রাখীর বন্ধন।
চৈতালী রায়ঃ বাদলকে অনেকটা পথ যেতে হবে।প্রতি বছর দিনটি এলে মনটা কেমন উদাস হয়ে যায়।পাহাড়ের অন্ধকার পথ।তার উপর আজ সারাদিন বৃষ্টি হয়েছে।পথ পিছল হয়ে গেছে।চিতরের রানী কর্ণবতী হুমায়ুনকে গুজরাট সুলতান বাহাদুর শাহের কাছ থেকে তার রাজ্য রক্ষা করার জন্য ভাতৃত্বের নিদর্শন স্বরূপ একটি রাখী পাঠিয়েছিলেন।
এই জন্যই দৌপদীর বস্ত্র হরনের সময় শ্রীকৃষ্ণ তার পরনে যে বস্ত্র দান করেছিলেন তার কোন শেষ ছিল না।আজও সর্ব ধর্ম নির্বিশেষে অঙ্গীকার পাল্টায়নি।রাখী শুধু ভাইবোন নয়..... মৈত্রীর প্রতীক। দিনটি এলে কোথা থেকে এক বীভৎস টান অনুভব করে বাদল।শুধু বাদল নয় বাদলের মত কত ভাই হাজার বিবাদ সত্বেও এই দিনটিতে বোনের হাতে রাখী পেতে চায়।আবার বৃষ্টি শুরু হল।
অপেক্ষায় প্রহর গুনতে গুনতে কখন পাহাড়ের বের হওয়া ক্ষয়িঞ্চু পাথরের তলায় ঘুমিয়ে পড়েছিল বাদল জানতেই পারে নি।ঘুম ভাঙলে রুদ্ধশ্বাসে চলতে থাকে বাদল।কখনও দৌড়াতে গিয়ে পাথরের কোনায় কেটে যায় কখনও ক্ষত মারাত্মক হয়।আজ পাঁচ বছর ধরে ফেরারী বাদল।এখন সে মাওবাদী তকমা পেয়েছে।
বাড়ি পৌঁছালো বাদল। দরজায় কড়া নাড়তে প্রদীপের আলো সামনে নিয়ে বোনের মুখটা দেখে যে পরম শান্তি অনুভব করলো তা সমস্ত দুখ কষ্ট প্রলেপ দিতে যথেষ্ট।
ঘরে ঢুকলে বোন তার হাতে রাখী বেঁধে
দিল।তার পছন্দের কত খাবার রেধেছে।তৃপ্তি করে খাওয়া শুরু করতেই পুলিশের কড়া নাড়ার শব্দ।উঠে দাঁড়ালো বাদল।বাপ
মা মরা বোনটার দিকে তাকালো।বোন হাতটা ধরে পিছনের গুপ্ত পথ দিয়ে বের করে দিল।বাইরে পুলিশের গুলির শব্দ,ভিতরের ঘরে এক বোন দাদার জীবনের জন্য প্রার্থনা করতে লাগলো, বিশ্বাস করলো তার রাখী দাদাকে ঠিক বাঁচিয়ে দেবে।।

No comments