংস্কার যেমন করছে কিন্তু গ্রাউন্ড লেভেলে একজন ব্যাবসায়ী কত টাকার জিনিস বেঁচে কত টাকার জি এস টি বিল কাটলো সেখানে স্বচ্ছতা এসেছে কি? বড় শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যাবসায়ীও লেনদেন নগদ টাকায় করতে উৎসাহী, চেক বা অনলাইন পেমেন্ট চাইছে না আবার বিল দিচ্ছে ভুলে ভরা , যত টাকার জিনিস তার অনেক কম দেখাচ্ছে বিলে...কারণ জি এস টি ফাঁকি দেবে। কে ধরবে এসব? দেশে বেকার তো কম নেই...মোদীজী একবার নোট বন্দীর সময় বলেছিলেন দরকার হলে এক লক্ষ নতুন লোক শুধু এই কাজে নিয়োগ করবো যাতে কেউ ফাঁকি দিতে না পারে....বাস্তবে সেটা হচ্ছে কি? CAG এর রিপোর্ট বেরিয়েছে...NRC নিয়ে দুর্নীতি হয়েছে প্রায় হাজার কোটি টাকার বেশি লোককে কি বোঝানো সম্ভব এই কাজে কাদের হাত আছে? রাজীব কুমার দোষী না নির্দোষ আমাকে বলুন। যদি দোষী হয় CBI কেন পারলো না 20 দিনে গ্রেফতার করতে? যদি নির্দোষ হন (যেমনটা আজ সুপ্রীম কোর্ট বলেছে সিবিআই যথেষ্ট প্রমাণ না নিয়েই রাজিব কুমারের কাছে পৌঁছেছে) এত জিগির তোলার কি দরকার ছিল ভাষণে,আলোচনায়? কেনই বা ওই সময়ের মধ্যে মোদীজী এবং আপনি দেখা করলেন মমতা ব্যানার্জির সঙ্গে? আলোচনার বিষয় যাই থাকুক না কেন বাংলার মানুষকে কি বোঝানো যাবে ওই আলোচনার সঙ্গে রাজিব কুমার কেস এর কোনো সম্পর্ক নেই? অনেক কথা লিখলাম পরিশেষে শুধু এই কথাই লিখতে চাই... " বাংলার মাটি,দূর্জয় ঘাঁটি" বলে একটা প্রবাদ আছে ....সেটা কিন্তু আমলুক নয় মোটেই। আগামী দিনে কংগ্রেস, বামফ্রন্ট, AIMIM এবং তৃণমূল যদি নিজেদের মধ্যে সিট শেয়ার করে একুশের নির্বাচন লড়তে নামে আমরা কিভাবে রণকৌশল সাজাবো, চানক্য আপনি ঠিক করুন। "যতদিন না পশ্চিমবঙ্গে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারছি আমাদের জিত অপূর্ণ থাকবে" - বলা এই কথাগুলো স্মরণে রাখবেন। নমস্কার ভগবান রাষ্ট্রবাদকে শক্তি দিক,সমৃদ্ধ করুক। উত্তম পণ্ডিত (বিজেপি সমর্থক)

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.