রক্ষাকবচই ঢাল সেনাদের।
নজরবন্দি ব্যুরো: ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে সেনাবাহিনীর হাতে বিশেষ আইন তুলে দিয়েছে ভারত সরকার। আর্মড ফোর্সেস স্পেশাল পাওয়ার অয়্যাক্ট(আফস্পা) রক্ষাকবচই এখন সেনাবাহিনীর ভুয়ো সংঘর্ষ ঘটিয়ে গোটা ঘটনা থেকে পালিয়ে যাওয়ার রক্ষাকবচ হয়ে উঠেছে। মণিপুরে হওয়া ভুয়ো সংঘর্ষের মামলায় ৯ জন পুলিশ কর্মীর নামে সিবিআই চার্জশিট দিয়েছে। অথচ এই একই মামলায় শিখ রেজিমেন্টের তিন সেনার নাম চার্জশিট থেকে বাদ গিয়েছে। ২০১২ সালে ১৪ জানুয়ারি অভিযান চালায় পূর্ব ও পশ্চিম ইম্ফলের কমান্ডো এবং সেনাবাহিনীর যৌথ টিম। এই অভিযানে থংজাম থৈথৈ নামে এক ব্যক্তির মৃত্য হয়। মানবাধিকার লংঘনের মতো গুরুতর অভিযোগ ওঠায় বিষয়টি সুপ্রীম কোর্টে গড়ায়। দেশের শীর্ষ আদালতের নির্দেশে মণিপুরে ৮১ টি ভুয়ো সংঘর্ষের মামলার তদন্ত কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই এর হাতে দেওয়া হয়। এই ৮১ টি মামলার মধ্যে ছিল থংজাম থৈথৈ এর মামলা। সিবিআই তদন্ত করে চার্জশিট দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে অত্যন্ত ঠান্ডা মাথায়, অস্ত্র সাজিয়ে মিথ্যে সংঘর্ষের কাহিনী ফেঁদে থৈথৈ-কে হত্যা করেছে পুলিশ আর সেনারা মিলে। এই মামলায় দেখা গিয়েছে আদালতে শুধুমাত্র পুলিশ কর্মীরা হাজিরা দিয়ে চলেছে। কিন্তু ঘটনায় জড়িত তিন সেনা কর্মী কমল সজোত্রা, বলজিৎ সিংহ এবং সর্বজিৎ সিংহ সেনা কর্মী হওয়ার কারণে চার্জশিটে নাম নেই। সিবিআই জানিয়েছে, আফস্পা সেনাকর্মীদের কাছে রক্ষাকবচ হয়ে উঠেছে। তাই তিন সেনা জওয়ান ঘটনায় অভিযুক্ত হলেও নাম নেই চার্জশিটে। মানবাধিকার সংগঠনের বক্তব্য, প্রকৃত দোষীদের যেখানে সাজা হবে না এমন তদন্ত অর্থহীন। আফস্পা বলবৎ এর কারণে শুধুমাত্র পুলিশ কর্মীরা আদালতে হাজিরা দিয়ে চলেছে। আর অভিযুক্ত সেনা কর্মীদের বিরুদ্ধেও ভুয়ো সংঘর্ষে জড়িত থেকে হত্যার মতো গুরুতর অভিযোগ থাকলেও সেনা কর্মীরা বহাল তবিয়ৎ রয়েছে। শুধু সেনা আদালতে সেনা বাহিনী নিজেদের মতো করে বিচার করে থাকে। কিন্তু বিচারের রায় সাধারণ মানুষ জানতে পারে না। গুরু দোষে বদলি, পদোন্নতি আটকে দেওয়া, বেতন হ্রাসের মতো লঘু শাস্তি পেয়ে থাকে সেনা কর্মীরা।
Loading...
কোন মন্তব্য নেই