দেশ বাঁচাতে কঠোর হতেই হবে; লকডাউনে নিয়ম ভাঙলেই পেটাক পুলিশ।
অরুনাভ সেন, নজরবন্দিঃ লকডাউনের গেরোয় গোটা ভারত স্তব্ধ৷থমকে আছে যাত্রি পরিবহনের জন্য  ব্যবহৃত গাড়িগুলি৷বিমানবন্দর থেকে উড়ছে না যাত্রিবাহী কমার্শিয়াল ডোমেস্টিক ও ইন্টারন্যাশনাল ফ্লাইট৷কারশেডে পরপর দাঁড়িয়ে যাত্রিবাহী মেইল,লোকাল থেকে এক্সপ্রেস ট্রেনগুলো৷থমকে আছে মেট্রো৷যদিও আওতার বাইরে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রী,এবং সেগুলি এক জায়গা থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাওয়ার গাড়িগুলিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে৷করোনার গুঁতোয় এমনিই মানুষ স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি জীবন বেছে নিয়েছেন৷অত্যন্ত প্রয়োজন না পড়লে কেউ ঘরের বাইরে বের হচ্ছেন না৷এই সার্বিক চিত্রের মাঝে উল্টোচিত্র আছে প্রচুর৷বরং এখনকার ছবিটা এমন শুধুমাত্র বাস-ট্রেন চলছে না,তবে মানুষ মোটেও ঘরে বসে নেই৷বাজার-ঘাটে অপ্রয়োজনে দিব্যি ভিঢ় করছেন৷পাড়ার মোড়ের লুকিয়ে খোলা চায়ের দোকানে চলছে দেদার আড্ডা৷ মিষ্টির দোকানগুলোতে উপছে পড়া ভিড়৷সোশ্যাল ডিস্ট্যান্স মানার ছবির থেকে থেকে সেখানে এখন বরং নিয়ম ভাঙার ছবিটা বেশীই চোখে পড়ছে খালি চোখে৷
আমাদের রাজ্যে হঠাৎ করে পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করা হল!লকডাউন কার্যকর করতে পুলিশের ডান্ডা হাতে ছবি পাড়ার রোমিও,র বুকে ভয় সঞ্চারিত হয়েছিল৷যত বড় মাপের রোমিও হোক,বা আড্ডাবাজ পুলিশের পালিশের ভয়ে নিজেদের বন্ধুমহলে বেশ আক্ষেপের স্বরে বলছিলেন,না-না কোনওমতে রাস্তায় যাব না৷গেলেই প্রথম প্রশ্ন রাস্তায় কেন?বলেই লাঠির বাড়ি৷আসলে সারা পৃথিবীর অপ্রচলিত নিয়ম বেশীরভাগ শক্তের ভক্ত নরমের যম৷পুলিশ তাদের কাজ করছিলেন দক্ষতার সঙ্গে,হয়ত কখনও একটু অতিসক্রিয় হয়েছে,তবে লকডাউন সফল করতে পুলিশকে মুক্তকন্ঠে প্রশংসা করেছেন রাজ্যের সিংহভাগ মানুষ৷কিন্তু ফেসবুকের কিছু বিপ্লবীর কথায় কি জানিনা,হঠাৎই পুলিশকে নিষ্ক্রিয় করা হল৷এবং যেগুলি ঘটার ছিল ঠিক সেগুলিই ঘটছে৷এমনিই আমাদের দেশে  অনিয়মটা সবসময় নিয়ম,তবুও পুলিশের লাঠির ভয়ে পাড়ার রোমিও থেকে ফুটো মস্তানও দিব্যি ঢুকেছিল ঘরের অন্দরে৷আমরা আশাবাদী ছিলাম করোনাকে হারাবে ভারত৷আমরা আশাবাদী ছিলাম কোভিড-১৯,তুমি যত বিক্রমশালী হও,ভারতের,বাংলার মানুষের স্বাস্থ্যবিধি অক্ষরে-অক্ষরে মেনে চলায় হারতে হবে তোমাকে৷কিন্তু না আমরা আশাবাদীরা ভুল স্বপ্ন দেখেছিলাম৷লকডাউনে বেনিয়মটাও যেন নিয়ম,বারবার আমাদের চোখে পড়ছে৷আমাদের দেশে লাফিয়ে-লাফিয়ে বাড়ছে সংক্রমনের সংখ্যা৷শুনলে অবাক হবেন রাজ্যের বহু স্থানে পুলিশের চোখকে ফাঁকি দিয়ে লকডাউনকে অগ্রাহ্য করে ভোর তিনটে থেকে সকাল ৭-৮টা পর্যন্ত চলেছে ইটভাঁটা৷ইট তৈরি থেকে ইটকাটা সবই হয়েছে পুলিশের অলক্ষে,কোথাও বা প্রশাসনের সঙ্গে অশুভ আঁতাতে লকডাউনকে ভাঙার সাহস দেখিয়েছেন ইট ভাঁটা মালিকরা৷গরিব পরিযায়ী ভিনরাজ্যের অসংখ্য শ্রমিক সেখানে কাজ করেন৷যদি কখনও কোনও গরিব শ্রমিক কোভিড-১৯আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন চোখ বন্ধ করে বলা যায় লকডাউনেও সচল থাকা ইটভাঁটাগুলি হতে পারে সংক্রমনের অন্যতম সম্ভাব্য উৎসস্থল৷ লকডাউন জারি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত। ২১ দিনের এই লকডাউনে আগামী দিনে যে আর বাড়বে না,সুনিশ্চিত করেছেন মন্ত্রিপরিষদের সচিব রাজীব গৌবা৷মোদি সরকার স্পষ্ট বলেছে লকডাউনের সময়সীমা আর বাড়ানো হবে না৷ঘরবন্দি বহু মানুষ এই সিদ্ধান্তে অত্যন্ত খুশী৷বিশেষত যারা বেড়াতে যেতে ভালবাসেন তাদের প্রশ্ন কবে থেকে মিলবে বুকিংয়ের সুবিধা৷সত্যিকথা বলতে কি এই ব্যাপারে সরকারি ভাবে কোনও তথ্য সংবাদমাধ্যমের কাছে আসেনি৷ ১৫ এপ্রিল অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের পরের দিন থেকে স্বাভাবিক হতে পারে রেল এবং বিমান পরিষেবা মিলেছে সরকারি ইঙ্গিত৷৷তবে আগাম বুকিং নেওয়া হবে কি হবে না আমাদের কাছে কোনও সরকারি তথ্য নেই৷তেমন খবর এলে আমরা জানাব৷
মাঝে খবর এসেছিল,গুজব রটেছিল
লকডাউনের মেয়াদ বাড়ানো হতে পারে, এই খবর ছড়িয়ে পড়ায় বিভ্রান্তি ছড়িয়ে পড়েছিল সর্বত্র৷এতকিছুর মাঝেও আমরা আগেও বলেছিলাম হাতে এখনও অনেকটা দিন আছে৷লকডাউনের নিয়ম না মানলে ব্যর্থ হতে পারে এতদিনের কৃচ্ছসাধন৷অক্ষরে-অক্ষরে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা মানুষদের ত্যাগ বিফলে যাবে৷দেশে সংক্রমিত মানুষের সংখ্যা বাড়ছে৷৷উঠে আসছে করুন আর্তি৷সবাই একবাক্যে বলছেন রাজ্য সরকারকে পুলিশকে ক্ষমতা দিন,আমাদের আত্মত্যাগ ব্যর্থ  হতে পারে কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষের উদাসীনতায়৷আমরা চাইনা বাংলা হোক চিন-ইতালি৷আমরা সবাই বাঁচতে চাই একসাথে,তবে সেই স্বপ্ন ভেঙে যেতে পারে কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষের উদাসীনতায়, বিশেষত লকডাউনের নিয়মকে যারা বুড়ো আঙুল দেখাচ্ছে৷রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে সচেতন মানুষের আর্তি অনুগ্রহ করে পুলিশকে ক্ষমতা দিন,পুলিশ ঠিক সবক শেখাবে লকডাউন ভঙ্ককারীদের৷

No comments