ছট পুজো কি এবং কেন? জানুন সবিস্তারে।
নজরবন্দি ব্যুরোঃ আজ ছট্ পূজা :--
ছট্ অর্থাৎ ছটা বা রশ্মির পূজা। এই রশ্মি সূর্য থেকেই পৃথিবীর বুকে আসে। এই পূজা সূর্যদেবেরই পূজা। দীপাবলির ঠিক ছ-দিন পর পালিত ছট্ উৎসব হিন্দু ধর্মের একটি মুখ্য ব্রত। কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠীতে ছট্ ব্রতর বিধান রয়েছে। অথর্ব বেদেও এই পর্বের উল্লেখ রয়েছে।
ভবিষ্যপুরাণে বলা হয়েছে, শ্রীরামচন্দ্র চৌদ্দ বৎসর বনবাসের পর অযোধ্যায় ফিরে এসে সূর্যদেবের আরাধনা করেন। সেদিন থেকেই এই পূজার উদ্ভব।
আবার "পঞ্চম বেদ" বা "মহাভারতে" (বনপর্ব) বলা হয়েছে যে, সূর্যপুত্র কর্ণ (কুন্তি দ্বারা সূর্যের আরাধনা এবং কর্ণের জন্ম) পিতৃপরিচয় অজ্ঞাত থেকেই শুধুমাত্র অঙ্গরাজ্যের কল্যাণকামনায় এইদিন সূর্য-আরাধনা করেছিলেন। সেই দিন থেকেই এই পূজা অঙ্গরাজ্যবাসীগণের এক মূল পূজা রূপে পরিগণিত হল।
ব্রহ্মাণ্ডপুরাণে কথিত আছে – সূর্যপত্নী তথা বিশ্বকর্মা তনয়া "সংজ্ঞা" সূর্যদেবের তাপ সহ্য করতে অসমর্থ হলে, বিশ্বকর্মা সূর্যকে মোট ১২টি ভাগে ভাগ করেন। সেই ১২টি অংশ ভিন্ন ভিন্ন নামে ভিন্ন ভিন্ন মাসে উদিত হয়। এগুলি হলো–
বৈশাখ মাসের অংশের নাম – তপনঃ
জ্যৈষ্ঠ মাসের অংশের নাম – ইন্দ্রঃ
আষাঢ় মাসের অংশের নাম – রবিঃ
শ্রাবণ মাসের অংশের নাম – গর্ভস্থিঃ
ভাদ্র মাসের অংশের নাম – যমঃ
আশ্বিন মাসের অংশের নাম – হিরণ্যরেতাঃ
কার্তিক মাসের অংশের নাম – দিবাকরঃ
অগ্রহায়ণ মাসের অংশের নাম – মিত্রঃ
পৌষ মাসের অংশের নাম – বিষ্ণুঃ
মাঘ মাসের অংশের নাম – অরুণঃ
ফাল্গুন মাসের অংশের নাম – সূর্যঃ
চৈত্র মাসের অংশের নাম – বেদজ্ঞঃ
সূর্যদেবের আত্মারূপী অংশ হিসেবে এই ১২টি ভাগকে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়। এই অর্থের সূর্যের অপর নাম দ্বাদশাত্মা। এই নামগুলো হলো-
১) অর্যমা,
২) উরুক্রম,
৩) ত্বষ্টা,
৪) ধাতা,
৫) পূষা,
৬) বরুণ/জাতবেদা,
৭) বিধাতৃ,
৮) বিবস্বান্,
৯) ভগ,
১০) মিত্র,
১১) শক্র
১২) সবিতৃ
ঋগ্বেদের তৃতীয় মণ্ডলের ৬২তম সূক্তের ১০ম্ মন্ত্রে বলা রয়েছে --
"তৎ সবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি। ধিয়ো যো নঃ প্রচেদয়াৎ।"
অর্থাৎ যিনি আমাদের ধীশক্তি প্রেরণ করেন, আমরা সেই সবিতৃদেবের সেই বরণীয় তেজকে অনুধ্যান করি। এই অর্থে সবিতৃদেব ধীশক্তির অধিষ্ঠাতা দেবতা।
সবকিছুই সূর্যদেব থেকেই সৃষ্টি এই অর্থে সর্বপ্রসবিতা এবং জগৎস্রষ্টা।
তাই আসুন সকলেই নিজ নিজ এবং দশদিশের মঙ্গলকামনায় বৈদিক দেবতা "সূর্যদেবকে" প্রণিপাত করে বলি,
"ॐ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্ ।
ধান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতঃ অস্মি দিবাকরম্ ।।"
অর্থাৎ, জবাপুষ্পের মত লোহিত বর্ণ, অন্ধকারনাশক, মহাদ্যুতিবিশিষ্ট, সর্ব্বপাপবিনাশক কশ্যপপুত্র সূর্যদেবকে (আমি) প্রণাম করি।
সুস্বাস্থ্য লাভ ছাড়াও সূর্য প্রণামের দ্বারা পৃথিবীর জীবকুলের প্রাণস্বরূপ সূর্যকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাবার সুযোগ পাই।
আগামী দিনগুলিতে শুরু করে দিন সূর্যের শক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং এক আনন্দানুভূতির সাহচর্য।
প্রশান্ত, সুখী ও সুস্থ-সবল থাকার জন্য এইটি আপনার কেবল মাত্র মন্ত্র বলে মনে হতে পারে, কিন্তু পরীক্ষা করে দেখবেন সঠিক এবং শুদ্ধ উচ্চারণে পঠিত ও মানসে অনুরণিত এইটি এমন এক মন্ত্র যার সুপ্রভাব সারা দিন ধরে চলতে থাকে।
প্রত্যক্ষভাবে "ছট্"-এর পূজা হলেও এই পূজার সঙ্গে জড়িত আছেন স্বয়ং সূর্যদেব, আছেন মা গঙ্গা এবং দেবী অন্নপূর্ণা।
ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে রয়েছে — বর্ষার আগমন ঘটেছে। কিন্তু বৃষ্টি তেমন হয়নি। চাষিদের মাথায় হাত। মাঠের ফসল মাঠেই মারা যাচ্ছে। মা অন্নপূর্ণা ক্রমশ ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে থাকেন। সকল দেবতা মা অন্নপূর্ণার এহেন দুর্দশায় ব্যথিত। ঘরে ঘরে অন্নাভাব হাহাকার ওঠে। সূর্যের তাপ হ্রাস করে বাঁচার জন্য মা অন্নপূর্ণা সূর্যদেবের ধ্যান করতে শুরু করেন। তাতে হিতে বিপরীত হয়। সূর্যের প্রখর ছটায় মা অন্নপূর্ণা দিন দিন শ্রীভ্রষ্টা হয়ে ক্ষীয়মান হতে থাকেন। দেবলোকে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। দেবতারা সম্মিলিতভাবে সূর্যদেবের কাছে গেলে তিনি মা অন্নপূর্ণার এই দশার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং বলেন, "মা অন্নপূর্ণা যেন মা গঙ্গাদেবীর আশ্রয় নেন।"
সূর্যদেব আরও বলেন, "অস্তগমনকালে মা গঙ্গাদেবীর আশ্রয়ে থেকে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতিথিতে এবং সপ্তমীতিথির উদয়কালে মা অন্নপূর্ণা যেন তাঁর (সূর্যদেবের) উদীয়মান ছটা বা রশ্মিকে দেখে তাঁর (সূর্যদেবের) স্তব বা ১২টি নাম উচ্চারণ করেন; তাহলেই সমস্ত পৃথিবী অন্নে পূর্ণ হতে থাকবে এবং যে ব্যক্তি উক্তরূপে পূজা করবেন তার উপরই তিনি প্রসন্ন হবেন।"
উক্তরূপে পূজা করলে মা অন্নপূর্ণা আবার তাঁর শ্রী ফিরে পান।
তাই ছট্ পূজা বা ব্রত একাধারে সূর্যদেব, মা অন্নপূর্ণা ও গঙ্গাদেবীর পূজা।
কার্তিক মাসের অমাবস্যার পরেই ছট্ ব্রত পালন করা হয়। এই ব্রত পালনে সূর্যদেবের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি আমাদের জীবনে যেমন বিঘ্ননাশক, দুঃখনাশক, তেমনি সুখদায়ক ও অর্থ-বৈভবদায়ক।
এই ব্রতে তিন দিনের কঠোর উপবাসের বিধান রয়েছে। যাঁরা এই ব্রত করেন, তাঁদের পঞ্চমীর দিন নুন ছাড়া ভোজন গ্রহণ করেত হয়। ষষ্ঠীতে নির্জলা থেকে ব্রত করতে হয়। ষষ্ঠীতে অস্ত সূর্যের পুজো করে অর্ঘ্য নিবেদন করতে হয়। সপ্তমীর সকালে উদিত সূর্যকে অর্ঘ্য দিতে হয়। তার পর জল খেয়ে উপবাস পুরো করতে হয়। কোনও নদী বা পুকুরে গিয়ে এই পুজো করতে হয়।
মনে করা হয়, পঞ্চমীর রাত্রি থেকেই ঘরে ঘরে ষষ্ঠীর আগমন হয়। সূর্যের এই ব্রতে শক্তি এবং ব্রহ্মার উভয়ের পুজোর ফল পাওয়া যায়। তাই এই ব্রত সূর্যষষ্ঠীর নামে বিখ্যাত।
চতুর্থীর দিন থেকে এই ব্রত শুরু। এদিন পুরো দিনের উপবাস রাখা হয়। রাতে কাঠ বা মাটির উনুনে পায়েস এবং লুচি রান্না করা হয়। ভোগ লাগিয়ে সেই প্রসাদ খান মহিলারা। তৃতীয় দিন প্রথম অর্ঘ্য এবং চতুর্থ দিন দ্বিতীয় অর্ঘ্য। এই দুই দিনই কোনও জলাশয়ে গিয়ে অস্ত সূর্য এবং উদিত সূর্যের আরাধনা করে সূর্যকে অর্ঘ্য দিতে হয়।
এই ব্রতের বিশেষত্ব হল, বাড়ির যে কোনও সদস্য এই ব্রত করতে পারে। ছট্ পুজোর সময়ে বাড়ি স্বচ্ছ রাখা হয়। এই ব্রতের বিশেষ প্রসাদ ঠেকুয়া।
সকলকে ছট্ পূজার শুভেচ্ছা
ছট্ অর্থাৎ ছটা বা রশ্মির পূজা। এই রশ্মি সূর্য থেকেই পৃথিবীর বুকে আসে। এই পূজা সূর্যদেবেরই পূজা। দীপাবলির ঠিক ছ-দিন পর পালিত ছট্ উৎসব হিন্দু ধর্মের একটি মুখ্য ব্রত। কার্তিক মাসের শুক্ল পক্ষের ষষ্ঠীতে ছট্ ব্রতর বিধান রয়েছে। অথর্ব বেদেও এই পর্বের উল্লেখ রয়েছে।
ভবিষ্যপুরাণে বলা হয়েছে, শ্রীরামচন্দ্র চৌদ্দ বৎসর বনবাসের পর অযোধ্যায় ফিরে এসে সূর্যদেবের আরাধনা করেন। সেদিন থেকেই এই পূজার উদ্ভব।
আবার "পঞ্চম বেদ" বা "মহাভারতে" (বনপর্ব) বলা হয়েছে যে, সূর্যপুত্র কর্ণ (কুন্তি দ্বারা সূর্যের আরাধনা এবং কর্ণের জন্ম) পিতৃপরিচয় অজ্ঞাত থেকেই শুধুমাত্র অঙ্গরাজ্যের কল্যাণকামনায় এইদিন সূর্য-আরাধনা করেছিলেন। সেই দিন থেকেই এই পূজা অঙ্গরাজ্যবাসীগণের এক মূল পূজা রূপে পরিগণিত হল।
ব্রহ্মাণ্ডপুরাণে কথিত আছে – সূর্যপত্নী তথা বিশ্বকর্মা তনয়া "সংজ্ঞা" সূর্যদেবের তাপ সহ্য করতে অসমর্থ হলে, বিশ্বকর্মা সূর্যকে মোট ১২টি ভাগে ভাগ করেন। সেই ১২টি অংশ ভিন্ন ভিন্ন নামে ভিন্ন ভিন্ন মাসে উদিত হয়। এগুলি হলো–
বৈশাখ মাসের অংশের নাম – তপনঃ
জ্যৈষ্ঠ মাসের অংশের নাম – ইন্দ্রঃ
আষাঢ় মাসের অংশের নাম – রবিঃ
শ্রাবণ মাসের অংশের নাম – গর্ভস্থিঃ
ভাদ্র মাসের অংশের নাম – যমঃ
আশ্বিন মাসের অংশের নাম – হিরণ্যরেতাঃ
কার্তিক মাসের অংশের নাম – দিবাকরঃ
অগ্রহায়ণ মাসের অংশের নাম – মিত্রঃ
পৌষ মাসের অংশের নাম – বিষ্ণুঃ
মাঘ মাসের অংশের নাম – অরুণঃ
ফাল্গুন মাসের অংশের নাম – সূর্যঃ
চৈত্র মাসের অংশের নাম – বেদজ্ঞঃ
সূর্যদেবের আত্মারূপী অংশ হিসেবে এই ১২টি ভাগকে বিশেষভাবে বিবেচনা করা হয়। এই অর্থের সূর্যের অপর নাম দ্বাদশাত্মা। এই নামগুলো হলো-
১) অর্যমা,
২) উরুক্রম,
৩) ত্বষ্টা,
৪) ধাতা,
৫) পূষা,
৬) বরুণ/জাতবেদা,
৭) বিধাতৃ,
৮) বিবস্বান্,
৯) ভগ,
১০) মিত্র,
১১) শক্র
১২) সবিতৃ
ঋগ্বেদের তৃতীয় মণ্ডলের ৬২তম সূক্তের ১০ম্ মন্ত্রে বলা রয়েছে --
"তৎ সবিতুর্বরেণ্যং ভর্গো দেবস্য ধীমহি। ধিয়ো যো নঃ প্রচেদয়াৎ।"
অর্থাৎ যিনি আমাদের ধীশক্তি প্রেরণ করেন, আমরা সেই সবিতৃদেবের সেই বরণীয় তেজকে অনুধ্যান করি। এই অর্থে সবিতৃদেব ধীশক্তির অধিষ্ঠাতা দেবতা।
সবকিছুই সূর্যদেব থেকেই সৃষ্টি এই অর্থে সর্বপ্রসবিতা এবং জগৎস্রষ্টা।
তাই আসুন সকলেই নিজ নিজ এবং দশদিশের মঙ্গলকামনায় বৈদিক দেবতা "সূর্যদেবকে" প্রণিপাত করে বলি,
"ॐ জবাকুসুমসঙ্কাশং কাশ্যপেয়ং মহাদ্যুতিম্ ।
ধান্তারিং সর্বপাপঘ্নং প্রণতঃ অস্মি দিবাকরম্ ।।"
অর্থাৎ, জবাপুষ্পের মত লোহিত বর্ণ, অন্ধকারনাশক, মহাদ্যুতিবিশিষ্ট, সর্ব্বপাপবিনাশক কশ্যপপুত্র সূর্যদেবকে (আমি) প্রণাম করি।
সুস্বাস্থ্য লাভ ছাড়াও সূর্য প্রণামের দ্বারা পৃথিবীর জীবকুলের প্রাণস্বরূপ সূর্যকে আমরা কৃতজ্ঞতা জানাবার সুযোগ পাই।
আগামী দিনগুলিতে শুরু করে দিন সূর্যের শক্তির প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং এক আনন্দানুভূতির সাহচর্য।
প্রশান্ত, সুখী ও সুস্থ-সবল থাকার জন্য এইটি আপনার কেবল মাত্র মন্ত্র বলে মনে হতে পারে, কিন্তু পরীক্ষা করে দেখবেন সঠিক এবং শুদ্ধ উচ্চারণে পঠিত ও মানসে অনুরণিত এইটি এমন এক মন্ত্র যার সুপ্রভাব সারা দিন ধরে চলতে থাকে।
প্রত্যক্ষভাবে "ছট্"-এর পূজা হলেও এই পূজার সঙ্গে জড়িত আছেন স্বয়ং সূর্যদেব, আছেন মা গঙ্গা এবং দেবী অন্নপূর্ণা।
ব্রহ্মবৈবর্তপুরাণে রয়েছে — বর্ষার আগমন ঘটেছে। কিন্তু বৃষ্টি তেমন হয়নি। চাষিদের মাথায় হাত। মাঠের ফসল মাঠেই মারা যাচ্ছে। মা অন্নপূর্ণা ক্রমশ ক্ষীণ থেকে ক্ষীণতর হতে থাকেন। সকল দেবতা মা অন্নপূর্ণার এহেন দুর্দশায় ব্যথিত। ঘরে ঘরে অন্নাভাব হাহাকার ওঠে। সূর্যের তাপ হ্রাস করে বাঁচার জন্য মা অন্নপূর্ণা সূর্যদেবের ধ্যান করতে শুরু করেন। তাতে হিতে বিপরীত হয়। সূর্যের প্রখর ছটায় মা অন্নপূর্ণা দিন দিন শ্রীভ্রষ্টা হয়ে ক্ষীয়মান হতে থাকেন। দেবলোকে আলোড়ন সৃষ্টি হয়। দেবতারা সম্মিলিতভাবে সূর্যদেবের কাছে গেলে তিনি মা অন্নপূর্ণার এই দশার জন্য দুঃখপ্রকাশ করেন এবং বলেন, "মা অন্নপূর্ণা যেন মা গঙ্গাদেবীর আশ্রয় নেন।"
সূর্যদেব আরও বলেন, "অস্তগমনকালে মা গঙ্গাদেবীর আশ্রয়ে থেকে কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠীতিথিতে এবং সপ্তমীতিথির উদয়কালে মা অন্নপূর্ণা যেন তাঁর (সূর্যদেবের) উদীয়মান ছটা বা রশ্মিকে দেখে তাঁর (সূর্যদেবের) স্তব বা ১২টি নাম উচ্চারণ করেন; তাহলেই সমস্ত পৃথিবী অন্নে পূর্ণ হতে থাকবে এবং যে ব্যক্তি উক্তরূপে পূজা করবেন তার উপরই তিনি প্রসন্ন হবেন।"
উক্তরূপে পূজা করলে মা অন্নপূর্ণা আবার তাঁর শ্রী ফিরে পান।
তাই ছট্ পূজা বা ব্রত একাধারে সূর্যদেব, মা অন্নপূর্ণা ও গঙ্গাদেবীর পূজা।
কার্তিক মাসের অমাবস্যার পরেই ছট্ ব্রত পালন করা হয়। এই ব্রত পালনে সূর্যদেবের প্রত্যক্ষ উপস্থিতি আমাদের জীবনে যেমন বিঘ্ননাশক, দুঃখনাশক, তেমনি সুখদায়ক ও অর্থ-বৈভবদায়ক।
এই ব্রতে তিন দিনের কঠোর উপবাসের বিধান রয়েছে। যাঁরা এই ব্রত করেন, তাঁদের পঞ্চমীর দিন নুন ছাড়া ভোজন গ্রহণ করেত হয়। ষষ্ঠীতে নির্জলা থেকে ব্রত করতে হয়। ষষ্ঠীতে অস্ত সূর্যের পুজো করে অর্ঘ্য নিবেদন করতে হয়। সপ্তমীর সকালে উদিত সূর্যকে অর্ঘ্য দিতে হয়। তার পর জল খেয়ে উপবাস পুরো করতে হয়। কোনও নদী বা পুকুরে গিয়ে এই পুজো করতে হয়।
মনে করা হয়, পঞ্চমীর রাত্রি থেকেই ঘরে ঘরে ষষ্ঠীর আগমন হয়। সূর্যের এই ব্রতে শক্তি এবং ব্রহ্মার উভয়ের পুজোর ফল পাওয়া যায়। তাই এই ব্রত সূর্যষষ্ঠীর নামে বিখ্যাত।
চতুর্থীর দিন থেকে এই ব্রত শুরু। এদিন পুরো দিনের উপবাস রাখা হয়। রাতে কাঠ বা মাটির উনুনে পায়েস এবং লুচি রান্না করা হয়। ভোগ লাগিয়ে সেই প্রসাদ খান মহিলারা। তৃতীয় দিন প্রথম অর্ঘ্য এবং চতুর্থ দিন দ্বিতীয় অর্ঘ্য। এই দুই দিনই কোনও জলাশয়ে গিয়ে অস্ত সূর্য এবং উদিত সূর্যের আরাধনা করে সূর্যকে অর্ঘ্য দিতে হয়।
এই ব্রতের বিশেষত্ব হল, বাড়ির যে কোনও সদস্য এই ব্রত করতে পারে। ছট্ পুজোর সময়ে বাড়ি স্বচ্ছ রাখা হয়। এই ব্রতের বিশেষ প্রসাদ ঠেকুয়া।
সকলকে ছট্ পূজার শুভেচ্ছা
Loading...
কোন মন্তব্য নেই