Header Ads

শুধু ২০০৮ মডেল নয়, রাস্তায় নেমে তৃণমূল বিরোধী আন্দোলনে জোর দিক বিজেপি৷ অরুনাভ সেন

অরুনাভ সেনঃ যেকোন রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে জঙ্গি আন্দোলন আসলে বিরোধী রাজনৈতিক দলের জমিকে শক্তি করে৷বাম জমানায় সিঙ্গুর ও নন্দীগ্রাম নিয়ে আন্দোলন করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজনৈতিক জমি শক্ত করতে পেরেছিলেন,যার সুফল তৃণমূল পেয়েছিলো ২০০৮সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে৷আবার এটাও ঠিক ২০১১ সালের পর তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে জঙ্গি আন্দোলন করার অনেকগুলিই ক্ষেত্র ছিলো৷
চিটফান্ড কান্ড নিয়ে যদি বামপন্থীরা রাস্তায় নেমে সারা রাজ্য জুড়ে তেড়েফুঁড়ে আন্দোলন করতে পারত বলা যায় তাদের এমন দৈন্যদশা হতনা!অথবা বিজেপি তৃণমূল বিরোধী মানুষের ভরসা হয়ে উঠতে পারতনা এই রাজ্যে৷যদিও আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপি কতটা ভাল ফলাফল করতে পারবে সেই নিয়ে যতেষ্ট সন্দিহান রাজনৈতিক মহল!আদৌ কি তারা পারবে কোনও জেলা পরিষদ দখল করতে,যদি পারে তাহলে কিন্তু তৃণমূলকে ভবিষ্যতে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলবে বিজেপি,এবং লোকসভা ভোটে এই রাজ্যে নিশ্চিতভাবে বিজেপি ভাল ফলাফল করবে৷তবে তার জন্য পার হতে হবে অনেক চড়াই উৎরাই পথ৷




অনেকে বলছেন ২০০৮ মডেল নাকি অনুসরন করে ২০১৮-এর ভোটে কার্যকর করতে চাইছেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়৷অর্থাৎ যেভাবে তিনি ঘুঁটি সাজিয়েছিলেন ২০০৮ সালে,সেই একই ছকেই তৃণমূলকে হারাতে চান৷কিন্তু সেটি কি বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষিতে সম্ভব?অনেকের মতে ২০০৮ মডেল কার্যকর করতে গেলে যে ধরনের দক্ষ কর্মী প্রয়োজন তেমন কর্মীর যতেষ্ট অভাব আছে বিজেপিতে৷তাছাড়া তাদের জনসমর্থনের ভিত নিয়েও যতেষ্ট প্রশ্ন আছে৷বিজেপি এমনিতেই পঞ্চায়েতের মত স্থানীয় ভোট নিয়ে তেমন মাথা ঘামায় না,কিন্তু বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি ভিন্ন,২০১৯ লোকসভা ভোটে রাজ্য থেকে আসন বাড়াতে গেলে বা তাদের টার্গেট ২০-২২টা আসন পেতে গেলে পঞ্চায়েতে তৃণমূলকে ধাক্কা দিতেই হবে৷শুধুমাত্র মেরুকরনের রাজনীতি করে হয়ত সামান্য শতাংশ ভোট বাড়ানো যায়,কিন্তু তৃণমূলকে পঞ্চায়েতে ধাক্কা দিতে গেলে ইস্যুভিত্তিক জঙ্গি আন্দোলনে নামতেই হবে বিজেপিকে৷যদি বিজেপি নেতৃত্ব সেই কাজে সক্ষম হন তাহলে যেভাবে ২০০৮সালে বামফ্রন্টের হাত থেকে প্রায় ৫০% গ্রাম পঞ্চায়েত ছিনিয়ে নিয়ে তৃণমূল নাড়িয়ে দিয়েছিল বামেদের ৩১বছরের শক্ত ভিত,তার পুনরাবৃত্তি এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে সম্ভব৷আবার এটাও ঠিক সেই সময় তৃণমূলের রণকৌশল নিজের হাতে সাজিয়েছিলেন মুকুল রায়৷

কিন্তু ২০০৮ আর ২০১৮-এর মধ্যে অনেক ফারাক৷রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরাই বলছেন বামফ্রন্ট ভোট করতে দিত,বিশেষত বিরোধী রাজনৈতিক পরিষরের প্রয়োজনীয়তাকে তারা গুরুত্ব দিতেন,অন্যায় ভাবে কখনো দল ভাঙায়নি,পেশী বা অর্থের জোরে বিরোধীদের দখলে থাকা পঞ্চায়েত,পুরসভা,এমনকি বিধায়ক কেনাবেচা করেনি৷কিন্তু তৃণমূলের পক্ষে সবই সম্ভব৷তারা ক্ষমতা ধরে রাখতে সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে৷তাছাড়া ২০০৮ মডেল ২০১৮ তে কার্যকর করা কঠিন৷তখন বামফ্রন্ট নানা ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিল,সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের ধাক্কায় সিপিএমের মেরুদণ্ড দূর্বল হয়ে পড়েছিল৷কিন্তু তৃণমূলকে তেমন বেকায়দায় পড়তে হয়নি৷

অথচ অনেক ইস্যুই শাসকের বিরুদ্ধে ছিল,এখনও আছে,সেই ইস্যুগুলি নিয়ে বিজেপি যদি ঝাঁপিয়ে পড়ে,রাস্তায় নামে,মানুষের বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করতে পারে,যদি মানুষ বিশ্বাস করেন বিজেপিই পারবে তৃণমূলকে ধাক্কা দিতে তাহলে কিন্তু বিজেপি পঞ্চায়েত নির্বাচনেই তৃণমূলকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিতে পারে৷মুকুল রায় সহ বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্বকে বুঝতে হবে আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিজেপির ভাল ফলাফলের উপর নির্ভর করছে তারা এই রাজ্যে লোকসভায় কতটা ভাল ফল করবে,কিন্তু তার জন্য রাস্তায় নামতে হবে,শাসক বিরোধী আন্দোলনে আরও গতি আনতে হবে,মানুষের মনে বিশ্বাস জাগাতে হবে বিজেপি রাজ্যে পরিবর্তন আনতে পারে৷তবে সবটাই নির্ভর করবে বিজেপি নেতৃত্ব আগামীদিনে কিভাবে রাস্তায় নেমে তৃণমূলের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারবেন৷
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.