Header Ads

রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার বেহাল চিত্র! নির্বাচনের আগে প্রকাশ্যে এল সেই পরিসংখ্যান।

নজরবন্দি ব্যুরো: শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে চরম সঙ্কটের মধ্যে দাঁড়িয়ে রাজ্য। নিয়োগ নিয়ে একাধিক অভিযোগ। আর সেই বিতর্কের মাঝে উঠে এল এই রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থার ঘুণধরা চেহারা। প্রায় এক বছর আগে একাদশ শ্রেণীতে স্কুল-ছুটের হার ছিল সাড়ে আট শতাংশ। এক বছর পর সেটা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪ শতাংশে একটু বেশি। কোনও জেলায় সাত আবার কোথাও এক লাফে ১৪ শতাংশ করে স্কুল-ছুটের হার বেড়েছে। সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, কলকাতায় যেখানে এই স্কুল-ছুটের সংখ্যা প্রায় ছিলই না, তা এবার বেড়ে ১৩.৩ শতাংশ হয়েছে। ছাত্রীদের তুলনায় ছাত্রদের স্কুল ছেড়ে দেওয়ার হার অনেক বেশি। সর্ব-শিক্ষা মিশনের প্রকাশিত বার্ষিক রিপোর্টে উঠে এসেছে এমন চিত্র। এক বছরে এমন চিত্র স্বভাবতই কিছুটা উদ্বেগ বাড়িয়েছে এই রাজ্যের শিক্ষা-মহলকে।
রিপোর্টে স্পষ্ট, উল্লেখযোগ্যভাবে প্রায় প্রতিটি জেলায় স্কুল-ছুটের সংখ্যা বেড়েছে। আলিপুরদুয়ারে যেখানে ৮.৮৬ শতাংশ স্কুল-ছুট ছিল, সেখানে এবার তা বেড়ে ২৯ শতাংশ হয়েছে। অর্থাৎ, মাধ্যমিকের পর স্কুল ছেড়ে দেওয়া ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা তিনগুণেরও বেশি বেড়েছে। আবার দার্জিলিংয়ে দেখা যাচ্ছে, এবার স্কুল-ছুটের হার ২০ শতাংশের বেশি। এর মধ্যে ছাত্রদের (২৫.০২ শতাংশ) স্কুল ছেড়ে দেওয়ার হার অনেকটাই বেশি। আগের বার যা ছিল মাত্র ৩.৮৩ শতাংশ। মুর্শিদাবাদেও প্রায় ছ’শতাংশ স্কুল-ছুটের সংখ্যা বেড়েছে এবার। উত্তর দিনাজপুরে এক লাফে এই হার বেড়েছে প্রায় ১৪ শতাংশ। বর্ধমানে স্কুল-ছুটের হার ১২.৭৯ শতাংশ থেকে কমে এবার হয়েছে ৭.৬ শতাংশ। উত্তর ২৪ পরগনাতেও কিছুটা ভালো চিত্র। সেখানে প্রায় আট শতাংশ থেকে কমে স্কুল-ছুটের হার দাঁড়িয়েছে ৪.৬৫ শতাংশে। কিন্তু দক্ষিণ ২৪ পরগনা, শিলিগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুরে যে হারে স্কুল-ছুটের হার এক লাফে বহু গুন বেড়ে গিয়েছে। তবে প্রাথমিক থেকে উচ্চ প্রাথমিক স্তরে স্কুল-ছুটের হার বেশ কম। তার বড় কারণ সেখানে এখনও পর্যন্ত পাশ-ফেল চালু হয়নি। তাছাড়া মিড ডে মিল সহ একাধিক সুবিধা পাচ্ছে পড়ুয়ারা। তবে মাধ্যমিক পাশ করেই স্কুল ছেড়ে দেওয়াটাও রাজ্যের পক্ষে খারাপ চিত্র।
কিন্তু কেন এই বেহাল দশা! দক্ষিণ ২৪ পরগনার একটি স্কুলের শিক্ষক প্রণব পাইকের বক্তব্য, বুনিয়াদি শিক্ষায় অনেক সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু উচ্চ ক্লাসে শিক্ষক সঙ্কট প্রকট হচ্ছে। পরিকাঠামোগত অনেক খামতি থেকে যাচ্ছে।এসব কারণে কেউ আর দশম শ্রেণীর পর এগতে চাইছে না। যাদবপুর বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক পরিমল ভট্টাচার্যের মতে, এর একাধিক কারণ হতে পারে। তার মধ্যে একটি হতে পারে, মাধ্যমিক দিয়ে অনেকে পলিটেকনিকে ভর্তি হয়ে যাচ্ছে। তাই খালি থেকে যাচ্ছে স্কুলের আসন। তবে এটা নিয়ে চিন্তাভাবনা করা উচিত রাজ্য সরকারের।

তবে এই নিয়ে এক হবু শিক্ষক নজরবন্দির প্রতিনিধিকে বলেন, "যে রাজ্যে সাত বছর শিক্ষক নিয়োগ প্রায় বন্ধ, যেখানে টাকার বিনিময়ে শিক্ষকের চাকরী পাওয়া যায়, চাকরীর দাবিতে অনশনে চালাতে হয়ে আমাদের, যে রাজ্যের একাধিক স্কুলে শিক্ষকের অভাব , সেই রাজ্যে এর থেকে আর ভাল কিছু হতে পারে না"।
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.