নেতা ফ্যাক্টর নয়, কর্মীরা দায়িত্ব পালন করতে পারলে বাংলায় ম্যাজিক দেখাতে পারে বিজেপি৷
নজরবন্দি ব্যুরোঃ তৃণমূলকে ভেঙে বিজেপিতে জনপ্রতিনিধিদের যোগদান করালেই রাজ্য বিজেপির সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বা তাদের নির্বাচনে প্রার্থী করা হয়েছে বলেই বাংলায় বিজেপির ভাল পারফরমেন্স হবে এমনটা কিন্তু মনে করছেন না রাজ্নৈতিক বিশেষজ্ঞরা৷ মুকুল রায় যতই তৃণমূলে ভাঙন ধরান না কেন আসল লড়াই কিন্তু করতে হবে দলের নীচুতলার কর্মীদের৷অর্জুন সিংহ,অনুপম হাজরা,সৌমিত্র খাঁদের তৃণমূল থেকে যতই বিজেপিতে যোগদান করানো হোক না কেন,বা তাদের লোকসভায় দলীয় প্রার্থী করা হোক আসল লড়াই কিন্তু লড়তে হবে কর্মী সমর্থকদের৷ তৃণমূলের বিধায়ক,সাংসদদের ভাঙিয়ে এনে তাদেরকে বিজেপিতে যোগদান তৃণমূলকে একটা ধাক্কা মাত্র।
আসলে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন যে বিষয় নিয়ে চর্চা হচ্ছে সেটি হল মুকুল রায় কিন্তু তৃণমূলকে কিছুটা হলেও ভাঙতে পারছেন৷সেটি নৈতিক কি অনৈতিক এই প্রশ্ন আপাতত উহ্য রাখতে চাইছেন রাজ্যের তৃণমূল বিরোধী মানুষেরা৷ আসলে ২০১১এর পালাবদলের পর প্রায় নিয়ম করেই বিরোধী দলের নেতা,জনপ্রতিনিধিদের ভাঙিয়ে তৃণমূলের দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে৷দলবদলের সপক্ষে তৃণমূল দাবি করেছে উন্নয়নে সামিল হতেই তারা তৃণমূলে যোগ দিলেন৷ যে দল থেকে জনপ্রতিনিধি বা নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তখন সংশ্লিষ্ট সেই বিরোধী দলগুলি বিশেষত বাম ও কংগ্রেসের অসহয়তা প্রকাশ পেয়েছে,তারা শুধুমাত্র বিবৃতি দিয়ে বলেছে এতে দলের ক্ষতি হবে না,ভোটেও এর প্রভাব পড়বে না৷কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে দল ভাঙানোর রাজনীতি করেই তৃণমূল তার শক্তি বাড়িয়েছে৷আজ বিজেপির হয়ে ঠিক একই কাজ করছেন মুকুল রায়৷ অনেকেই বলছেন মুকুল জননেতা নন। তাঁর পক্ষে জন আবেগ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সব দলেই কৌশল ঠিক করার জন্য ‘স্ট্র্যাটেজিস্ট’-এর দরকার৷ বলা ভাল ঠান্ডা মাথার মুকুল কিন্তু রাজনীতির কঠিন পাটিগনিত মিলিয়ে ফেলছেন বেশ দক্ষতার সঙ্গে৷অনেকেই এই দলভাঙানো নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন তুলতেই পারেন৷
কিন্তু মুকুল রায় দেখাচ্ছেন তিনি জননেতা না হলেও দলবদল করেও তিনি দলভাঙানোর খেলায় এতটুকু ফর্ম হারান নি৷বরং যে কায়দায় তৃণমূলের হয়ে বিরোধীদের ঘর ভাঙতেন,একই দক্ষতার ঝলক তিনি দেখাচ্ছেন তৃণমূল থেকে বিজেপিতে সাংসদ বিধায়কদের ভাঙাতে৷কেউ মানুন আর না মানুন মুকুল রায় তার পারফরমেন্সেই বিজেপির সম্পদ হয়ে উঠেছেন৷ তাঁর মতো ঠান্ডা মাথা, ভোটের পাটিগণিতে দক্ষ, বাংলার প্রতিটি বুথকে নিজের হাতের তালুর মতো চেনা এবং দল ভাঙানোতে ওস্তাদ নেতা এই রাজ্য রাজনীতিতে সাম্প্রতিক কালে কেউ এসেছেন বলে অন্তত রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করতে পারছেন না৷মানুন আর না মানুন বঙ্গ রাজনীতিতে মমতার পর মুকুলই হলেন সব থেকে আকর্ষনীয় চরিত্র৷ মুকুলের মূল কাজই ছিল বিক্ষুব্ধদের চিহ্নিত করা, তাঁদের এক ছাতার তলায় নিয়ে আসা,বলা ভাল দল ভাঙিয়ে তাদের গেরুয়া শিবিরে নিয়ে আসা৷কোনও সন্দেহের অবকাশ নেই, বিজেপির হয়ে রাজনীতির দ্বিতীয় ইনিংসেও মুকুল ব্যাট করছেন সেরা টেষ্ট ব্যাটসম্যানদের ছন্দে৷কোনও তাড়াহুড়ো নেই,বরং নিজের দক্ষতার প্রতি আস্থা রেখে পাল্টা প্রতি আক্রমন করে নিজের দক্ষতার প্রতি সুনাম এখন পর্যন্ত বজায় রাখতে পেরেছেন মুকুল রায়৷
অর্জুন সিংহ,অনুপম হাজরা,সৌমিত্র খাঁ-এর মত সাংসদদের তৃণমূল থেকে ভাঙিয়ে এনে নিজের দক্ষতার প্রমান দিয়েছেন৷তবে এখনও পর্যন্ত তার সব থেকে বড় মাষ্টারস্ট্রোক বোধহয় ভাটপাড়ার চারবারের বিধায়ক,দক্ষ সংগঠক অর্জুন সিংহকে গেরুয়া শিবিরে নিয়ে আসা৷তবে মুকুলের সব কেরামতি ভাল কি মন্দ সেটা বিচার হবে যদি অনুপম হাজরা,সৌমিত্র খাঁ,কিংবা অর্জুন সিংহ পদ্মফুল ফোটাতে পারেন,আরও ভাল করে বললে যদি তারা বিজেপির প্রতীকে দাঁড়িয়ে জিততে পারেন তবেই বোঝা যাবে কেবল দলভাঙানো নয় সঠিক স্থানে সঠিক প্রার্থীকে দলের টিকিট দিয়েছে বিজেপি৷সব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে অপেক্ষা করতে হবে ২৩মে পর্যন্ত৷ ভাষণবাজি, রিয়েল-পলিটিক এক জিনিস, আর নির্বাচনী রাজনীতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। ভোটের দিন নিজেদের সমর্থকদের ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে নিয়ে আসা, সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বুথে বসে থাকা বিশাল গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
এই কাজটি বিজেপি কর্মীরা নির্বিঘ্নে করতে পারলে বোঝা যাবে কেবল সাধারন ভোটারদের সমর্থন পাওয়া নয়,বা তৃণমূল বিরোধী প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া নয় সাংগঠনিক ভাবে বিজেপি বাংলায় শক্তি বাড়িয়েছে প্রমানিত হবে৷তবে এই কাজটি যে নির্বিঘ্নে কতটা করতে পারবেন সেই প্রশ্ন কিন্তু থেকেই গেলো৷বিগত নির্বাচনগুলিতে শাসকের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের নানা অভিযোগ উঠেছে৷ তৃণমূলের চড়াম চড়াম,গুড় বাতাসা,নকুলদানার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো ও মার খেয়ে হলেও বুথ আগলে রাখা, এখানেই আসল পরীক্ষা বিজেপির সংগঠনের। তৃণমূলও এভাবে বামেদের বিরুদ্ধে লড়াই করে এগিয়েছে৷তারপর তারা ২০০৯এর লোকসভায় আসন সংখ্যা প্রাপ্তির হিসেবে বামফ্রন্টকে টপকে মানুষকে বার্তা দিতে পারে পরিবর্তন অবশম্ভাবি৷ঠিক ১০বছর পর আবার যেন তেমন কিছুর ইঙ্গিত পাচ্ছেন রাজ্যের মানুষ৷তৃণমূলের বিরুদ্ধে ওঠা প্রতিষ্ঠান বিরোধীতার হাওয়াকে কাজে লাগাতে বিজেপির নেতৃত্বের সঙ্গে কাঁধে ,কাঁধ মিলিয়ে আসল লড়াইটা লড়তে হবে কর্মীদের৷যদি তারা সেই লড়াইটা লড়তে পারেন তাহলে মুকুলের তৃণমূল ভাঙানোর ম্যাজিক বিজেপির জয়ে পরিণত হতে পারে৷
আসলে রাজ্য রাজনীতিতে নতুন যে বিষয় নিয়ে চর্চা হচ্ছে সেটি হল মুকুল রায় কিন্তু তৃণমূলকে কিছুটা হলেও ভাঙতে পারছেন৷সেটি নৈতিক কি অনৈতিক এই প্রশ্ন আপাতত উহ্য রাখতে চাইছেন রাজ্যের তৃণমূল বিরোধী মানুষেরা৷ আসলে ২০১১এর পালাবদলের পর প্রায় নিয়ম করেই বিরোধী দলের নেতা,জনপ্রতিনিধিদের ভাঙিয়ে তৃণমূলের দলীয় পতাকা তুলে দেওয়া হয়েছে৷দলবদলের সপক্ষে তৃণমূল দাবি করেছে উন্নয়নে সামিল হতেই তারা তৃণমূলে যোগ দিলেন৷ যে দল থেকে জনপ্রতিনিধি বা নেতা তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন তখন সংশ্লিষ্ট সেই বিরোধী দলগুলি বিশেষত বাম ও কংগ্রেসের অসহয়তা প্রকাশ পেয়েছে,তারা শুধুমাত্র বিবৃতি দিয়ে বলেছে এতে দলের ক্ষতি হবে না,ভোটেও এর প্রভাব পড়বে না৷কিন্তু বাস্তবে দেখা গিয়েছে দল ভাঙানোর রাজনীতি করেই তৃণমূল তার শক্তি বাড়িয়েছে৷আজ বিজেপির হয়ে ঠিক একই কাজ করছেন মুকুল রায়৷ অনেকেই বলছেন মুকুল জননেতা নন। তাঁর পক্ষে জন আবেগ সৃষ্টি করা সম্ভব নয়। এটা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু সব দলেই কৌশল ঠিক করার জন্য ‘স্ট্র্যাটেজিস্ট’-এর দরকার৷ বলা ভাল ঠান্ডা মাথার মুকুল কিন্তু রাজনীতির কঠিন পাটিগনিত মিলিয়ে ফেলছেন বেশ দক্ষতার সঙ্গে৷অনেকেই এই দলভাঙানো নিয়ে নৈতিকতার প্রশ্ন তুলতেই পারেন৷
Loading...
কোন মন্তব্য নেই