Header Ads

তৃণমূলকে হারাতে ব্রাত্য নয় কোনও পথ, দলবদলুদের টিকিট দিয়ে বোঝালো বিজেপি৷

নজরবন্দি ব্যুরোঃ অন্য দলের ভোটার বা কর্মীদের রক্ত জল করা পরিশ্রমে জয়ী প্রার্থীর হাতে তৃণমূলের পতাকা তুলে দিলেই তিনি সাথে সাথেই উন্নয়নের যজ্ঞে সামিল হয়ে যান। তাদের পিছনে দলবদলুর তকমা জোটে না, কারন শাসক দলের সমালোচনা করার ক্ষমতা এই রাজ্যের মেনস্ট্রীম মিডিয়ার নেই৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদেরও প্রশ্ন তোলার সাহস হয়না যে তৃণমূল এত স্বচ্ছতা নৈতিকতার কথা বলে,অথচ তারাই রাজ্যে ক্ষমতা দখলের পরে নিয়ম করে বিরোধী দলের জনপ্রতিনিধিদের ভাঙিয়ে প্রশাসনিক ক্ষমতার সব স্তর নিজেদের কব্জায় এনেছে৷
এই পদ্ধতিতে হয়ত বিরোধী রাজনীতির পরিষরকে ছোট করে দেওয়া যায়,কিন্তু পদ্ধতিটা একেবারেই নৈতিকতার বিচারে সঠিক নয়৷২০১১-এর পালাবদলের পর পরিবর্তনের সরকার ক্ষমতা গ্রহনের আগে এই রাজ্যে অন্তত কেউ চিন্তা করতে পারতেন না কোনও একটি দলের টিকিটে জিতে আসা জনপ্রতিনিধি সেই দলের ভোটারদের সাথে প্রতারণা করে হাসতে হাসতে শাসক দলের নেতৃত্বের হাত থেকে দলীয় পতাকা গ্রহন করে দিব্যি দলবদল করে নিতে পারেন!সুবিধাবাদী এবং অনৈতিক এই রাজনৈতিক ঘরানার সংস্কৃতি বঙ্গে বিকশিত হয় তৃণমূল কংগ্রেসের হাত ধরেই৷
২০১১সালে বামফ্রন্ট সরকারের পরিবর্তনের পর,তৃণমূল রাজ্যের শাসন  ক্ষমতা দখল করার পর রাজ্য রাজনীতিতে বিরোধী দলের নেতা,জনপ্রতিনিধিকে নিয়ম করে ভাঙিয়ে এনে তৃণমূল কংগ্রেসকে শক্তিশালী করা হয়েছে৷কেউ প্রশ্ন তোলেন নি, অথচ দলবদলকারী নেতারাই দেখা গিয়েছে ক্ষমতার অলিন্দের আশপাশেই আছেন৷অথচ যে মুহুর্তে বিজেপি তৃণমূলের জনপ্রতিনিধি ভাঙাতে লাগল তখন তাদের পিছনে দলবদলুর তকমা লাগানোর আপ্রান চেষ্টা শুরু হল৷ প্রশ্ন হল অন্য দল থেকে কর্মীদের আবেগ,রক্ত জল করা পরিশ্রমের ফসল হিসেবে যখন কোনও বিরোধী প্রার্থী জেতেন,এবং সেই জনপ্রতিনিধিকে ভাঙিয়ে তৃণমূলে এনে বলা হয় তিনি উন্নয়নে সামিল হলেন,অথচ তৃণমূলের থেকে বিজেপিতে জয়েন করলে দলবদলু ছাড়াও আরও অনেক তকমা জোটে!
আসলে তৃণমূল কংগ্রেস দেখিয়েছে দলবদল করা অনৈতিকতা নয়,তৃণমূল দেখিয়েছে দলবদল করা জনপ্রতিনিধি নেতাদের ক্ষমতার অলিন্দের স্বাদ দেওয়া হয়। তৃণমূল কংগ্রেসই  নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতি বাংলায় আমদানি করেছিল,যেখানে কার্যত বিরোধী দলের কর্মী,সমর্থকদে র ভোটে জেতা জনপ্রতিনিধিরা তাদের ভোটারদের সাথে প্রতারনা করলেও দিব্যি ক্ষমতার অলিন্দের আশপাশে থাকতে পারেন৷বিজেপি তৃণমূলের দুজন সাংসদ,এক বিধায়ককে ভাঙিয়ে এনেছে৷এখন তাদের নামে যে তকমা দেওয়ার চেষ্টা করা হোক না কেন মানুষের কাছে তার গ্রহনযোগ্যতা নেই৷কারন তৃণমূলের থেকে শিক্ষা নিয়ে বিজেপি তৃণমূলের অস্ত্র তৃণমূলের উপর প্রয়োগ করছে৷বিশুদ্ধবাদীরা,নৈতিকতা নিয়ে যারা বড়াই করেন,বড় বড় কলমচিরা, যতই রে,রে করুন,বঙ্গ রাজনীতিতে এই দল ভাঙানোর খেলা নিয়ে যতই কলম ধরুন,কিংবা মানুষকে অন্যভাবে প্রভাবিত করার চেষ্টা করুন,তাদের বড্ড দেরী হয়ে গিয়েছে৷আরও অনেক আগে এই প্রশ্নগুলি তারা তুললে মানুষ প্রভাবিত হতেন,তাদের তোলা প্রশ্নগুলি নিয়ে রাজ্যের শিক্ষিত,রাজনৈতিক সচেতন মানুষেরা হয়ত ভাবতেন৷তৃণমূল বিরোধী  মানুষেরা শুধু এটুকু বুঝেছেন তৃণমূলের ঘর ভাঙানোর অস্ত্রে তৃণমূলকে বেকায়দায় ফেলার চেষ্টা করছে বিজেপি৷তারই ফলস্বরূপ সৌমিত্র খাঁ,অর্জুন সিংহ,অনুপম হাজরা লোকসভার টিকিট পেয়েছেন৷ভবিষ্যত বলবে তারা জিতবেন কিনা,ভবিষ্যত বলবে তারা সাংসদ হবেন কিনা,তবে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদানকারী সাংসদ,বিধায়কদের লোকসভায় টিকিট দিয়ে বিজেপি বুঝিয়ে দিল তৃণমূলকে হারাতে কোনও পথই তাদের কাছে ব্রাত্য নয়৷
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.