Header Ads

ধ্বস, চঞ্চল পাহাড়ি নদী আর হড়পা সবকিছু উপেক্ষা করে পরিসেবা অব্যাহত স্বাস্থ্য কর্মীদের!

হরিপদ পাল: বর্ষায় চঞ্চল পাহাড়ি ঝোড়া, ধ্বসে চলাচলের অযোগ্য পাহাড়ের রাস্তা। এরকম প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও বক্সা পহাড়ের বিভিন্ন জনপদে ঔষধ নিয়ে পৌছে যাচ্ছেন আলিপুরদুয়ার জেলার স্বাস্থ্য কর্মীরা। প্রত্যন্ত দূর্গম বক্সা পাহাড়ে তারা চলছেন পিঠে ভ্যাকসিন আর ওষুধের বাক্স,হাতে লাঠি নিয়ে। পাহাড়ি ঝোরার মধ্যে বোল্ডার পাশ কাটিয়ে এগিয়ে গিয়েছেন কয়েকজন স্বাস্থ্যকর্মী। আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের জনা কয়েক স্বাস্থ্যকর্মী ধসে যাওয়া রাস্তা, পাহাড়ি নদী আর হড়পা সবকিছুকে উপেক্ষা করেও বক্সা পাহাড়ে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দিচ্ছেন এভাবেই। পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামের শিশুদের টিকাকরণ থেকে জীবনদায়ী ওযুধ দেওয়া- সবই করছেন জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের এই কর্মীরা। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া সহ পতঙ্গবাহিত বিভিন্ন রোগের বিষয়ে গ্রামের মানুষকে সচেতন করছেন তাঁরা। স্বাস্থ্য আধিকারিক থেকে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্যকর্মীদের এই দায়িত্ববোধকে কুর্নিশ জানিয়েছেন।
আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকা আলিপুরদুয়ারের বক্সা পাহাড়ে পাহাড়ের লেপচাখা,চুনাভাটি,আদমা সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম আছে। আধুনিক সমাজের অধিকাংশ পরিসেবা সেখানে পৌঁছায়নি। বিশেষ করে এখানকার বাসিন্দারা স্বাস্থ্য পরিসেবা পেতে আজও ভগবানের উপরই ভরসা করেন। শীতের সময় পাহাড়ি পথ কিছুটা ঠিক থাকলেও বর্ষাকালে পাহাড় ভয়ংকর রূপ ধারণ করে। ইতিমধ্যেই দিনকয়েকের লাগাতার বৃষ্টিতে বক্সা পাহাড়ের বিভিন্ন এলাকায় বড় বড় ধস নেমেছে।একটি গ্রাম থেকে আরেকটি গ্রামের যোগাযোগও বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শিশু, বয়ষ্ক ও বিশেষ করে গর্ভবতীরা সবচেয়ে সমস্যায় পড়েছেন। অসুস্থদের স্থানীয়রাই মাচা তৈরি করে কাঁধে করে পাহাড় থেকে সমতলে নিয়ে আসচ্ছেন চিকিৎসার জন্য। অনেকেই চিকিৎসার অভাবে পাহাড় থেকে নামার রাস্তাতাতেই মারা যাচ্ছেন বলে বাসিন্দারা জানিয়েছেন। বক্সা পাহাড়ের এই ভয়াবহ ছবিটা মুছে দিতে এবার উদ্যোগ নিল আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের একটি বিশেষ টিম এই ভরা বর্ষাতেও দুর্গম পাহাড়ি পথ পেড়িয়ে পৌঁছে যাচ্ছেন বক্সা পাহাড়ে। পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীরা শিশু থেকে বয়ষ্ক, গর্ভবতী মহিলা ও রোগীদের নানা ধরনের চিকিৎসা পরিসেবা দিচ্ছেন। আলিপুরদুয়ারের ডেপুটি সিএমওএইচ–২ ডা: সুবর্ন গোস্বামী বলেন, ‘আলিপুরদুয়ার জেলায় বক্সাপাহাড় থেকে টোটো পাড়ার মতো এমন কিছু এলাকা আছে যেখানে এখনও তেমন সুযোগ সুবিধাই পৌঁছায়নি। বর্ষা নামলে ওই এলাকাগুলি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই বর্ষার সময় এলাকাগুলিতে নানা রোগভোগ ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু এই ভরা বর্ষাতেও এবার আমরা ওই এলাকা গুলিতে আমাদের স্বাস্থ্য পরিসেবা বজায় রেখেছি। বিশেষ করে বক্সা পাহাড়ের বিভিন্ন গ্রামে দুর্গম পথ পেরিয়ে আমাদের স্বাস্থ্যকর্মীরা এবার পৌঁছে যাচ্ছেন। স্বাস্থ্য কর্মীদের এই সংগ্রামের ছবিই আমি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেছি। আর তাতেই দেশ বিদেশের বহু মানুষ তাঁদের এই কাজকে কূর্নিশ জানিয়েছেন।’
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.