জোটবদ্ধ শিক্ষক সমাজ! ঘেউ ঘেউ থেকে রাজকুমারের হত্যা, গ্রেফতার! তীব্র আন্দোলনের প্রস্তুতি।
শুরুতে রাজকুমার হত্যার প্রতিবাদে প্রথমে মোমবাতি মিছিল করা হয় তার পৈতৃক ভিটেতে। এখনো পর্যন্ত তার হত্যা রহস্যের কোনো কিনারা হয়নি। আর এই ঘৃন্য কাজ যারা করেছে তাদের যে এত সহজে ছাড়া পেতে দেবেন না শিক্ষক সমাজ তা বুঝিয়ে দিতে এক বিরাট প্রতিবাদ মিছিলের আয়োজন করা রায়গঞ্জে। রায়গঞ্জের গান্ধী মূর্তি বিদ্রোহী মোড় থেকে শিলিগুড়ি মোড় পর্যন্ত চলে শিক্ষকদের প্রতিবাদী মৌন মিছিল। গত ২৪ তারিখ মিছিল হয় কলকাতায় কমপক্ষে ২০0০ শিক্ষক অংশগ্রহন প্রতিবাদী মিছিলে।
প্রশাসন রাজকুমারের মৃত্যুকে আত্মহত্যার নাম দিতে চাইছে কিন্তু শিক্ষকরা একজোট হওয়ার চেষ্টা করছেন। নিগৃহীত শিক্ষদের পাশে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন বিখ্যাত আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য। আগামী ২৮ শে মে রায়গঞ্জ ইনস্টিটিউট হলে একটি প্রতিবাদী সভার আয়োজন করা হয়েছে। বিকাশ বাবু জানিয়েছেন শিক্ষকদের হয়ে আইনি লড়াই তিনি লড়বেন। কনভেনশনে উপস্থিত থাকবেন অধ্যাপক চঞ্চল চক্রবর্তী।
অন্যদিকে শিক্ষকদের সরকারের প্রতি অনাস্থা কি পরিমাণে জন্মেছে তা এক শিক্ষিকার লেখা দেখলেই আন্দাজ করা যায়। পারমিতা মুখার্জী বসু নামে এক শিক্ষিকা সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন "এতদিন শিক্ষকদের ডি.এ.,পে কমিশন থেকে বঞ্চিত রাখা হয়েছে, শিক্ষকরা কিছু বলেন নি। মনে ক্ষোভ থাকলেও তারা অক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন ছাত্রছাত্রীদের মানুষ করার জন্য। সমাজের নানা অশিক্ষিত কটুক্তি (শিক্ষক রা অনেক বেতন পান,অনেক ছুটি পান ইত্যাদি)সহ্য করে এসেছেন--কোন প্রতিবাদ করেন নি। এমন কি মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী শিক্ষক দের ঘেউ ঘেউ-ভেউ ভেউ করার কথা বলার পর শত অপমানের জ্বালা বুকে নিয়ে মুখ বুজে কাজ করে গেছেন--শুধু নিজেদের কর্তব্য পালনের কথা ভেবেছেন।
কিন্তু আজ যখন শিক্ষক রাজকুমারের অস্বাভাবিক মৃত্যু ,তার মৃত্যু কে প্রথমে আত্মহত্যা ও পরে দুর্ঘটনা বলে চালিয়ে দেওয়া এবং দুজন শিক্ষক এর হাজতবাস সমগ্র বঙ্গের শিক্ষক সমাজের রাতের ঘুম কেড়ে নিয়েছে-তখন তারা কিভাবে ঘরে বসে থাকবে--আমরা শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মীরা ভোটের দায়িত্ব পালন আর কিভাবে করব?একজন শিক্ষক ভোটের কেন্দ্র থেকে উধাও-তার লাশ দুদিন বাদে পাওয়া যায় রেল লাইনে-তার প্রতিবাদ করতে গিয়ে অন্যান্য শিক্ষক ভোটকর্মীদের মিথ্যা খুনের মামলায় জেলে ঢোকান হয়-কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে তোলা হয়--এর পর ও শিক্ষক সমাজ চুপ করে বসে থাকবে???
মনে এখন আর ক্ষোভ নেই--এখন আমরা সবাই রাজকুমার--আমাদের মনে এখন শুধুই আগুন জ্বলছে--রাজকুমারের মৃত্যুর সঠিক তদন্ত,ভোটের দায়িত্ব পালনের সময় তার মৃত্যুর কারণে তার পরিবারের প্রাপ্য ২০ লক্ষ্য টাকা এবং তার স্ত্রীর চাকরি,দুজন জেলবন্দি শিক্ষকের অবিলম্বে মুক্তি,সকল শিক্ষক-শিক্ষিকা-শিক্ষাকর্মী বন্ধু যারা পরবর্তীতে ভোটের দায়িত্ব পাবেন--তাদের উপযুক্ত নিরাপত্তার ব্যবস্থা------এই সমস্ত দাবী যতদিন না নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্যসরকার না মানবেন আমরা প্রতিবাদ কর্মসূচী চালিয়ে যাব..আমরা বিনা কারণে লুম্পেন দের হাতে মরতে রাজি নই..আমাদের লড়াই চলছে-চলবে"
Loading...
কোন মন্তব্য নেই