Header Ads

মন কি বাত, বলেন প্রধানমন্ত্রী, শোনেন কি? মোদী ঝড় থামার স্পষ্ট ইঙ্গিত দিল উত্তরপ্রদেশ!

অর্ক সানা, সম্পাদক(নজরবন্দি): শুরুটা হয়েছিল গেরুয়া গড় তথা প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্নের গুজরাট থেকে, সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে যেখানে ১৫০টি আসন নিয়ে ক্ষমতায় আসার কথা ঘোষণা করেছিলেন বিজেপি সভাপতি সেখানে জিগ্নেস-হার্দিক-রাহুলের জুটি তাঁকে ৯৯টে থামিয়ে দিয়েছিল। বেশ কয়েকটা রাউণ্ড আবার বিজেপির থেকে আসন সংখ্যায় বেশি 'লিড' নিয়েছিল কংগ্রেস। বিজেপি সরকার গড়লেও হারেনি কংগ্রেস।

বরং ভুরু কুঁচকেছিলেন বিজেপি নেতারা। আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্যে বিজেপি বলতে বাধ্য হয় ২২ বছরের সরকার, আসন তো কিছু কমবেই। বাংলার নেতা সদ্য বিজেপিতে যোগ ডেওয়া মুকুল রায় পার্টি দিয়েছিলেন বিজেপির গুজরাত জয়ের জন্যে। যাই হোক বিজেপির জয় যাত্রা কিন্তু যারি থেকেছে সাম্প্রতিক নির্বাচনে ত্রিপুরায় বামেদের থেকে ২% ভোট কম পেলেও লাল রাজ্য বদলে গেছে গেরুয়ায়। মেঘালয়ে মাত্র ২ টি আসন জিতেই বিজেপি সরকারে।
ত্রিপুরায় জয়ের পরেই অতি উৎসাহী বিজেপি সমর্থকরা ভাঙেন লেনিন মূর্তি, ত্রিপুরার রাজ্যপাল তথাগত রায় - থেকে স্বামী - এরাজ্যে দিলীপ ঘোষ! সবার প্রচ্ছন্ন সমর্থন মূর্তি ভাঙার ঘটনা কে! দেশ জুড়ে ইকো হল, মূর্তি ভাঙার আওয়াজ বলে দিল অঘটন ঘটতে চলেছে!

পথ দেখাল রাজস্থান, বিজেপির শক্ত ঘাটি হিসেবে পরিচিত রাজস্থান। সেই রাজস্থানেই উপনির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়লো বিজেপি।রাজস্থানে উপনির্বাচনে তিনটি আসনে কংগ্রেস সবকটিতেই বিজেপিকে হারিয়েছে। এমনকি রাজস্থানের লোকাল বডি বাই-ইলেকশনে বিজেপিকে অনেক পেছনে ফেলে এগিয়ে গেল কংগ্রেস। রাজস্থানের ২১টি জেলায় জেলা পরিষদ সদস্য, পঞ্চায়েত সমিতি মেম্বার, নগর পালিকা ও নগর পরিষদ নির্বাচনের জন্য উপনির্বাচন হয়। সেখানে বেশিরভাগ জায়গায় দেখা গেছে বিজেপির কোনো চিহ্নই নেই। পঞ্চায়েত সমিতির নির্বাচনের ক্ষেত্রে ২১টি ওয়ার্ডের মধ্যে কংগ্রেস জিতেছে ১২টি ওয়ার্ডে, যেখানে বিজেপি জিতেছে মাত্র ৭টিতে।

৬টি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে কংগ্রেস পেয়েছে ৪টি আসন, বিজেপি মাত্র ১টি আসন। নগর পালিকা/নগর পরিষদ নির্বাচনের ক্ষেত্রেও ধুলোয় মিশে গেছে বিজেপি। কংগ্রেস পেয়েছে ৪টি আসন, বিজেপির আসন সংখ্যা ২। বিকানের জেলায় সবকটি আসন গেছে কংগ্রেসের দখলে! শুরু হয় শেষের। আজমির আর আলোয়ান কংগ্রেস জিতে ছিল গত লোকসভায়। মোট ২৫টার মধ্যেই ২৩ টায় বিজেপি! কিন্তু ২০১৯? ইঙ্গিত যা আছে তাতে ফলাফল উলটে যেতে পারে। অন্যদিকে বিজেপির নেতারা প্রায়শই বলে থাকেন আমরা ২১টা রাজ্যের ক্ষমতায়! এবার একটা চিত্র দেখা যাক এই ২১ টা রাজ্যের মধ্যে এমন সাতটি রাজ্য রয়েছে যার মোট লোকসভা আসন ২২টি!
সিকিম - ১টা
আসাম -১৩ টা
মেঘালয় - ২ টো
মানিপুর -১ টা
নাগাল্যান্ড - ১টা
অরুনাচল - ২ টো
ত্রিপুরা - ২ টো
মোট - ২২ টা





তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া গেল ২২ এ ২২টাই জিতল বিজেপি, তাতে আর লাভ কি? যেখানে তেলেগু দেশম পার্টি বেরিয়ে গেল এনডিএ থেকে, অন্ধ্রপ্রদেশে লোকসভা আসন ২৯ টা। ধাক্কা খেল বিজেপি, রাহুল গান্ধী চন্দ্রবাবু কে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ২০১৯ এ ক্ষমতায় এলে অন্ধ্রপ্রদেশের দাবি দাওয়া পূরন করবেন। টিডিপি-র দুজন মন্ত্রী ইস্তফা দিলেন মোদীর মন্ত্রীসভা থেকে। এখানেই শেষ নয় যে বামেদের দূরবীন দিয়ে খুঁজতে হয় সেই বামেদের কৃষক সংগঠন ১৮০ কিলোমিটার হেঁটে নাসিক থেকে পৌঁছাল মুম্বাই। ঘেরাও করল বিজেপি শাসিত মহারাষ্ট্রর বিধানসভা। ঋন মুকুব সহ কৃষকদের ১০০% দাবী মানতে বাধ্য হল বিজেপি সরকার। বামেদের কৃষক সংগঠনের পাশে দাঁড়াল বিজেপি বাদে সব দল, আকুন্ঠ সমর্থন কংগ্রেস-শিবসেনার!! হিন্দু-মুসলিম-শিখ সব সম্প্রদায়ের মানুষ বুলডোজার চালাল, না মূর্তিতে নয় সাম্প্রদায়িকতার বুকে!
মুম্বাইয়ের বিখ্যাত ডাব্বাওয়ালারা নিজের পয়সায় খাওয়ার দিয়ে গেল আন্দোলনকারীদের। মহারাষ্ট্রের আসন কত? ৪৮...! এছাড়াও পাঞ্জাবের লুধিয়ানা মিউনিশিপ্যালিটিতে মুছে গেছে বিজেপি।




আর এবার বিহার এবং উত্তরপ্রদেশের দুটি করে লোকসভা আসনেই বিজেপি পিছিয়ে শেষ করল। আরজেডির কাছে ২টি লোকসভা আসন এবং একটি বিধানসভা আসনে হেরে মাত্র একটি আসন জিতে কোনমতে মুখরক্ষা হয়েছে বিজেপির, তাছাড়া উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীর সাধের গোরক্ষপুর, যেখানে গত নির্বাচনে বিজেপি জিতেছিল ৩লক্ষেরও বেশি ভোটে এবার সেখানে ৫০ হাজারেরও বেশি ভোটে হারতে চলেছে বিজেপি! এই কেন্দ্রে জোট বেঁধে লড়েছে বহুজন সমাজবাদী পার্টি ও সমাজবাদী পার্টি। বসপা এই কেন্দ্র সপাকে ছেড়ে দিয়েছে। এদিকে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্রেও ৩লক্ষ মার্জিন ছাপিয়ে বিজেপিকে হারিয়ে সমাজবাদী পার্টি জিতেছে ৫৯৬১৩ ভোটে! ২০১৪ লোকসভা ভোটে ৮০টি আসনের মধ্যে বিজেপি এখানে ৭১টি জিতেছিল। ২০১৯ এ কটা হবে... ইঙ্গিত কিন্তু খারাপ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মনের কথা বলেন, শুনতে পান কি?
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.