Header Ads

জ্বলছে বোর্নিও বণাঞ্চল, পাম তেলের লোভে।

নজরবন্দি ব্যুরো: বিগত দুসপ্তাহ ধরে ইন্দোনেশিয়ার বিস্তৃর্ণ বোর্নিও বণাঞ্চল ধিকিধিকি আগুনে জ্বলছে, পুড়ে চলেছে। মহীরুহ থেকে আগাছা বাদ পড়ছে না কিছুই। পাম তেলের লোভে উৎপাদকেরা পুড়িয়ে দিচ্ছে বিশ্বের প্রাচীনতম বৃষ্টি অরণ্য বোর্নিও বণাঞ্চল। ধোঁয়ায় মুখ ঢেকেছে সিঙ্গাপুর, ইন্দোনেশিয়ার আকাশ। পাম তেলের লোভে বোর্নিও বণাঞ্চল পোড়ানোর জেরে অস্তিত্ব বিপন্ন ওরাংওটাংদের। চকলেট থেকে শ্যাম্পু নানা খাদ্য ও প্রসাধনী দ্রব্যে পাম তেলে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার হয়ে থাকে। এই চাহিদা পূরণের জন্য যথেচ্ছ ধ্বংস লীলা শুরু হয়েছে বণাঞ্চলের আনাচে কানাচেতে। বড় বড় গাছে আগুন লাগিয়ে দিয়েই শেষ হচ্ছে না ধ্বংস খেলা। মাটির আগাছাতেও ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে আগুন। এরপর ওই জমিতেই পাম গাছ লাগিয়ে চলছে বে আইনিভাবে পাম চাষ। আর এর জেরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বিশ্বের বড় কার্বন সিঙ্ক। যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আগুন নেভানোর কাজ করে চলেছে দমকল বিভাগ। কিন্তু আগুন নিয়ন্ত্রণে এখনও ব্যর্থই তারা।
উল্টে আগুন নেভাতে গিয়ে বিষাক্ত ধোঁয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়ছেন দমকলকর্মীরা। স্থানীয় হাসপাতাল সূত্র অনুযায়ী, ইতিমধ্যেই শ্বাসকষ্ট জনিত সমস্যা নিয়ে হাসপাতালে এসেছে ৯,২০,০০০ মানুষ। বোর্ণিও বৃষ্টি অরণ্যে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার ফলে ১৫,০০০ প্রজাতিভুক্ত গাছ, ৪২০ প্রজাতির পাখি এবং ২২২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রজাতির অস্তিত্ব চরম সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। কিন্তু পাম তেলের কারবারি আর ব্যবসায়িক লোভে অসংখ্য প্রজাতির মাথা গোজার ঠাই পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। তাই পেটের টানে বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণীরা পাড়ি জমাচ্ছে জনবসতির দিকে। এই প্রক্রিয়া থেকে বাদ পড়ছে না ওরাংওটাংরা। পেটের টানে, খিদের জ্বালায় জনবসতিতে ঢুকতে গিয়ে প্রাণীরা চোরাশিকারিদের খপ্পড়ে পড়ে যাচ্ছে। ওরাংওটাং বাঁচাতে ইন্দোনেশিয়াতে কড়া আইন আছে, শাস্তি রয়েছে ৫ বছরের জেল। কিন্তু আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে চলছে প্রাকৃতিক সম্পদ লুঠ। সরকার জনশিক্ষার মাধ্যমে স্থানীয় মানুষদের সচেতন করে বনাঞ্চলে আগুন লাগানোর মতো বেআইনি কাজ থেকে বিরত রাখার চেষ্টা করে চলেছে। কিন্তু সরকারি এই প্রচেষ্টা হয়ে উঠেছে 'সেগুরে বালি'।

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.