LIC-র বিলগ্নিকরনে বাড়ছে অসন্তোষ; সাধারনের স্বার্থ কি আগের মত সুরক্ষিত থাকবে? #SpecialArticle
অরুনাভ সেনঃ দেশের অর্থনীতির এখন যা অবস্থা তাতে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং বাজারে নগদের জোগান বাড়ানোর জন্য সরকারকে কোষাগার ভরাতেই হবে।কারন অন্যভাবে অর্থনীতির ঝিমুনি কাটানোর দক্ষ লোক বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারে নেই,অথবা যারা পারতেন তাদের মতামত গ্রহন করার মানসিকতা এই সরকারের নেই৷আর সেই জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ বা আংশিক বেসরকারিকরণ ছাড়া সেই অর্থে আর কোনও বিকল্প রাস্তা মোদি সরকারের হাতে নেই। কোন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা? অবশ্যই লাভজনক। যে সংস্থা ধুঁকছে, তাকে বিক্রি করলে সরকারের টার্গেট পূরণ হওয়া অসম্ভব৷অর্থাৎ হাতটা সেই লাভজনক রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের দিকে ঘুরবে সেটা বোঝার জন্য অর্থনীতির পন্ডিত হওয়ার প্রয়োজন নেই৷সাধারন মানুষ সহজেই বুঝে যাবেন৷কেন্দ্রে দ্বিতীয়বার ক্ষমতায় আসার পরেই বিলগ্নিকরণের পথে পা বাড়িয়েছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।সেই পথ ধরে এ বারের বাজেট ভাষণে দেশের বৃহত্তম বিমা সংস্থা ভারতীয় জীবন বিমা নগমে (LICI) নিজের অংশিদারিত্ব বিক্রি করে প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
IPO-র মাধ্যমে সরকার LICI-তে নিজের অংশিদারিত্ব বিক্রি করবে। আর এরপরই বিভিন্ন মহলে স্বাভাবিক ভাবে শুরু হয়েছে সমালোচনা৷দেশের মানুষের আর্থিক নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশংকা করে প্রতিবাদে যেমন সরব হয়েছেন সাধারন মানুষ,তেমনই সরব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে বাম নেতৃত্ব৷ এই প্রস্তাব ঘোষণার পরপরই ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের সরকারি মালিকানার বিষয়ে এবং কোটি কোটি মানুষের আস্থার জায়গায় প্রশ্ন চিহ্ন উঠে গিয়েছে৷ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের ভিত এতটাই সুদৃঢ় যে বিমা শিল্পের বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়ার দীর্ঘ ২০ বছর পর, ২৩ টি বেসরকারি কোম্পানীর সঙ্গে লড়াই করে বীমা বাজারের ৭০ শতাংশের বেশি অধিকারে রাখতে সক্ষম হয়েছে এলআইসি৷
অর্থাৎ দেশের মানুষের আস্থা আর বিশ্বাসের প্রতীক হয়ে আছে এই সরকারি সংস্থা৷আর সেই জায়গাটি ক্যাশ করতে চাইছে মোদি সরকার৷কারন তারা জানে অলাভজনক সংস্থার শেয়ার বিক্রি করলে সেই মুনফা উঠবে না৷কোষাগার ভর্তি হবে না৷অতএব মানুষের বিশ্বাস,আস্থা যে সংস্থার প্রতি অটুট সেই লাভজনক সংস্থার শেয়ার বিক্রিই বুদ্ধিমানের কাজ৷কেবল এলআইসির কর্মীরা নন,এজেন্টরা নন,প্রশ্ন তুলছেন সাধারন মানুষ, তাদের কষ্টার্জিত অর্থের যে সুরক্ষা ভারতীয় জীবন বিমা নিগম এতদিন দিয়ে এসেছে এবং ভারতীয় জনমানসে এক ভরসার জায়গা করে নিয়েছে, তার ভবিষ্যৎ কী হবে?এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা নরেন্দ্র মোদি সরকারের নেই৷বরং তারা রাষ্ট্রায়ত্ব লাভজনক সংস্থার সরকারি অংশিদারিত্ব বিক্রি করে শটকার্ট রাস্তায় বাঁচার পথ দেখছে৷কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের ঘোষণা অনুযায়ী, খুব শিগগিরই শেয়ার বাজারে নথিভুক্ত হতে চলেছে এলআইসি। এতদিন এলআইসি-র একশো শতাংশ অংশীদারিত্বই ছিল ভারত সরকারের হাতে। এবার তার একাংশ আমজনতার কেনার জন্য শেয়ার বাজারে ছাড়বে সরকার। যার ফলে সরকারের ঘরে আসবে বিপুল পরিমাণ অর্থ। কিন্তু সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এলআইসি নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন সংস্থার পলিসি হোল্ডার-রা। সবার মনেই প্রশ্ন, এলআইসি-তে বিনিয়োগ করা অর্থ নিরাপদ থাকল তো? কারণ এতদিন এলআইসি-তে কেউ পলিসি করলে তার বিনিয়োগ করা অর্থ এবং সেই পলিসিতে এলআইসি-র ঘোষিত বোনাস ফেরত দেওয়ার 'গ্যারান্টি' দিত সরকার। এর জন্য আইনও রয়েছে। প্রশ্ন আরও উঠছে, এলআইসি-র বিলগ্নিকরণের সিদ্ধান্তের পর কি সেই সুবিধে পাবেন পলিসি হোল্ডাররা? মোট কথা, এলআইসি-র বিলগ্নিকরণের প্রভাব সংস্থার পলিসি হোল্ডার-দের উপরে কতটা বিরূপ প্রভাব পড়বে?
সরকারের ঘোষনাগুলি হল
কেন্দ্রের হাতে থাকা এলআইসির পুরো ১০০% অংশীদারির একাংশ বিক্রি করা হবে। এ জন্য বাজারে প্রথমবার শেয়ার ছাড়বে (আইপিও) সরকার। • কবে তা ছাড়া হবে বা কতটা শেয়ার বেচা হবে, তা জানানো হয়নি।সংশয়,আশংকা,ভীতিটা বোধহয় তৈরি হয়েছে এখানেই৷ সাংবাদিক বৈঠকে এই সরকারকে বিঁধেছেন সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম,তিনি বলেছেন আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি মোদি সরকার। অর্থনীতি ধুঁকছে। তা স্বীকার করছেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। মেক ইন ইন্ডিয়া এখন বিশবাঁও জলে। তার উপর এবার এলআইসিরও বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটছে সরকার। ৩৮ কোটি মানুষের জীবন জড়িয়ে এলআইসির সঙ্গে। এখন সরকার জীবন বিমা নিগমের শেয়ার বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্তের ফলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মানুষের মনে। সরকারের কোনও নৈতিক অধিকার নেই এটা বেচে দেওয়ার৷ বামেরা এর বিরোধিতা করবে।অনিশ্চয়তার দোলাচলে ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের হাজার হাজার এজেন্টও। তাঁদের উদ্বেগের কারণ, এলআইসির কর্তৃত্ব যদি বেসরকারি হাতে বা শেয়ার হোল্ডারদের হাতে চলে যায়, তাহলে সংস্থার সুনাম এবং পারফরম্যান্স দুইই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷বেসরকারি লগ্নির জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর বাজার ধরার প্রতিযোগিতায় নেমেছিল অনেক বেসরকারি সংস্থা৷কিন্তু তাদের সঙ্গে লড়াই করে ভারতের সত্তর শতাংশের বেশী বিমা নিজেদের দখলে রেখেছে এলআইসি৷ অর্থাৎ বেসরকারি সংস্থাগুলোকে গুনে-গুনে দশ গোল দিয়েছে এলআইসি৷
কারনটা খুব ছোট্ট৷সঞ্চয়ে উৎসাহী, ভবিষ্যৎ নিরাপদ রাখতে সতর্ক সাধারণ মানুষের বিশ্বাস,ভরসা আর আস্থা শুধুমাত্র অটুট এলআইসির প্রতিপ যারা শেয়ার বাজারের ফাটকাবাজি বা মিউচুয়াল ফান্ডের বিপুল আর্থিক রিটার্ন, কোনও কিছুতেই আস্থা রাখতে পারেন না তারাই সরকারি মালিকানাধীন জীবন বিমা নিগমের ওপর প্রায় চোখ বন্ধ করে ভরসা করেন৷আজ সেই সংস্থার ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন৷একই রকম প্রশ্ন গ্রাহকের আর্থিক নিরাপত্তা,তেমনই প্রশ্ন এজেন্টদের আগামীদিনের ভবিষ্যতই বা কতটা সুরক্ষিত থাকবে! আশঙ্কা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না৷ সরকারি সিদ্ধান্তের বিরোধিতায় নেমেছে ন্যাশনাল ফেডারেশন অফ ইন্সুরেন্স ফিল্ড ওয়ার্কাস অফ ইন্ডিয়া (NFIFWI)।সাধারন মানুষকে সংস্থার পক্ষ থেকে তাদের আন্দোলনে পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ করা হয়েছে৷
কেন্দ্রের হাতে থাকা এলআইসির পুরো ১০০% অংশীদারির একাংশ বিক্রি করা হবে। এ জন্য বাজারে প্রথমবার শেয়ার ছাড়বে (আইপিও) সরকার। • কবে তা ছাড়া হবে বা কতটা শেয়ার বেচা হবে, তা জানানো হয়নি।সংশয়,আশংকা,ভীতিটা বোধহয় তৈরি হয়েছে এখানেই৷ সাংবাদিক বৈঠকে এই সরকারকে বিঁধেছেন সিপিএম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ মহম্মদ সেলিম,তিনি বলেছেন আর্থিক বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে পারেনি মোদি সরকার। অর্থনীতি ধুঁকছে। তা স্বীকার করছেন না কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। মেক ইন ইন্ডিয়া এখন বিশবাঁও জলে। তার উপর এবার এলআইসিরও বিলগ্নিকরণের পথে হাঁটছে সরকার। ৩৮ কোটি মানুষের জীবন জড়িয়ে এলআইসির সঙ্গে। এখন সরকার জীবন বিমা নিগমের শেয়ার বাজারে ছাড়ার সিদ্ধান্তের ফলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে মানুষের মনে। সরকারের কোনও নৈতিক অধিকার নেই এটা বেচে দেওয়ার৷ বামেরা এর বিরোধিতা করবে।অনিশ্চয়তার দোলাচলে ভারতীয় জীবন বিমা নিগমের হাজার হাজার এজেন্টও। তাঁদের উদ্বেগের কারণ, এলআইসির কর্তৃত্ব যদি বেসরকারি হাতে বা শেয়ার হোল্ডারদের হাতে চলে যায়, তাহলে সংস্থার সুনাম এবং পারফরম্যান্স দুইই ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে৷বেসরকারি লগ্নির জন্য উন্মুক্ত হয়ে যাওয়ার পর বাজার ধরার প্রতিযোগিতায় নেমেছিল অনেক বেসরকারি সংস্থা৷কিন্তু তাদের সঙ্গে লড়াই করে ভারতের সত্তর শতাংশের বেশী বিমা নিজেদের দখলে রেখেছে এলআইসি৷ অর্থাৎ বেসরকারি সংস্থাগুলোকে গুনে-গুনে দশ গোল দিয়েছে এলআইসি৷
No comments