Header Ads

দায়িত্বজ্ঞানহীনতার শাস্তি, রাজ্যের প্রথম করোনা-আক্রান্তর বাবার সদস্যপদ খারিজ করল IMA

নজরবন্দি ব্যুরোঃ এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানে ইংল্যান্ড থেকে রবিবার শহরে ফিরেছিলেন শহরের প্রথম করোনা আক্রান্ত যুবক।যুবকের মা অরুনিমা দে নবান্নের উচ্চপদস্থ আমলা, বাবা ডাক্তার। দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্য এই রাজ্যের প্রথম করোনা-আক্রান্ত তরুণের বাবার সদস্যপদ খারিজ করল ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন। প্রসঙ্গত, ইংল্যান্ড থেকে ফেরার পর বিমান বন্দরে কোন লক্ষন না পেলেও যুবক কে ডাক্তাররা পরামর্শ দিয়েছিলেন কিছুদিন গৃহবন্দি থাকার।
কিন্তু ডাক্তারদের কথায় পাত্তা দেননি যুবকের পরিবার। ফেরার পর নবান্নের উচ্চ পদস্থ আমলা মায়ের সাথে ঘুরে বেড়িয়েছেন তিনি। গিয়েছেন একটি সরকারি অফিসেও।
প্রশ্ন উঠছে টালিগঞ্জের বাসিন্দা শিক্ষিত পরিবারের এই ছেলের এহেন আচরন কেন? আমলার ছেলে বলে রোগকেও থোড়াই কেয়ার? প্রভাবশালীরা কি রোগেরও উর্দ্ধে? আর শিক্ষিত মানুষ হয়ে এহেন আচরনের জন্যেই প্রথমবার করোনা ছড়াল কলকাতায়। গত ১৫ই মার্চ লণ্ডন থেকে ফেরার পর ১৮ বছর বয়সী যুবক ডাক্তারদের নির্দেশ না মেনে ঘুরে বেড়িয়েছে যেখানে শেখানে। পার্টি করেছে পার্ক স্ট্রিটে! শপিং মলে ঘুরেছেন!  কতজন সংক্রামিত হতে পারেন এই আশঙ্কায় ঘুম উড়েছে রাজ্যের স্বাস্থ দফতরের।
এখন পর্যন্ত যা হিসেব তাতে এই যুবকের মাধ্যমে করোনা সংক্রামিত হতে পারে কমপক্ষে ১৫০ জনের মধ্যে। আশঙ্কা রয়েছে শিশুদেরও আক্রান্ত হওয়ার।
খবর পাওয়া গেছে,
যুবকের মা সোমবার নবান্নে ঢুকে লিফটে চেপে ওঠেন তেরোতলায়। তারপর স্বরাষ্ট্রসচিবের ব্যক্তিগত সচিবের ঘরে নথির ফোটোকপি করান এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আধ ঘণ্টা বৈঠক করেন। এরপর তিনি যান মহাকরণে এবং বৈঠক করেন।
যুবকের বাবা পেশায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ, সোমবার লণ্ডন থেকে ফেরা ছেলের সাথে সময় কাটান এবং কৃষ্ণনগর পুরোসভার অফিসে যান। বাড়িতে এবং সরকারি চেম্বারে একাধিক রুগীও দেখেন শিশু বিশেষজ্ঞ। মঙ্গলবার বিকেলে প্রশাসনিক বৈঠক সারেন এক জেলা আধিকারিকের সাথে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সোম আর মঙ্গলবার তিনি পুরসভায় বিকেল পর্যন্ত ছিলেন। পাশাপাশি সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে প্রাইভেট চেম্বারে বেশ কয়েকটি শিশুকে দেখেছেন। আর রাতে সদর হাসপাতাল মোড়ে গিয়ে বন্ধুদের সাথে জমিয়ে আড্ডা দিয়েছেন!! অন্যদিকে আক্রান্ত যুবক যে প্লেনে এসেছিলেন সেই প্লেনে ছিলেন ৭০ জন যাত্রী সহ ৭ জন কর্মী। আছেন গাড়ির ড্রাইভার সহ তাঁর পরিবার।

অর্থাৎ একাধিক শিশু সহ অন্তত ১৫০ জনের আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা।
এই ব্যাপারে দারুন চটেছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তিনি বলেছেন ‘‘রাজ্যে আইন জারি করেছি। যাঁরা বিদেশ থেকে আসছেন, প্রত্যেকের কাছে অনুরোধ ভিআইপি-এলআইপি মনোভাবের জায়গা নেই। কাণ্ডজ্ঞানহীনের মতো ঘুরে বেড়িয়ে অনেক লোকের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়া হল। আমার বাড়িতে যা নিয়ম, আপনার বাড়িতেও একই নিয়ম হবে।’’ ‘‘বিদেশ থেকে এসে শপিং মল, পার্কে ঘুরে এলাম। কারণ, আমার পরিবারের কেউ খুব প্রভাবশালী। তাই পরীক্ষা করালাম না! ইউকে থেকে করোনা নিয়ে এলেন কলকাতায়। আমার রোগ যাতে না-ছড়ায়, কেন তা দেখব না? ডাক্তার বলার পরেও ঘুরে বেড়িয়েছে। দায়িত্বজ্ঞানহীন কাজ হলে সরকার ব্যবস্থা নেবে।’’

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.