Header Ads

প্যাড ম্যানের পড়ে, এবার নিজের ভাবনাকে বাস্তবে রূপান্তিত করল ঈশানা। নেটিজেনরা বললেন, ‘ওয়াও ঈশানা’।

নজরবন্দি ব্যুরো ঃ ঈশানা, বয়স ১৮ বছর মাত্র। সে কোয়েম্বাটুরের এক স্কুলপড়ুয়া। কিন্তু তার চিন্তাভাবনা একেবারেই এই বয়সি ছেলে মেয়েদের মতো নয়। সে শুধু চিন্তাই করেনি, তার চিন্তাকে বাস্তবে রূপান্তরিত করেছে। তার বয়সি বাকি ছেলে মেয়েরা যখন নিজেদের জগতে ব্যস্ত, ঘোরা-খাওয়া-সিনেমা-সেলফি নিয়ে ব্যস্ত তখন সে ঘটিয়ে ফেলেছে এক যুগান্তকারী ঘটনা। সুতির কাপড় দিয়ে পুনর্ব্যবহারযোগ্য স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরি করে ফেলেছে কোয়েম্বাটুরের স্কুলপড়ুয়া ঈশানা। ঈশানার বানানো এই ন্যাপকিন সম্পূর্ণ পরিবেশবান্ধব। সুতির পুনর্ব্যবহারযোগ্য যে ন্যাপকিন বাজারে পাওয়া যায়, তার চেয়ে অনেক সস্তাও বটে। আমাদের সমাজের মহিলারা আজকের দিনেও মেনস্ট্রুয়েশন নিয়ে কথা বলতে লজ্জা পায়। দোকানে গিয়ে অন্যান্য লোকের সামনে ন্যাপকিন কিনতে লজ্জা বোধ করে।
 মহিলাদের মেনস্ট্রুয়েশন কোন লজ্জার কথা নয়, আর এর সাথে কোন কুসংস্কারও মানুষের মনে থাকা উচিত নয়। কিন্তু মহিলারাই হয়ত চায় না এই সমস্ত কুসংস্কার থেকে বেরিয়ে মাথা উচু করে বাঁচতে। সমাজ হয়ত অনেক উন্নতি করেছে কিন্তু মানুষের চিন্তাধারার উন্নতি কোন একটা জায়গায় গিয়ে আটকে গেছে। সেই সমাজেরই এই স্কুলপড়ুয়া স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরী করে ফেলেছে। বাজার থেকে কেনা চলতি ব্র্যান্ডের সস্তা ন্যাপকিন ব্যবহার করে, সংক্রমণে আক্রান্ত হয় সে। সমস্যার মুখে পড়তে হয় তাকে। কোনও বিকল্প খুঁজে পাচ্ছিল না সে। প্রতি মাসে একই সমস্যার মুখে পড়ে সুতির কাপড় ব্যবহার করতে বাধ্য হয় মেনস্ট্রুয়েশনের সময়ে। তার পড়ে ঈশানার মাথায় এমন একটি ভাবনা জাগে। ঈশানা প্রথমে জোগাড় করে ফেলে একটি সেলাই মেশিন। তার পরে সুতির কাপড় আর সুতো কিনে কাজে লেগে যায়। নিজের আইডিয়া থেকেই বানিয়ে ফেলে স্যানিটারি ন্যাপকিন। তাতে না আছে কোনও কেমিক্যাল, না আছে কোনও পরিবেশ-বিরোধী কোনও জিনিস।
ঈশানা সংবাদমাধ্যমকে বলেছে, 'আমি সাধারণ ন্যাপকিন ব্যবহার করে খুব সমস্যায় পড়ি। ওটায় যে কেমিক্যাল থাকে, তা শরীরের জন্য ভাল নয়। তখনই আমার মাথায় আসে, ঘরোয়া পদ্ধতিতে সুতির কাপড় ব্যবহারের কথা। কিন্তু কাপড় ব্যবহারের অনেক অসুবিধা রয়েছে, পরিচ্ছন্নতারও সমস্যা হয়। সেই কারণে, কাপড়ের বদলে কাপড় দিয়ে তৈরি প্যাডই বানানো যায় কিনা ভাবি। দারুণ জিনিস হয়েছে এটা। আমি চাই, আরও অনেকে এই প্যাড বানাতে শিখুক এবং ব্যবহার করুক। এটা পুরোপুরি সুতির, বারবার ব্যবহার করা যায় এবং পরিবেশের কোনও ক্ষতিও করে না।' ঈশানার বানানো এই স্যানিটারি ন্যাপকিন যাঁরা ব্যবহার করেছেন, তাঁরাও ইতিমধ্যেই নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সকলেরই বক্তব্য, অত্যন্ত কার্যকরী এবং সুবিধাজনক জিনিস হাতে পেয়েছেন তাঁরা। দামেও অনেক সস্তা। ঘরোয়া পদ্ধতিতে তৈরি ন্যাপকিন ব্যবহার করে খুশি তাঁরা। এর আগে স্যানিটারি ন্যাপকিন তৈরী করে গোটা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করেন তামিলনাড়ুর কোয়েম্বাটুরের অরুণাচলম মুরুগানান্থম। তার মাথায় এই ভাবনা এসেছিল তার স্ত্রীর সমস্যা দেখে। পরবর্তি সময়ে তাকে নিয়ে একটি হিন্দি সিনেমাও তৈরী হয়, নাম প্যাড ম্যান। ইন্টারনেটে ঈশানার কীর্তির কথা প্রকাশ পেতেই তা ভাইরাল হয়ে গেছে। নেটিজেনরা কুর্নিশ করছেন সদ্যতরুণী এই মেয়েকে। উত্সাহ দেখাচ্ছেন এই কাজ শেখার জন্য এবং ব্যবহারের জন্য। এত কম বয়সে এত জরুরি একটা বিষয় যে সে ভেবে ফেলেছে, তাতেই মুগ্ধ সকলে। তাই তাঁরা বলছেন, 'ওয়াও ঈশানা।

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.