"কি করতে হবে বলুন, সেটাই করব" প্রাথমিক শিক্ষকদের মন জিতলেন মুকুল রায়। #Exclusive
নজরবন্দি ব্যুরোঃ ন্যায্য বেতনের দাবিতে অনশন করছেন ১৮ জন প্রাথমিক শিক্ষক, গত শুক্রবার থেকে বিকাশ ভবনের পাশে চলছে উস্তি ইউনাইটেড প্রাইমারি টিচার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশেনের ধর্না।অনশন বিক্ষোভে সামিল হয়েছেন রাজ্যের কয়েক হাজার প্রাথমিক শিক্ষক, তাদের দাবি পিআরটি স্কেল অর্থাৎ কেন্দ্রীয় হারে বেতন। গ্রেড পে ৪২০০ টাকা করতে হবে পাশাপাশি বহুদূরে ট্রান্সফার হওয়া ১৪ জন প্রাথমিক শিক্ষককে ফিরিয়ে আনতে হবে।
গতকাল উস্থির পাঁচ জন প্রতিনিধির সঙ্গে বিকাশ ভবনে শিক্ষামন্ত্রীর প্রায় ১ ঘন্টা ১৫ মিনিট বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে শিক্ষকরা জানিয়ে দেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সাথে কথা বলে তাঁরা খুশি নন। কারন পার্থ বাবু একই কথা বলছেন টাকা নেই, এক লাফে গ্রেড পে ৪২০০ করা যাবে না। তাই তাঁরা অনশন-আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। অন্যদিকে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "অনশনকারীদের খুশি করতে তিনি বৈঠক করেন নি! শিক্ষকদের "দায়িত্ব ও কর্তব্যবোধ থাকা উচিত" বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন "তাদের সরকার শিক্ষকদের সবথেকে বেশি গুরুত্ব দেয়।" দাবি প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, "এমন কোন রুল নেই যে পিআরটি স্কেল দিতেই হবে।
ওঁদের দাবি অনুযায়ী গ্রেড পে করতে হলে সাড়ে তিন হাজার থেকে চার হাজার কোটি টাকা খরচ হবে। এখনই সেই টাকা সরকারের নেই। ধাপে ধাপে তা বাড়ানো যেতে পারে।" শিক্ষকদের অনশন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে তার বক্তব্য, "ওরা ধর্না অনশন চালিয়ে যাক আমাদের কিছু করার নেই।"
শিক্ষকরা আশা করেছিলেন আজ ২১শে জুলাই তৃণমূলের শহীদ দিবসের মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের উদ্দেশ্যে কিছু বলবেন, আসার আলো দেখবেন তাঁরা। কিন্তু সেই আশায় জল ঢেলে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী, তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন "যাঁরা কেন্দ্রের হারে মাইনে চান, তারা কেন্দ্রে যান! কাজ কর্ম নেই রাস্তায় বসে আছে সব!"
এই অবস্থায় প্রাথমিক শিক্ষকদের অনশন মঞ্চে উপস্থিত হলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। সেখানে গিয়ে শিক্ষকদের পাশে থাকার বার্তা দেন তিনি। মুকুল রায় অনশন মঞ্চে গিয়ে বলেন তিনি "শিক্ষামন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেবেন দলের সাংসদদের দিয়ে প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে। তিনি বলেন যতটা পারি ভাই আমি আন্দোলনের পাশে আছি। তোমরা আমাকে বলো কি করতে হবে, আমি সেটাই করব।" তিনি আরও বলেন "আমি পরশু HRD মিনিস্টারের সঙ্গে কথা বলব, নিশ্চিত ভাবেই বলব কিন্তু কি হবে জানিনা।" অনশন স্থলে দেরিতে আসা নিয়ে তাঁর মন্তব্য, "আমি প্রাথমিক শিক্ষকদের দাবি দাওয়া নিয়ে আন্দোলনের খবর আগেই জানতাম। কিন্তু আসিনি কারন এই আন্দোলন টা অরাজনৈতিক, আমি এলে কে কিভাবে নেবেন! পরে যখন দেখলাম বিভিন্ন রাজনৈতিক দল আসছে তখন আমিও এলাম। এখানে আমি রাজনীতি করতে আসিনি।
কেন্দ্র যদি প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো সংশোধন করতে পারত ঝামেলা মিটে যেত, কিন্তু সে নিয়ম নেই। তাই প্রয়োজনে আইন পরিবর্তন করে শিক্ষকদের পাশে দাঁড়াতে কেন্দ্রকে অনুরোধ করব" বলেও জানান তিনি। ২১ শে জুলাইয়ের সভা নিয়ে মুকুল রায় বলেন "৪ ভাগের এক ভাগ লোক হয়েছে আজ। তৃণমূল কে আক্রমন করে তাঁর বক্তব্য তৃণমূলের কোমর ভেঙে গেছে আর জোড়া লাগবে না।" নিজের তৃণমূলে থাকা নিয়ে তাঁর বক্তব্য, ভুল করেছি সব কিছু থেকে মমতা কে আড়াল করে, এখন প্রায়শ্চিত্ত করছি। মুকুল রায় বক্তব্য রাখার সময় প্রাথমিক শিক্ষকরা মুহুর্মুহু হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানান।

No comments