"তৃণমূল শুধু মুখেই স্বচ্ছতার কথা বলে", শাসক দলের 'অনৈতিক' কাণ্ডে সরব বামেরা।
জানা গিয়েছে, তৃণমূলের বালুরঘাট ব্লক সভাপতি বিপ্লব খাঁয়ের ছেলে প্রতীক খাঁ গত বছরের ডিসেম্বর মাস থেকে তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভায় ক্যাজুয়াল কর্মী হিসেবে যোগ দেন। প্রতীকবাবু পুরসভার মিড ডে মিল ও শিশু শিক্ষা দপ্তরে অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেন। তার বাড়ি বালুরঘাট শহরের চকভৃগু এলাকায়। অভিযোগ, প্রতীকবাবু প্রতিদিন বাড়ি থেকে পুরসভায় যাতায়াতের জন্য পুরসভার সরকারি গাড়ি ব্যবহার করেন। দিনের পর দিন একজন অস্থায়ী কর্মীর এইভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই রাজনৈতিক মহলে চরম চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আর এর পরেই পুরসভার বিরোধী দল বামেরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে তৃনমুলের ওই নেতার ছেলের বিরুদ্ধে সরকারি গাড়ি চড়ার ব্যাপারটি নিয়ে সরব হয়।
পুরসভার বিরোধী নেত্রী তথা বালুরঘাট পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান আরএসপি-র দলের মহিলা নেত্রী সুচেতা বিশ্বাস অভিযোগ জানিয়ে বলেন, কোনভাবেই একজন অস্থায়ী কর্মী নিজের যাতায়াতের জন্য এইভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করতে পারেন না। কিন্তু তৃণমূল জমানায় এরা কোন নিয়মের তোয়াক্কা করে না। তিনি আরও অভিযোগ জানিয়ে বলেন, "তৃণমূল স্বচ্ছতার কথা মুখে বলে শুনতে বেশ ভালই লাগে। এই তৃণমূল নেতার ছেলেকে কিভাবে এই অফিসে চাকরি পাইয়ে দেওয়া হল? স্বছতার মাধ্যমে না অস্বচ্ছতার মধ্যমে সেটা এবার তৃণমূল জানাক সবাইকে।" তিনি আর ও বলেন ওই কর্মী এমন কোন বড় পদে বা গুগুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন না যে তাকে বাড়ি থেকে সরকারি গাড়ি গিয়ে তুলে অফিসে নিয়ে আসবে। তিনি এর বিরুদ্ধে পুর কর্তৃপক্ষের জবাব চান। পাশাপাশি সরকারি গাড়ি ব্যবহার করার জন্য তার কাছ থেকে মাইনের টাকা থেকে টাকা কেটে নেওয়ারও দাবি জানান তিনি। অবিলম্বে এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিলে তারা আন্দোলনে নামবেন বলে হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে।
যদিও পুরসভার চেয়ারম্যান রাজেন শীল ড্যামেজ কন্ট্রোলে নেমে ওই কর্মীর অসুস্থতার দোহাই দিয়েছেন। রাজেনবাবু বলেন, ওই কর্মী অসুস্থ। তাই তাকে কয়েকদিন গাড়ি করে আনা হয়েছে। তাকে তখন পালটে প্রশ্ন করা হয় যে অন্য কোন কর্মী অসুস্থ থাকলে তাকে আনতে তো সরকারি গাড়ি তার বাড়ি যায় না। আর তা ছাড়া যার বিরুদ্ধে অভিযোগ তাকে তো দিব্যি সুস্থ ঘুরে ফিরে বেড়াতে দেখা যাচ্ছে। সে ক্ষেত্রে রাজেন বাবু এসব প্রশ্নের কোন জবাব দিতে রাজি নন। তার বক্তব্য একটাই। তিনি অসুস্থ ছিলেন জেনেই তাকে গাড়ি করে অফিসে আনা নেওয়া করা হয়। এদিকে অভিযুক্ত ওই কর্মী দাবি করেন, তার বিরুদ্ধে অহেতুক অভিযোগ এনে জলঘোলা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত কর্মী প্রতীকবাবু বলেন, আমি কয়েকদিন গাড়ি করে এসেছি ঠিকই। তবে এর পেছনে আমার বাবার কোন প্রভাব নেই। বাবার নাম জড়িয়ে রঙ চড়ানো হচ্ছে। সবটাই বামেদের রাজনীতি ছাড়া আর কিছু নয়। তিনি এরপরেই যোগ করেন, "আমি আর এই গাড়ি ব্যবহার করবো না।"
Loading...
কোন মন্তব্য নেই