Header Ads

ঐতিহ্যবাহী কৃষ্ণনাথ কলেজ আজ অবলুপ্তির সন্ধিক্ষণে।

নজরবন্দি ব্যুরো: বাংলা তথা ভারতের ইতিহাসে মুর্শিদাবাদ জেলা একটা বড় অংশ জুড়ে রয়েছে। ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির আমলে মুর্শিদাবাদ জেলা ভারতীয় দেশীয় রাজশক্তির অন্যতম পীঠস্থান হয়ে উঠেছিল। নবাবী আদব কায়দায় বিকশিত, সুসমৃদ্ধ মুর্শিদাবাদের ওপর দিয়ে কোম্পানি শাসনের অনেক ঝড় ঝাপ্টা বয়ে গিয়েছে। মোগলদের পতন আর বাংলা সুবা নবাব আলিবর্দি খার হাত ধরে সিরাজউদ্দৌলা হয়ে শেষ হয় ২৩ জুন, ১৭৫৭সালে পলাশীর আমবাগানে রক্তক্ষয়ী কাপুরুষোচিত ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের বলি হতে হতে। পলাশীর রণাঙ্গণের খলনায়ক রর্বাট ক্লাইভ, মীরজাফর, ঘসেটি বেগম, জগৎ শেঠেরা ইতিহাসের পাতায় আজও অমর হয়ে আছে ষড়যন্ত্রী হয়ে। এরও পরে ব্রিটিশ শাসিত ভারতে জেলা মুর্শিদাবাদ হয়ে উঠেছিল শিক্ষা সংস্কৃতির অন্যতম বড় কেন্দ্র। মুর্শিদাবাদের মাটি জন্ম দিয়েছিল নবাব সিরাজকে। তেমনিভাবেই জন্ম দিয়েছিল ভারতের সশস্ত্র বিপ্লবের কুশীলবদের।
 আর সমস্ত চর্চ্চা আবর্তিত হয়ে উঠেছিল মুর্শিদাবাদ জেলার কৃষ্ণনাথ কলেজ। মুর্শিদাবাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, শিক্ষা সবকিছুর সঙ্গে আষ্ঠেপিষ্ঠে জড়িয়ে রয়েছে কৃষ্ণনাথ কলেজ। কিন্তু ইতিহাসের ধারক ও বাহক মুর্শিদাবাদের কৃষ্ণনাথ কলেজ আজ অস্তিত্ব সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে। সম্প্রতি রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুর্শিদাবাদের কৃষ্ণনাথ কলেজকে ভেঙে গুঁড়িয়ে দিয়ে ওই স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। ফলে এই কলেজ আজ অবলুপ্তির পথে পা বাড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন মুর্শিদাবাদ জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা হবে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে ঐতিহ্য আর ইতিহাসের স্বাক্ষর বয়ে চলা কৃষ্ণনাথ কলেজকে গুঁড়িয়ে দিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। সরকারি এই সিদ্ধান্তের জেরে মুর্শিদাবাদবাসীর আবেগে আঘাত লেগেছে। এই প্রসঙ্গে মুর্শিদাবাদ জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তন্ময় ঘোষ বলেছেন, 'কৃষ্ণনাথ কলেজকে তুলে দেওয়ার চক্রান্তকে কোনভাবেই মেনে নেবে না মুর্শিদাবাদবাসী। বহরমপুরের কৃষ্ণনাথ কলেজ ইতিহাস খ্যাত। স্বাধীনতা পূর্ববর্তী অবিভক্ত বাংলার শিক্ষার পীঠস্থান ছিল এই কলেজ।
অনেক স্বাধীনতা সংগ্রামী ও বিপ্লবী এই কলেজে পঠনপাঠন করেছেন।' তিনি এও বলেছেন,'এই কলেজ জেলার অন্যতম শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির অজুহাতে এহেন ইতিহাস খ্যাত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে অবলুপ্ত করে সেই স্থানে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি করা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায়না।' তন্ময় ঘোষ জানিয়েছেন,'সংখ্যালঘু অধ্যুষিত মুর্শিদাবাদ জেলায় ৩ টি সাংসদ রয়েছে। আর রাজ্য বিধানসভায় ২২ বিধায়ক মুর্শিদাবাদ জেলা থেকে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। কিন্তু নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা ভোটে জিতে কেউ আর মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরি নিয়ে চেষ্টা করে না।' বিশিষ্ট এই শিক্ষাবিদ দাবি করেছেন, ' রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তবে বিশ্ববিদ্যালয় তৈরির কাজ সেভাবে এগোয় নি।' মুর্শিদাবাদ জেলায় কৃষ্ণনাথ কলেজকে অক্ষত রেখে অতিদ্রুত বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের কাজ শেষ করার ব্যাপারে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন জেলার বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ তন্ময় ঘোষ।
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.