Header Ads

আসল লক্ষ্য ২০১৯, প্রথমবার দেশের প্রধানমন্ত্রী হতেই পারেন এক বাঙালি! নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!!


অর্ক সানা, সম্পাদক(নজরবন্দি): গতকাল দিনভোর খবরের শিরোনামে ছিল ভোট সন্ত্রাস! হিংসার ছবি। কিন্তু তার মধ্যেই একটা খবর ছাপ ফেলেছিল জনমানসে সেটা হল, আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূলের প্রচারের মুখ হচ্ছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সার্বিক উন্নয়ন কে হাতিয়ার করে তৃণমূলকে জেতানোর দায়িত্ব দলের দুই যুব নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শুভেন্দু অধিকারী-র ওপর। বিরোধীরা প্রচার করছেন আসলে পালিয়ে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! কিন্তু বাস্তব কি তাই? বাস্তব বলছে অন্যরকম। আসলে তৃণমূল তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লক্ষ্য মিশন ২০১৯। জাতীয় রাজনীতিতে ঘাসফুলের আধিপত্য কায়েম করার জন্যে নতুন রনকৌশল নিয়েছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, এই রণকৌশলের প্রথম ধাপ হল কোন দলের সাথে জোট না করা। বিশেষত কংগ্রেস কে বঙ্গে কার্যত একঘরে করেদিয়ে লোকসভার প্রায় সব কটি আসন দখল করাই উদ্দেশ্য। সবকটি আসনে চোখ থাকলেও তৃণমূল নেত্রী জয় নিশ্চিত করতে চান অন্তত ৪০ টি আসনে। এবং এখন পর্যন্ত তেমন কোন অঙ্ক দেখা যাচ্ছেনা যাতে তৃণমূলের আসন ৪০ এর নিচে নামতে পারে।

অন্যদিকে মোদী বিরোধিতায় রাহুলের কাছাকাছি এসেছেন মমতা। প্রদেশ কংগ্রেসের সঙ্গে কাঁচামিঠে সম্পর্ক থাকলেও সোনিয়া গান্ধীর সাথে মমতা বোন্দোপাধ্যায়ের সখ্যতা সুবিদিত। আর রাজ্যে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করলে অন্তত ৮ - ১০ টা আসন ছাড়তে হবে কংগ্রেস কে সেক্ষেত্রে শক্তিশালী হবে কংগ্রেস আর লক্ষ চ্যুতি হবে তৃণমূলের, তাই একলা চলোরে! জোট, সমর্থন যা হওয়ার তা ভোটের রেজাল্ট বেরোনার পরেই হবে। এই মুহুর্তে দেশের সাংসদদের সংখ্যায় ভিত্তিতে  মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল রয়েছে তৃতীয় পজিশনে। আর রণনীতি অনুযায়ী ৪০ টি আসন পেলে দেশের মধ্যে তৃতীয় শক্তি হিসেবে লোকসভাতেও উঠে আসবে তৃণমূল। বিজেপি বিরোধিতায় কংগ্রেসের ঠিক পরেই। রাহুল গান্ধীর প্রধানমন্ত্রীত্ব অথবা কংগ্রেস কে ক্ষমতায় আসতে গেলে নিশ্চিত ভাবে সাহায্য লাগবে তৃণমূলের। কারন কংগ্রেসের পক্ষে একক ভাবে ২৭২ ম্যাজিক টাচ করা সম্ভব নয়। অন্যদিকে বিজেপি একক ভাবে ২০১৯ এ সরকার গড়ে ফেলবে সেই অবস্থা এখন নেই। হয় এনডিএ না হউ ইউপিএ। ক্ষমতায় আসবে এই দুই জোটের কেউ। যাই হোক না কেন বিজেপি বিরোধী প্রথম সারির নেত্রী হয়ে ওঠা অনেক সহজ হবে তৃণমূল নেত্রীর।আর রাজ্যে যেটাকে বিজেপি উত্থান বলে দেখানো হচ্ছে তা নিশ্চিত ভাবে বাম ভোটব্যাঙ্ক থেকে ভেঙে আসা সমর্থক, নেতা বা কর্মী। এতে লাভ হচ্ছে তৃণমূলের, কারন রাজ্যে কংগ্রেসের দৈন্য দসা, বামেদের যদিও কিছুটা ছিল তা বিজেপি ঘেঁষা হতে শুরু করেছে রাজ্য জুড়ে। ফলে বিরোধী ভোট তিন ভাগ হচ্ছে আর জয়ের মার্জীন উত্তোরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে তৃণমূলের।"


মুকুল রায় ফ্যাক্টর কাজ করলে নিশ্চিত ভাবে বিজেপির ভোট বাড়ার পাশাপাশি ভোট কমত তৃণমূলের। কিন্তু বিগত উপনির্বাচনগুলোতে তা হল কই? পরিসংখ্যান বলছে বিজেপির ভোট বেড়েছে বহুগুন কিন্তু তৃণমূলের কমেছে কি? কমেছে বামেদের। বাম ভোটটাই ক্রমাগত সিফট করছে রামে! এতে অতিরিক্ত সুবিধা পাচ্ছে তৃণমূল।
লোকসভা আর পঞ্চায়েত নির্বাচনের মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত, লোকসভায় "রাস্তায় উন্নয়ন" দাঁড়িয়ে না থাকলেও বিরোধী শূন্য হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু কিভাবে?
দার্জিলিং এর কথায় আসাযাক... দার্জিলিং-এ বিমল গুরুং ফ্যাক্টর ছিলেন এখনো আছেন তা অস্বীকার করা যায়কি? বিমল গুরুং কে চাপে রেখে বিনয় তামাং এর ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছেন কৌশলী মমতা। তবে বিমল কে একেবারে খরচের খাতায় ফেলে দেননি তার প্রমাণ সিআইডি চার্জশিট। অমিতাভ মালিকের মৃত্যুর পর এমন হাওয়া উঠেছিল যাতে মনে হচ্ছিল এই বুঝি বিমল গুরুঙ্গের এনকাউন্টার করে দিল পুলিশ। অমিতাভের স্ত্রী বিউটি তো দাবী করেই ছিলেন তাকে কোন এক সিনিয়ার পুলিশ অফিসার কথা দিয়েছেন বিমল কে এনকাউন্টার করা হবে! কিন্তু বাস্তব বলছে এনকাউন্টার তো অনেক দুরের কথা গ্রেফতারই হননি বিমল, সিআইডি চার্জশিট পর্যন্ত দেয়নি। এর পরেও পাহাড়ে ঘাসফুল ফোটার জন্যে জমি তৈরি হয়নি বলবেন কোন নিন্দুকে?? যদি এমন হয় বিমল দার্জিলিং থেকে লোকসভায় তৃণমূলের প্রার্থী! রাজনীতিতে কিছুই অবাস্তব নয়।

মুর্শিদাবাদ, কংগ্রেস বলা ভাল অধীরের গড়, সেই গড়ে ইতিমধ্যেই বেশ বড় ফাটল ধরেছে। সে ফাটল মেরামত করার মত যন্ত্রপাতি কংগ্রেসের নেই এই মুহুর্তে।বামেদের সমর্থন পেলে হয়ত অধীরবাবু জিতবেন কিন্তু মার্জীন যে অনেক কমবে তা বলাই বাহুল্য। প্রতিরোধ হতে পারে মৌসম বেনজির নুর আর আবু হাসেম খান চৌধুরীর আসনটিতে। তবে সেখানেও ভোট ভাগের খেলা চলবে। রায়গঞ্জ, সিপিআইএমের মহম্মদ সেলিম ভোট কাটাকাটির অঙ্কে খুব অল্প মার্জিনে হারিয়েছিলেন কংগ্রেসের দীপাকে। ধরা যাক এই আসনে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে ভোটে লড়লেন সেলিম আর অন্যদিকে দীপা, শুধু সিম্বল টা বদলে তৃণমূলের! হতেও তো পারে? হাওয়ায় কান পাতলে কানাঘুষো শোনা যায়। প্রিয়দা আর দীপার নিজস্ব ভোট ব্যাঙ্ক + তৃণমূল যা ভোট পাবে সেই ভোট ছাপিয়ে যাওয়া, বাম-কংগ্রেস বা বিজেপির পক্ষে সম্ভব নয়। বরং বিজেপি বামেদের ভোট কেটে তৃণমূলের মার্জিন বাড়িয়ে দেবে! 

তৃণমূল নেত্রী কদিন আগেই কোর কমিটির বৈঠকে খুব নির্দিষ্ট ভাবে বলেছেন "কেউ কারো কাজে নাক গলাবে না"। এই নাক গলানো ব্যাপারটা যদি সত্যিই বন্ধ করে সবাইকে একদল-একপ্রতীক এই দীক্ষায় দীক্ষিত করতে পারেন তাহলে আসানসোলেও তৃণমূলের ফিরে আসা শুধু সময়ের অপেক্ষা। 
কাজেই ২০১৯ লোক সভায় এরাজ্য রেকর্ড সৃষ্টি করে তৃণমূল কে ৪২ - ০ তে জেতাতে চলেছে সে সম্ভাবনা ক্রমশ প্রবল হচ্ছে ঠিকই কিন্তু সবকটা না হলেও হেসে খেলে ৩৮ টা আসন পাবেই তৃণমূল, অন্তত এখন পর্যন্ত যা পরিস্থিতি রয়েছে। সেটাকেই ৪০ এ নিয়ে যেতেচান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যের অজস্র তৃণমূল সমর্থকদের দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কে প্রধানমন্ত্রী করা হোক। কিন্তু সেই প্রত্যাশা পূরণ না হলেও রাহুল বা কংগ্রেসের ইউপিএ ৩ যদি গঠিত হয়, রাহুল গান্ধীর পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।  
সব শেষে একটা অনুরোধ তৃণমূল নেত্রীকে, ভোট লুঠের অভিযোগ ছাড়া যেন জয় পায় তৃণমূল সেদিকে লক্ষ্য রাখলে ভালো হয়। কারন মানুষের আশীর্বাদ টুকুই কাম্য, লুঠ নয়!! গনতন্ত্রের যেন গনহত্যা না হয়।
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.