নজরবন্দি ব্যুরোঃ যোগ্যতা অনুযায়ী বেতনের দাবীতে একাধিকবার আন্দোলনে নেমেছিলেন রাজ্যের 'বঞ্চিত' প্রাথমিক শিক্ষকরা। কিন্তু গত মাসের ২৪ তারিখের আন্দোলনের তীব্রতা ছিল মারাত্মক। সেদিন মিছিলের শেষে প্রাপ্তি লাঠি, গ্রেফতারি ও জলকামানের আঘাত! পিআরটি স্কেলের দাবীতে মহানগরের রাজপথের কার্যত দখল নিয়েছিলেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা।
রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ার থেকে শুরু হওয়া প্রায় ৪০ হাজার শিক্ষকের মিছিল স্রোত হয়ে আছড়ে পড়ে রানী রাসমনি এভিনিউ-তে। কিন্তু রাজনৈতিক কায়দায় প্রাথমিক শিক্ষকদের শান্তিপূর্ণ মিছিল রুখতে শিক্ষকদের ওপর জল কামান নিক্ষেপ করে পুলিশ, গার্ড ওয়াল দিয়ে ঘিরে ফেলা হয় পথ। জলকামানের আঘাতে আহত হন বহু শিক্ষক, অনেককে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় লালবাজার সেন্ট্রাল লকআপে। পরে শিক্ষামন্ত্রীর সাথে বৈঠকের সময় প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্যের কথা তুলে ধরে এবং এরাজ্যে প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন কাঠামো কি হওয়া উচিত সেটা জানায় শিক্ষক সংগঠন ইউইউপিটিডাব্লুএ। পাশাপাশি শিক্ষামন্ত্রীর কাছে সংগঠনের পক্ষে দাবি রাখা হয় পে-কমিশন ঘোষণার আগেই পিআরটি স্কেল ঘোষণা করতে হবে।
এছাড়া যে ১৪ জন শিক্ষককে 'অনৈতিক ভাবে' জেলার বাইরে বদলি করা হয়েছিল,তাদের আবার নিজের জেলায় ফিরিয়ে আনতে হবে এই দাবিও রাখা হয়। সংগঠন শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়ে দেয় "আগামী ১৫ দিনের মধ্যে যদি আমাদের এই দুটি দাবির স্বপক্ষে কোন সরকারি G.O না আসে,সারা রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা কিন্তু আবার রাস্তায় নামতে বাধ্য হবেন।"
এই বৈঠকের পর ১৫ দিনের সময়সীমা শেষ হলেও নির্বিকার শিক্ষাদফতর। এই অবস্থায় আবার আন্দোলনের পথে পা বাড়িয়েছেন রাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা। গত ১২ই জুলাই UUPTWA-র নেতৃত্বে বিকাশ ভবন অভিযান করেন অন্তত ৫০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক। পাশাপাশি যতক্ষন না PRT স্কেলের দাবি মানা হচ্ছে ততক্ষন অর্থাৎ অনির্দিষ্ট কালের জন্যে বিকাশ ভবনের সামনে ধর্নায় বসছেন তাঁরা, ১৩ই জুন থেকে চলছে অনশন। পেরিয়ে গেছে অনশনের ১১৯ ঘণ্টা, বর্ষার আবহে তীব্র দাবদাহকে উপেক্ষা করে অভুক্ত অশক্ত শরীরে অনশন করছেন রাজ্যের সমাজ গড়ার কারিগররা। এদিকে হুমকি ছাড়া কিছুই জোটেনি রাজ্য সরকারের তরফে, এদিন অনশনরত শিক্ষক অরুন কুমার দাস গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন, তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
No comments