Header Ads

ঘরে ফিরলো পুরুলিয়ার সোনার ছেলে শুভজিৎ



নজরবন্দিঃ  শনিবার সকালে পুরুলিয়া শহরের দুলমি এলাকার বাড়িতে ফিরে এলো কফিনবন্দি শুভজিৎ সেন। ইন্ডিয়ান সায়েন্টিফিক এক্সপেডিশন টু অ্যান্টার্কটিকার ৩৭তম অভিযাত্রী দলে ছাত্র দের প্রতিনিধিত্ব করতেন বছর পঁচিশের ওই যুবক। কেন্দ্রীয়  সংস্থার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিল, ২৬ মার্চ বিকেলে মেরুপ্রদেশে কাজ করার সময়ে দুর্ঘটনায় চোট পান শুভজিৎ। পরের দিন তাঁর মৃত্যু হয়।

গত বছর কালীপুজোর সময়ে উচ্চ শিক্ষার জন্য পুরুলিয়া ছাড়তে হয়েছিল ভূতত্ত্বের কৃতী ছাত্র শুভজিৎ কে। এপ্রিলে ফেরার কথা ছিল তাঁর। ফিরলেন তিনি, তবে কফিনে বন্দি হয়ে। এপ্রিলের  ১৩ তারিখ তাঁর জন্মদিন। মাসের শেষে দাদা শুভঙ্করের বিয়েও ঠিক হয়েছিল। কিন্তু পুরো এপ্রিল জুড়ে সেন পরিবারের উপর দিয়ে ঝড় বয়ে গিয়েছে। ভেঙে গিয়েছে স্বপ্নউড়ানের রথ। আর সময় এগনোর সাথে সাথেই বাড়ির ছোট ছেলেটির দেহ বন্দর ছুঁয়ে ছুঁয়ে বাড়ির পথে এগিয়েছে। শুভজিতের আত্মীয় কৌশিক সেন গোয়ার ন্যাশন্যাল সেন্টার ফর অ্যান্টার্কটিক ওশান এন্ড রিসার্চ’-এর বিজ্ঞানী। ওই সংস্থাই মেরু চালায় । কৌশিক জানান, গত ১২ এপ্রিল দক্ষিণ মেরুপ্রদেশে ভারতীয় ক্যাম্প মৈত্রীথেকে শুভজিতের দেহ রওনা হয়। ২২ এপ্রিল পৌঁছয় দক্ষিণ আফ্রিকার কেপটাউনে। সেখানে গিয়েছিলেন কৌশিকবাবু। ময়নাতদন্তের কাজ সেরে দক্ষিণ আফ্রিকা সরকারের বিধি মোতাবেক ছাড়পত্র পেতে মে-র ২ তারিখ হয়ে গিয়েছিল। ৩ মে রাতের উড়ানে দুবাই হয়ে ৪ মে সন্ধ্যায় কলকাতায় পৌঁছয় শুভজিতের কফিন।

শনিবার অ্যাম্বুল্যান্সে দেহ পুরুলিয়ার বাড়িতে এসে পৌঁছয়। কান্নায় ভেঙে পড়েন শুভজিতের বাবা দিলীপ সেন, মা মুক্তা সেন ও আত্মীয় পরিজনেরা। ভিড় করেছিলেন শহরের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষজন। সবারই চোখে জল।কারণ প্রাণোচ্ছল, হাসিখুশি, জনপ্রিয় শুভজিৎ যে আর ফিরে আসবে না। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য পাড়ার মাঠে কিছু ক্ষণের জন্য রাখা হয় কফিন। এসেছিলেন বিভাস দাস, কান্সিলর মৌসুমী ঘোষ জেলা যুব তৃণমূল সভাপতি সুশান্ত মাহাতো। শুভজিতের মামা নিতাই কুণ্ডু বলেন, ‘‘যাবার আগে দেখা করে গিয়েছিল। তখনকার সেই মুখটাই আজ বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠছে।’’ কৌশিকবাবু জানান, ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা গিয়েছে, ঘাড়ের কাছে মেরুদণ্ডে আঘাত লেগে শুভজিতের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা ফরেন্সিক রিপোর্টের জন্য আবেদন করেছেন। তারপরে মৃত্যুর কারণ পরিষ্কার হবে।

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.