ভিন্ন মানবী! কেরলের 'জঙ্গলের মা'কে পদ্মশ্রী সম্মান দিলো দেশ!
তিনি লক্ষ্মীকুট্টি। কেরলের সবাই তাকে এক ডাকে চেনে "বন মাথাসাই" বা জঙ্গলের ঠাকুমা বলে। ৭৫ বছর বয়সী বয়ষ্কা এই জনদরদী মানবীকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করল দেশ।
তিরুবনন্তপুরম জেলার কল্লর অঞ্চলে বাস করেন লক্ষ্মীকুট্টি। চারিদিকে ঘন জঙ্গল। কিন্তু জঙ্গল ছেড়ে তিনি চলে আসেননি। বরং জঙ্গলকে কী করে মানবসভ্যতার কাজে লাগানো যায়, সেই চেষ্টায় ব্রতী হয়েছেন।
সবরকম সাপের বিষ থেকে মুক্তির ওষুধই তাঁর জানা আছে। তাছাড়াও জঙ্গলকে চেনেন হাতের তালুর মতোই। চেনেন লতা-পাতা। গাছগাছালির বিস্ময়-গুণ তাঁর নখদর্পণে। আর তা ব্যবহার করেই বিগত প্রায় পাঁচ দশক ধরে এভাবেই মানুষের সেবা করে চলেছেন তিনি।
কেরলের ওই জংগল এলাকার আদিবাসীদের মধ্যে তিনি প্রথম ১৯৫০ সালে স্কুলে পড়তে এসেছিলেন। বয়স ৭৫ হলেও এখনো তিনি দক্ষিণের বিভিন্ন নামকরা শিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে লতা পাতার গুনাগুন নিয়ে বক্তৃতা দিয়ে যান ঘন্টার পর ঘন্টা। এর পাশাপাশি কেরালার কল্লর অঞ্চলের কেরালা ফল্ক লোর একাডেমির শিক্ষিকা হিসেবে যুক্ত রয়েছেন।
যাকে ঘিরে এত কথা সেই লক্ষী কুট্টি নিজে কখনও ভাবেননি জঙ্গলের লতা পাতা আর গাছগাছড়া দিয়ে তার নিজস্ব আবিষ্কার দিয়ে এভাবে মানুষের সেবা করে পদ্মশ্রী সম্মান পাবেন। তাই তো সম্মানের খবর জানার পর তিনি হতবাক। কোনোরকমে বলে ওঠেন, মানুষের কাজে আসতে পেরেই তার সব চেয়ে বেশি আনন্দ। পদ্মশ্রী বা অন্য কোন পুরষ্কার পাব কখনও এই আশা করে অসুধ তৈরি করে মানুষের সেবা করতে যাইনি।
অপরদিকে ইংরেজী বছরের প্রথম "মন কি বাত" অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দাবি করে বলেন, "পুরষ্কার পাওয়ার জন্য এখন আর পরিচয় শেষ কথা নয়। কাজের গুরুত্ব বিচার করেই পদ্ম পুরষ্কার দেওয়া হয়।" তিনি আরও বলেন "যদি এবছরের পদ্ম প্রাপকদের তালিকা দেখা যায়, তাহলে দেখা যাবে সমাজে এই ধরনের মানুষ রয়েছেন ভেবে গর্ব হবে।" এরপরেই তিনি এবারের পদ্ম পুরষ্কারে সম্মানে ভুষিত কেরলের আদিবাসী মহিলা লক্ষী কুট্টি ও কানপুরের আইটিটি-র প্রাক্তনী অরবিন্দ গুপ্তার নাম করে বলেন, এই পুরষ্কারের বাইরে থেকেও নিঃস্বার্থভাবে নিজের নিজের কাজ করে চলেছেন বহু মানুষ। সমাজের উচিত তাদের স্বীকৃতি দেওয়া।
Loading...
কোন মন্তব্য নেই