Header Ads

বেআইনি বাঘের চিরকুটে চলছে দেদার বালিচুরি, চিরকুট মিলছে থানায়!

নজরবন্দি, পূর্ব মেদিনীপুরঃ অনুমতি রয়েছে মাত্র কয়েকটির। আদতে চলছে শতাধিক। রামনগর ২ ব্লকের দেপাল পঞ্চায়েতের পশ্চিমবাড়, কাদুয়া পঞ্চায়েতের কলাপুঞ্জা আর পানিরুল পঞ্চায়েতের দেবীদাসপুর, এই ৩ মৌজায় বালি চুরির হিড়িকে কার্যত বিপন্ন এলাকার বাস্তুতন্ত্র। অনুমতি রয়েছে মাত্র কয়েকটিতে। কিন্তু সেই অনুমতির তোয়াক্কা না করেই চলছে দেদার বালিচুরি।
১২০- ১৫০ টি ডাম্পার, ট্রাক দাঁড় করিয়ে রমরমিয়ে বালি তোলা চলে দিনের পর দিন। এমনকী যন্ত্র দিয়ে কাটা হচ্ছে বালি। দিনের আলোয় গ্রাম ছাড়িয়ে শহরের মধ্যে দিয়ে ট্রাক, ডাম্পারে করে সে সব পাচার হচ্ছে দেদার। এক এক জায়গায় বিশাল বিশাল গর্ত করে বালি চুরি হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, অসাধু বালি মাফিয়াদের সঙ্গে প্রশাসনের কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছেন বালি চুরি এবং সেই চুরিতে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার এক বিশেষ চক্রে। আর গোটা চক্রকেই প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে মদত জোগাচ্ছে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী মানুষ এবং আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে থাকা পুলিস।

যে সমস্ত গাড়ি গুলি বালি নিয়ে যাছে তাদের বেশীর ভাগের কাগজ পত্র ঠিক নেই। বালি তোলার প্রয়োজনীয় চালানও নেই। শুধু বাঘের স্ট্যাম্প দেওয়া একটা ছোট চিরকুট দেখালেই সহজেই মিলবে ট্রাকে বা ডাম্পারে বালি তুলে নিয়ে যাওয়ার অনুমতি। সেই চিরকুট দেখালে রাস্তায়ও ধরবে না পুলিস। কারণ, বালি চুরিতে প্রশাসনিক কোনও ছাড়পত্র না থাকলেও বাঘের স্ট্যাম্প দেওয়া কাগজে গাড়ির নম্বর লিখে এই নকল ছাড়পত্র বানিয়ে দিয়েছে রামনগর থানা। এই চিরকুটের জন্য থানায় প্রতিমাসে দিতে হয় হাজার টাকা। আর চিরকুট না থাকলেই হয় জরিমানা এবং নতুন চুক্তি। চিরকুটের মাধ্যমে এই সিস্টেম এতদিন চালাতেন ধর্ষণে অভিযুক্ত কনস্টেবল শেখ মোশারেফ ওরফে মুসা। এখন দায়িত্বে আছেন রামনগর থানার এ এস আই বিমলেন্দু দাস।
বালি গাড়ির চালকের অভিনয়ে ফোন করতেই বিমলেন্দুবাবু কার্যত বলেই ফেললেন, মুসার চিরকুটে আর হবে না। নতুন সিটেমে চলতে হলে থানায় গিয়ে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে। তবে বিষয়টি অস্বীকার করে রামনগর থানার ওসি সত্যজিৎ চাণক এবং কাঁথির অতিরিক্ত পুলিস সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।

অথচ বালিয়াড়ি থেকে বালি তোলার অনুমতি নিতে গেলে প্রথমে আবেদন জানাতে হয় জেলা ভূমি দপ্তরের রাজস্ব সংগ্রহ বিভাগে। দপ্তর ‘রয়্যালটি’র বিনিময়ে আবেদনকারীকে বৈধ ভাবে বালি তোলার অনুমতি দেবে। যার নির্দিষ্ট সময়সীমাও বেঁধে দেওয়া হয়। কোন গাড়িতে বালি বহন হবে, তাও আবেদনপত্রেই উল্লেখ করতে হয়। কারণ, বহন ক্ষমতার নিরিখে চালান দেওয়া হয়। কিন্তু এই তিন এলাকায় নিয়মের তোয়াক্কা না করে গোটা চক্রটিই কাজ নিজেদের স্বার্থে। যদিও রামনগর ২ ব্লক ভূমি আধিকারিক অভিজিৎ পালের দাবি, বেআইনি এই সব পন্থা রুখতে মাঝে মধ্যেই ধরপাকড় চলে। ফাইন বাবদ মোটা টাকাও আয় হয়। আবার চিরুনি অভিযান চালানো হবে।
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.