Header Ads

করোনাকে হারিয়ে বিজয়নকে টেক্কা দেওয়া তো দূর,উলটে সংঘাতে জড়িয়ে পিছিয়ে পড়ছেন মমতা।

অরুনাভ সেন, নজরবন্দিঃ করোনা রাজ্যে দাপট দেখানোর পর থেকেই ভয়ের আতঙ্কে কাঁপছে গোটা বাংলা৷কিন্তু রাজনৈতিক ভাবে যেটি সব থেকে তাৎপর্যের করোনা নিয়ে যেভাবে বিরোধীরা ক্রমশ তৃণমূল তথা রাজ্য সরকারের উপর দিনদিন চাপ বাড়াচ্ছে তাতে কিন্তু সামগ্রিক ভাবে সরকারের ব্যর্থতার দিকটা জনমানসে প্রতিফলিত হচ্ছে৷যারাই কিছুদিন আগেও কার্যত তৃণমূল বলতে অজ্ঞান ছিলেন এমন মানুষরাও বলছেন প্রথম থেকে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে রাজ্য সরকার অহেতুক লুকোচুরি না খেলে বরং করোনার বিরুদ্ধে স্ট্রেট ব্যাটে ব্যাটিং করলে রাজ্য সরকার তথা গোটা তৃণমূলকে এভাবে বিড়ম্বনার মুখে পড়তে হত না৷অনেকে একধাপ এগিয়ে বলছেন পিনারাই বিজয়নের সরকারের থেকে শিক্ষা নিলে আজ বাংলায় করোনা এতটা ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি করতে পারত না৷ করোনা মোকাবিলায় শুরুতে সবমহলে রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রশংসা পেলেও ধীরে ধীরে বদলে যাচ্ছে কিন্তু চিত্রটা। রাজ্যের বিরুদ্ধে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা চাপার চেষ্টা এবং বেশি সংখ্যক টেস্ট না করার অভিযোগে সরব হয়েছে বিজেপি। সংক্রমিত এলাকা নিয়েও কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত বেড়েছে।
রেশন দুর্নীতি সহ একধিক ইস্যুতে রাজ্য সরকারকে ক্রমশ বেঁধার চেষ্টা করছে বামেরা৷সবমিলিয়ে বোধহয় বলা যায় করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের প্রস্তুতির অভাবটা রাজ্যের সাধারন মানুষের সাদা চোখে ধরা পড়ছে এবং সেই দিকগুলো সম্পর্কে রাজ্যের সাধারন মানুষের সামনে তুলে ধরতে বিরোধীরা আরও আদা-জল খেয়ে লেগেছেন৷কোভিড-১৯এর প্রতিষেধক যেমন অজানা চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের, ঠিক তেমনই রাজ্যে করোনা পরিস্থিতিতে বিড়ম্বনায় পড়া রাজ্য সরকারকে প্রতিনিয়ত বিরোধীদের শানিত রাজনৈতিক আক্রমনের মোকাবিলা করতে বারবার শাসক তৃণমূলের অসহায় অবস্থার ছবি বেআব্রু হয়ে ফুটে উঠছে৷বিরোধীরা ক্রমশ নানা ইস্যুতে সরকারের উপর চাপ বাড়াচ্ছেন,কিন্তু বিরোধীদের আক্রমনটা ঠিক কিভাবে মোকাবিলা করা হবে সেই বিষয়ে শাসক তৃণমূল সত্যিই অসহায়৷বিরোধীদের বাউন্সারে সরকার ছেড়ে দেবে,নাকি সপাটে হুক করবে সেই সিদ্ধান্তটা নিতেই পারছে না রাজ্য সরকার তথা রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেযের শীর্ষ নেতৃত্ব৷এমনিই কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সংঘাতের জেরে কিছুটা ব্যাকফুটে রাজ্য সরকার৷ করোনা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ব্যর্থতার নানা চিত্র একের পর এক সামনে এনে ক্রমশ সরকারের উজ্জ্বল ভাবমূর্তির পেছনে যে বড় অন্ধকার সেই চিত্র তুলে ধরতে বদ্ধপরিকর বিরোধীরা৷পিছিয়ে নেই যেমন বামেরা,তেমনই বিজেপিও এই ঘোলা জলে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে বদ্ধপরিকর৷করোনা যখন সদ্য রাজ্যে পা দিয়েছে তখন রাজ্য সরকার তথা মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভিন্ন লেখা,ফেসবুক বা whats app এ একের পর এক প্রশংসনীয় সেই লেখাগুলো যেন ইউ টার্ন নিচ্ছে৷অর্থাৎ সোশ্যাল মিডিয়া যেন বুঝিয়ে দিচ্ছে করোনা মোকাবিলায় মমতা কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে টেক্কা দিতে পারেন নি,বরং পিনারাই বিজয়নের তুলনায় তিনি পিছিয়ে পড়েছেন অনেক কদম৷কেন্দ্রীয় স্বাস্থ ও পরিবার কল্যান মন্ত্রকের তথ্য অনুযায়ী আজ এখন পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫৬ জন। যার মধ্যে সুস্থ হয়েছেন ৭৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের অন্যদিকে এই মুহুর্তে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৬২ জন। আর রাজ্য সরকারের দেওয়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী এখন পর্যন্ত ৭৯৯৭ টি স্যাম্পেল টেস্ট হয়েছে। এখন আক্টিভ আক্রান্ত ৩৩৪ জন, মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের এবং সুস্থ হয়েছেন ১০৩ জন অন্যদিকে দেশের প্রথম আক্রান্ত রাজ্য কেরল ব্যপক ভাবে নিয়ন্ত্রন করে পেরেছে করোনার ভয়ানক পরিস্থিতিকে। একসময় মহারাষ্ট্রের সাথে সংক্রমনের বাড়তে থাকা গতিতে ব্রেক মারতে সক্ষম হয়েছে কেরল। তাই বলে যে টেস্ট হয়নি সেই অভিযোগও নেই৷ করোনা মোকাবিলায় শুরুতে সবমহলে প্রশংসা কুড়োলেও ধীরে ধীরে বদলে গেল চিত্রটা।
বরং রাজ্যের সাধারন মানুষের চোখে ধরা পড়ছে রাজ্য সরকারের অনেক ক্রুটি ব্যর্থতা৷একদিকে যখন পিনারাই বিজয়ন হয়ে উঠেছেন করোনা জয়ী নায়ক,তখন বাংলার মুখ্যমন্ত্রীকে বাম,-রাজ্যপাল সহ বিজেপি এই ত্রিফলার আক্রমনের মোকাবিলা করতে হচ্ছে৷ এদিন তো রাজ্যপালের সাথে মুখ্যমন্ত্রীর পত্রসংঘাত কার্যত নজিরবিহীন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় বেশ সক্রিয় এক বাম সমর্থকের সরেস মন্তব্য ওনার প্রশংসায় পঞ্চমুখের প্রোফাইল গুলো খুঁজে পাচ্ছি না৷রাজনৈতিক তথ্যভিজ্ঞ মহলের মতে সারদা-নারদা মুখ্যমন্ত্রীকে তেমন ভাবে বেগ দিতে না পারলেও রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি কিন্তু মমতাকে ক্রমশ বিড়ম্বনায় ফেলছে৷বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে রাজ্যের সাধারন মানুষও বলছেন করোনার ক্রাইসিস সামলাতে রাজ্য সরকারের বিড়ম্বনা আর আর ব্যর্থতা এখন সাদা চোখে ধরা পড়ছে৷

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.