নজরবন্দি ব্যুরোঃ বেতন বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বারবার সরব হয়েছেন রাজ্যের শিক্ষকরা। অন্যান্য রাজ্য গুলির তুলনায় এরাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা বিপুল হারে বেতন কম পান। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষকদের ক্ষোভ উত্তরোত্তর বেড়েছে। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও প্রাপ্য বেতন থেকে বঞ্চিত এরাজ্যের প্রাথমিক শিক্ষকরা৷ দাবি আদায়ের লক্ষ্যে মরিয়া শিক্ষকরা গর্জে উঠেছেন গোটা রাজ্য জুড়েই। সমস্ত ক্ষেত্রকে ব্যবহার করে রাজ্য সরকার এবং অর্থ দপ্তরকে বিপুল চাপে ফেলে ন্যায্য বেতন আদায় করে নেওয়াই এখন পাখির চোখ তাদের।
সম্প্রতি লোকসভা নির্বাচনে শিক্ষক-সরকারি কর্মীদের ভোটে প্রায় সব আসনে সরকারি দল পরাজিত হওয়ার পর সেই দাবি আরও বেড়েছে এবং কিছুটা নমনীয় হয়েছে সরকার। বেতন বাড়তে চলেছে শিক্ষকদের। সূত্র জানাচ্ছে ২৬০০ টাকা গ্রেড পে বেড়ে হচ্ছে ৩৩০০ টাকা জানিয়েছেন পার্থ বাবুর সচিব।যদিও ৩৩০০ অঙ্কের কোন গ্রেড পে নেই দাবি শিক্ষকদের। প্রসঙ্গত, কেন্দ্র সহ প্রায় সবকটি রাজ্যেই ষষ্ঠ বেতন কমিশন অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতনকাঠামো হল - ৯৩০০-৩৪৮০০ ও ৪২০০। অথচ কেবলমাত্র এ রাজ্যেই যা মাত্র ৫৪০০-২৫২০০ ও ২৬০০। এই ২৬০০টাকাই বেড়ে হচ্ছে ৩৩০০ টাকা! অর্থাৎ বেতন বাড়ছে একটা স্কেল।
উল্লেখ্য, ২০১০ সালে এনসিটিই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেয় প্রাথমিকে শিক্ষক হতে গেলে ন্যূনতম শিক্ষাগত যোগ্যতা হতে হবে ৫০ শতাংশ নম্বর সহ উচ্চমাধ্যমিক পাশ এবং পাশাপাশি দু’বছরের ডিএলএড প্রশিক্ষণ। জোর কদমে শুরু হয় নতুন বিজ্ঞপ্তির প্রয়োগ, ২০১২ সালে শিক্ষকদের যোগ্যতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া শুরু হয়। মাধ্যমিক পাশ করা বহু শিক্ষক-শিক্ষিকা চাকরি করতে করতেই উচ্চমাধ্যমিক পাশ করেন ৫০% বা ততোধিক নাম্বার নিয়ে৷ অন্যদিকে যে সমস্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উচ্চ মাধ্যমিকে ৫০ শতাংশ ছিল না তাঁরা পুনরায় পরীক্ষা দেন এবং ডিএলএড সহ সরকারের সব শর্ত পূরন করেন।
কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় বেতন কাঠামো নিয়ে!NCTE এর নিয়মবলে সেই কবে থেকেই শিক্ষকদের যোগ্যতা হয়ে গেছে সর্বভারতীয় মানের। অর্থাৎ উচ্চমাধ্যমিক এ ৫০% নম্বর ও ২ বছরের ডিএলএড। অথচ বেতন পাচ্ছে মাধ্যমিক যোগ্যতার। এমনকি সরকারি বেতন পোর্টালেও তাদের যোগ্যতা করে রাখা হয়েছে মাধ্যমিক। অন্যদিকে UUPTWA-র ৮ সদস্যের প্রতিনিধি দল আজ বিধান সভায় নিজেদের পিআরটি স্কেলের দাবি পেশ করে। বিধানসভায় প্রতিটি রাজনৈতিক দলের বিধায়কদের কাছে দাবি জানায় তাঁরা। সংগঠনের সভাপতি সন্দীপ ঘোষ এবং সম্পাদিকা পৃথা বিশ্বাস জানিয়েছেন "প্রায় ২৫০ র উপর বিধায়ক এবং মন্ত্রীদের হাতে সরাসরি আমাদের দাবিগুলি পেশ করলাম। ভালো লাগল শাসকদলের অনেক মন্ত্রী এবং বিধায়ক আমাদের দাবির যুক্তি মেনে নিলেন। বিধানসভা থেকে বেরোনোর সময় জানলাম সরকার আমাদের দাবির কিছুটা মান্যতা দিয়ে সামান্য বেতন বাড়ানোর বিষয় ঘোষণা করবেন। আমাদের সংগঠন পরিষ্কার জানাচ্ছে , যতক্ষণ অবধি না আমরা সরকারি কোন G.O পাচ্ছি এবং আমাদের দাবিমত বেতন বৃদ্ধি হচ্ছে ২৪শে জুনের মহামিছিল হচ্ছেই।
No comments