Header Ads

নিকটাত্মীয়ের মৃত্যু, অশান্তি অস্বস্তি বুকে নিয়েই চলে গেলেন মৃণাল দাঃ বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। #Exclusive

নজরবন্দি ব্যুরোঃ মৃণাল সেনের সৃষ্ট চলচ্চিত্র সাধারণের পৃথিবীকেই সেলুলয়েডে ঠাঁই দিয়েছিল। মধ্যবিত্ত সমাজ, তৎকালীন রাজনীতি, নক্সালপন্থা তাঁর চলচ্চিত্রের গ্রন্থনকে আঁটোসাঁটো করেছিল। বলার অপেক্ষা রাখে না, বামপন্থী ভাবধারায় বিশ্বাসী ছিলেন বিশ্ববরেণ্য এই পরিচালক।
প্রতি বছর মৃণাল বাবুর জন্নদিনে তাঁর সাথে দেখা করতে তাঁর বাড়িতে যেতে ভুলতেন না রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিআইএম নেতা বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। তাঁর মৃত্যুতে আজ শোকে মুহ্যমান বাম রাজনৈতিক মহল। আজ মৃণাল সেনের মৃত্যুর খবর পেয়ে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য শোকবার্তায় জানান,


 আজ সকালে মৃণালদার মারা যাওয়ার খবর পেলাম। এ আমার নিকটাত্মীয়ের মৃত্যুসংবাদ। সত্যিকারের একটি যুগের অবসান হলো, তিনি যার শেষ প্রতিনিধি ছিলেন। চার দশক ধরে তিনি অনেকগুলি চলচ্চিত্র নির্মাণ করেছেন। বেশিরভাগই উত্তীর্ণ, সাফল্যের মুকুটও এনেছে দেশ-বিদেশ থেকে। চলচ্চিত্রে নির্মম বাস্তবতার সঙ্গে সৌন্দর্যময়তার যোগ, এই নিয়ে মৃণাল সেনের চলচ্চিত্রের নিজস্ব ভাষা তৈরি হয়েছিল। এখানেই তাঁর স্বাতন্ত্র্য। সত্তরের দশকের শুরুতে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে তিনি বুঝতে সাহায্য করেছেন দেশ-বিদেশের মানুষকে। মৃণাল সেন ছিলেন আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। রাশিয়া, জার্মানি, ইতালি, ফ্রান্স এমনকি সুদূর চিলির পরিচালকদের সঙ্গেও ছিলো তাঁর অন্তরঙ্গ বন্ধুত্ব। ভাবনাচিন্তায় তিনি ছিলেন দেশীয়, কিন্তু আন্তর্জাতিকতাবাদী, মুক্ত মনের মানুষ। চলচ্চিত্র পরিচালক মৃণাল সেন অবশ্যই বামপন্থী ছিলেন। বিশ্বাসে, জীবনযাপনে শেষদিন পর্যন্ত তিনি বামপন্থী ছিলেন। বহুবার তাই কলকাতার রাস্তায় তাঁকে পেয়েছি পায়ে পায়ে মানুষের মিছিলে। চলচ্চিত্রকার হিসাবে তাঁর জীবনবীক্ষার শিকড়ে ছিল বামপন্থা। মৃণালদা নব্বই বছর অতিক্রম করেছেন। মৃত্যুর আগে শরীরে কোনো অসুখ তাঁকে কষ্ট দেয়নি। তাঁর জন্মদিনে অনেক কথাবার্তাও হয়েছে আমার সঙ্গে। শারীরিক অসুস্থতা না থাকলেও দেশের বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশের জন্য একটা অশান্তি অস্বস্তি তাঁর মনে ছিলো। সেই নিয়েই তিনি চলে গেলেন। তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যে শ্রদ্ধা জানাই।

No comments

Theme images by lishenjun. Powered by Blogger.