Header Ads

"সুন্দরি তিনচুলে, যেন স্বর্গের দেশ" : চলুন বেড়িয়ে আসি।

"সুন্দরি তিনচুলে"
অনিরুদ্ধ ব্যানার্জী
আমি, অতনু, সোমনাথ ও শুভ ঘুরে এলাম অসাধারন একটি জায়গা থেকে। তারই কিছু কথা আপনাদের সাথে ভাগ করে নিলাম। আমরা গিয়েছিলাম তিস্তা তোরষা এক্সপ্রেস এ , রাত তিনটের দিকে নিউ জলপাইগুড়ি পৌঁছনোর পর কিছুক্ষন অপেক্ষা করতেই আমাদের সারথি মহাশয় এর ফোন। শহর ছেড়ে একটু এগোতেই অপরূপ চিত্র। গাড়ি যত উপরে উঠছে হালকা ঠান্ডার সাথে পাল্লা দিয়ে পাল্টে যাচ্ছে আশেপাশের দৃশ্যপট। সুন্দরী তিস্তা র পাশ দিয়ে অনেক টা পথ পেরিয়ে, অনেক চড়াই উৎরাই বেয়ে সুদক্ষ সারথির হাত ধরে ঠিক ৮ টায় আমাদের মাহিন্দ্রা এক্স উই ভি পৌছেগেল আমাদের হোম স্টে তে। এতক্ষন আপনারা ভাবছেন তো কোন হোম স্টে কে সারথি ...., আমরা বুক করেছিলাম অনেকের পরামর্শে রুবেন সুব্বার হোম স্টে, আর সেই পরামর্শ যারা দিয়েছিলেন তাদের আরো একবার ধন্যবাদ। আর উনিই ছিলেন আমাদের সারথি। অসাধারণ এই মানুষটির মতোই সুন্দর ওনার হোম স্টে টি। এরপর চা, লুচি ও আলুরদম সহযোগে প্রাতরাশ সেরে আমরা পায়ে হেটে আশেপাশের অনেকটা এলাকা ঘুরে দেখলাম। গেলাম কাঞ্চনজঙ্ঘা ভিউ পয়েন্ট এ, কপালে নেই তাই দেখতে পেলাম না। এরপর গেলাম বুদ্ধ মন্দির, তারপর গেলাম পেশক চা বাগান, গুম্বদ্বারা ভিউ পয়েন্ট । এই ভিউ পয়েন্ট এর উপরের দিকে একটি গুহা আছে, যাতে চিতাবাঘ রাতের বেলা শিকার ধরে আহার করে। স্থানীয় মানুষের কথা শুনে অনেকটা উপরে উঠলাম, প্রায় গুহার কাছে পৌছে আমাদের চার জন এরই কেমন যেন গা ছমছাম করতে লাগলো এত গভীর জঙ্গল। সত্যি বলছি ভয় পেয়েই আমরা নীচে নেমে এলাম। এরপর আমরা বাসায় ফিরে এলাম। ও হ্যা একটা কথা , দুটি কুকুর এই পুরো যাত্রাপথে আমাদের সঙ্গে ছিল, কেন জানিনা ওরাই আমাদের গাইড হয়ে গিয়েছিল। এরপর ভাত, লাল শাক ভাজা, পুদিনা দেয়া ডাল, আলু পটল এর তরকারি ও মাছ দিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজন সেরে নিলাম। রান্নার স্বাদ অসাধারণ। একটু আরাম করে আমরা পদব্রজে গেলাম তাকদা বাজার ও অর্কিড বাগান ঘুরতে। ঘোরা শেষ করে সন্ধ্যায় বেশ রোমাঞ্চকর পাহাড়ি রাস্তায় হেটে বাসায় ফিরে এলাম। আমরা আসতেই আমাদের জন্য চলে এলো মোমো। সেই মোমোর স্বাদ কলকাতার কোন পাঁচতারা হোটেল এ পাবেন না এটা নিশ্চিত করেই বলা যায়। এরপর একটু গল্প করে সবাই ক্লান্ত থাকায় রুটি ও চিকেন খেয়ে শুয়ে পড়লাম।। পরদিন আমাদের সারথি রাজেশ থাপা ঠিক 9 টায় আমাদের নিয়ে বেরোল। তার আগে আমরা স্নান করে লুচি ও চানা মশলা দিয়ে বেশ ভালো করে প্রাতরাশ সেরে নিলাম। রাস্তার অপূর্ব রূপ দেখতে দেখতে একে একে লাভার্স ভিউ পয়েন্ট (তিস্তা ও রংগীত এর মিলন স্থান), লামহাট্টা পার্ক দেখে রওনা হলাম দূরবীন দ্বারা ভিউ পয়েন্ট এর দিকে। পথে রাঙ্গলি ও তিস্তা ভ্যালী চা বাগানে দাঁড়িয়ে অসাধারণ দৃশ্য উপভোগ করলাম। এরপর ভয়ঙ্কর রাস্তা পেরিয়ে রাজেশ ভাই এর দক্ষ হাতের উপর ভরসা করে এলাম দূরবীন দ্বারা তে। এখানকার দৃশ্য দেখে হতবাক হয়ে গেলাম, নিচ দিয়ে আঁকাবাঁকা পথে বয়ে চলেছে সুন্দরী তিস্তা, দূরে র পাহাড় আর তিস্তার খাত মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। এরপর গেলাম বৃটিশ আমলের ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে, নড়বড়ে ব্রিজ দদিয়ে ওপারে গেলাম। ইতিমধ্যে পেটে র মাঝে ছুঁচো তে ডন দিতে শুরু করেছে বলে তাড়াতাড়ি ফিরে এলাম।।
রাতে হোম স্টের বসার জায়গা থেকে পাহাড়ি নিস্তব্ধতা উপভোগ করলাম। পরদিন ভোর চার টের সময় উঠে চা খেয়ে তিনচুলে কে বিদায় জানানোর জন্য আমরা তৈরি হলাম। গাড়িতে ওঠার আগে রুবেন জি র মা আমাদের উত্তরীয় পরিয়ে বিদায় জানালো। ভারাক্রান্ত মনে আস্তে আস্তে সেই স্বর্গের দেশ থেকে নেমে এলাম।
 ঝুলন্ত ব্রিজে আমরা চার জন

 দুর্বিনদ্বারা ভিউ পয়েন্ট
 রঙ্গলি চা বাগান
  লামহাটা পার্ক

লাভার্স ভিউ পয়েন্ট
আমাদের সারথী

হোম স্টে র বানানো মোমো

 গুম্বদ্বারা

 আমাদের হোম স্টে
অরুচাঁ ফল
লেখকঃ অনিরুদ্ধ ব্যানার্জী
বিঘাটি, ভদ্রেস্বর, হুগলী।

Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.