Header Ads

পড়াশোনার খরচ কমাও-জাত-ধর্মের হিংসা থামাও, রক্ষা করো শিক্ষার অধিকারঃসৃজন

নজরবন্দি ব্যুরো: বাম শ্রমিক সংগঠন সহ মোট ১৮ টি সংগঠনের ডাকা বনধের আজ ছিল শেষ দিন। প্রথম দিনে পুলিশ কর্মীদের সাথে এই রাজ্যের বাম সমর্থকদের দফায় দফায় সংঘর্ষ চলেছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে। একাধিক বাম নেতা ও সাধারণ সমর্থকরা গ্রেফতার হয়েছেন। আজও সেই একই চিত্র ধরা পড়ল। ধর্মঘটের সমর্থনে মিছিল করতে গিয়ে কলেজ স্ট্রিট এলাকা থেকে গ্রেফতার হলেন এসএফআই-এর রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য। এছাড়াও গ্রেফতার হয়েছেন এসএফআই-এর কলকাতা জেলা সম্পাদক অর্জুন রায়। আজ বনদের দ্বিতীয় দিনে সকাল থেকে ধর্মঘটের সমর্থনে কলেজস্ট্রিট এলাকায় মিছিলের নেতৃত্ব দিচ্ছিলেন দুই ছাত্র নেতা। এই সময় পুলিশ এসে শান্তিপূর্ণ মিছিল আটকানোর চেষ্টা করে। ছাত্রদের সঙ্গে অশালীন ব্যবহার করে বলে অভিযোগ। এর পরে মিছিল করার অপরাধে এবং অশান্তি ছড়ানোর মিথ্যা অজুহাতে গ্রেফতার করা হয় সৃজন ও অর্জুনকে। গ্রেফতারের পরে তাদের কলার ধরে রাস্তায় ফেলে টানতে-টানতে প্রিজম ভ্যানে তোলা হয়। এই ঘটনার পর এসএফআই রাজ্য সম্পাদক সৃজন নিজের ফেসবুক প্রোফাইল থেকে তাঁর প্রতিবাদের বার্তা জানান। সৃজন যা লিখেছেন তা সম্পূর্ণ অসম্পাদিত রূপে দেওয়া হল।
 শ্রমিক-কৃষক-ক্ষেতমজুরদের পাশে ছাত্ররা। ৮-৯ জানুয়ারি, ২০১৯। ভারতবর্ষ জুড়ে। ধর্মঘট প্রাসঙ্গিক কিনা, আজ বিজেপি-প্রভাবিত চ্যানেল ওপিনিয়ন পোল খুলেছিল বাংলায়। জনতার দুই-তৃতীয়াংশের উত্তর, হ্যাঁ। ব্রিটেনের বিখ্যাত খবরকাগজ, মর্নিংস্টার, লালপতাকার ছবি সমেত লিখছে, ইতিহাসের সবথেকে বড় ধর্মঘট চলছে এই মুহূর্তে ভারতবর্ষে। ২০ কোটির বেশি জনসংখ্যার দেশ গোটা পৃথিবীতেই পাঁচ-সাতটার বেশি নেই। ২০ কোটি মানুষ, এক ভারতবর্ষে, ধর্মঘট করছে। জাত নয়, ভাতের দাবি নিয়ে। বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে ডাকা ধর্মঘট। সেই ধর্মঘট ভাঙতে সারা দেশের মধ্যে সবথেকে সক্রিয় যে রাজ্য সরকারটা, সেটা তৃণমূলের। গত দেড়'দিন ধরে রাজ্যজুড়ে হকের দাবিতে হওয়া প্রতিটি মিছিলকে ভয় পেয়েছে ওরা। ভয় বেড়েছে যত, আক্রমণ বেড়েছে তত। কখনো পুলিশ, কখনো গুণ্ডা। আমরা থামিনি। থামার কথা'ও ছিল না। রাজ্যজুড়ে বাস চলেছে আজ আর কাল। যাত্রী নেই। রাজ্যজুড়ে দোকান খুলেছে আজ আর কাল, ক্রেতা নেই। রাজ্যজুড়ে স্কুল-কলেজ খুলেছে আজ আর কাল, পড়ুয়া নেই। সরকারি দাপটের মুখে জনতার নীরব নিবিড় প্রতিবাদ। গতকাল থেকে পশ্চিমবঙ্গের অসংখ্য কমরেডের মতই ধর্মঘট সফল করতে নেমে গ্রেপ্তার হয়েছেন এস এফ আই'এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটি সদস্য প্রসেনজিৎ মুদি এবং তনুশ্রী মণ্ডল। গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য অর্জুন রায়, জোসেফ হোসেন। এছাড়াও বহু রাজ্য কমিটি সদস্য, যাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জেলা সম্পাদক বা সভাপতি, গ্রেপ্তার হয়েছেন, আক্রান্ত হয়েছেন, আহত হয়েছেন - পুলিশ এবং তৃণমূলের হাতে। বিজেপি কোথায়? ধর্মঘট কাদের বিরুদ্ধে, দিদি না মোদী, সেটিং'এর জোরে ভুলেই তো গেলাম আমরা! সারা রাজ্যে সাংগঠনিক নেতৃত্ব ছাড়াও বাকি সবার সাথেই জানকবুল লড়াই লড়েছেন হাজারো ছাত্র কমরেড। হৃদয়ের অন্তঃস্থল লাল সেলাম প্রত্যেককে। শাসকের চক্রান্ত, ফলস কেসের ভিড়, পুলিশি জুলুম, গুণ্ডাদের টহল, সমস্তটার মোকাবিলা করে কমরেডরা তুমুল সাহসিকতার সাথে ময়দানে পড়ে থেকে লড়েছেন। এই লড়াই শুধু এই দু'দিনের নয়। এই লড়াইকে, টানতে হবে। টানতেই হবে। আজ আরো এক বেলা। তারপর কাল। তারপর পরশু। পরপর লড়াই। জানুয়ারির দ্বিতীয় ধাপ থেকে মাধ্যমিকের আগে অবধি - প্রতি জেলায় এস এফ আই'এর ডাকে বড় জমায়েত নিয়ে বিক্ষোভ। যতই আসুক আঘাত, ছাড়ব না রাস্তা। ছাড়ব না কোনোমতে। পড়াশোনার খরচ কমাও, জাত-ধর্মের হিংসা থামাও, রক্ষা করো শিক্ষার অধিকার.... এই দাবিতে মিছিল চলবেই।
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.