Header Ads

নির্বাচন, বন্ধ সব বিতর্ককে পিছনে ফেলে উঁকি দিলো ডিএ বিতর্ক।


নজরবন্দি ব্যুরো: পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে জোর বিতর্ক তৈরি হয়েছে রাজ্যে। সেই বিতর্ককে পিছনে ফেলে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা কি আদৌ প্রাপ্য সরকারি কর্মীদের? সেই নিয়ে আনেক বেশি চিন্তা নির্বিষ হরতালের সকাল ৯ টার ট্রেন-বাসে। বিজেপি সরকার সপ্তম বেতন কমিশন চালু করার পরে নতুন নিয়মে কেন্দ্রীয় সরকারের পেনশনভোগীরা মূল বেতন বা অবসরভাতার ৫ শতাংশ হারে ডিএ পাচ্ছিলেন। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেটাই বেড়ে হয়েছে প্রায় ৭ শতাংশের কাছাকাছি। আর এই সিদ্ধান্তে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে মহার্ঘ ভাতার ব্যবধান আরও ৬ শতাংশ বেড়েছে বলে দাবি বেশকিছু রাজ্য সরকারি কর্মী সংগঠনের। কর্মী সংগঠনের প্রতিনিধির মতে, রাজ্য ও কেন্দ্রের মহার্ঘ ভাতার মধ্যে ৩৯ শতাংশ পার্থক্য বেড়ে বর্তমানে দাঁড়িয়েছে ৪৫ শতাংশের কাছাকাছি। এইরকম পরিস্থিতিতেও রাজ্য সরকারের বক্তব্য নিয়েই তৈরি হচ্ছে নানা ধোঁয়াশা। বিশেষ করে রাজ্য সরকারি আইনজীবী আদালতে ডিএ নিয়ে মামলায় যে সব যুক্তি দেখাচ্ছেন, তাতেই বেশকিছু প্রশ্ন উঠছে। এখন প্রশ্নটা ডিএ কি সরকারের দয়ার দান, নাকি কর্মীদের প্রাপ্য অধিকার? বিএড নিয়ে নতুন সিদ্ধান্ত! শিক্ষাব্যবস্থাতে আসতে চলেছে বড়সড় রদবদল। ডিএ বিতর্ক শুরু হয় ২০১৭ সালের আগস্ট কিংবা সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ। সেপ্টেম্বরের ৭ তারিখ নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ১৫ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো। তিনি বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন, ‘‘ খুব আর্থিক সঙ্কটের মধ্যেও এটুকু ব্যবস্থা করতে পেরেছি। মিউ মিউ বা ঘেউ ঘেউ করে কোনও লাভ হবে না। যখন নিজেদের সরকার ছিল, তখন কি করছিলেন।’’ রাজ্যসরকারি কর্মচারীদের অনেকেই মনে করেন এই বক্তব্যের পিছনে রয়েছে সরকারি কর্মীদের ‘কুকুর-বিড়াল’ বিবেচনার মনোভাব। এ নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের তৎকালীন বিচারপতি নিশিথা মাত্রে বলেছেন, ‘‘ওই রকম শব্দপ্রয়োগ দুর্ভাগ্যজনক।’’ ‘দুর্ভাগ্যজনক’ এই বক্তব্য ভোলেননি সরকারি কর্মীরা। কিন্তু তার থেকেও রাজ্য সরকারি কর্মচারীদের বড় চিন্তা তৈরি হয়েছে এই ডিএ সংক্রান্ত মামলা কবে শেষ হবে। কেন্দ্র বা পড়শি রাজ্য সরকার যখন ডিএ বাড়াচ্ছে, তখন কী করে এমন প্রশ্ন তুলছেন— এটা দয়ার দান? আগের বাম সরকার তো কর্মীদের ডিএ-র দাবিকে এই ভাবে অস্বীকার করেনি, তবে কেন এই সরকার সেই একই প্রশ্নে বার বার উত্তপ্ত হচ্ছে আদাতলত কক্ষ! স্যাট এর রায়ে বলা হয়েছিল, ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারের ইচ্ছার উপরে নির্ভর করে! আর রাজ্য সরকার কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে জানিয়েছে, সরকারি কর্মীদের বকেয়া ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা চাওয়ার কোনও বৈধ অধিকারই নেই। এর পর স্যাটের বক্তব্য খারিজ করেছে আদালত রোপা-২০০৯ আইন অনুযায়ী মহার্ঘ ভাতা বকেয়া আছে কি না, জানতে চেয়েছে আদালত। অধিকার-কি অধিকার নয়,তানিয়ে চূড়ান্ত রায় দেবে আদালত। কিন্তু কিছু প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। বেতন কমিশন গড়া হয় দেশের সংবিধান মেনে। আর বেতন কমিশন সব সুপারিশ করে। তা মেনে নিয়েই কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার নিয়ম তৈরি করতে বাধ্যথাকে। সেই সুপারিশ মেনেই বেতন-কাঠামো সংশোধন হয়। এত কিছু আইনি ঝামেলা পেরিয়ে বেতন ও ভাতা চূড়ান্ত হয়। এর পরেও ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা রাজ্য দরকারি কর্মীদের অধিকার কিনা, সে প্রশ্ন ওঠে কি করে? ডিএ-র জন্য বিতর্কিত মন্তব্য করার দিনেই মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন ২০১৯-এর মধ্যে যাবতীয় বকেয়া ডিএ মিটিয়ে দেবেন। যদি ডিএ অধিকারই না হয়, তবে কেন এমন প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো? যদি তিনি তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে পারেন, তবে সেটা কোন আইনের উপর ভিত্তিকরে? আর তাই এটা এখনও রহস্যের তালিকাতে। আর তাই পঞ্চায়েত নির্বাচন ও গত কাল বামেদের ডাকা নির্বিষ বন্ধের আলোচনাকে টেক্কা দিয়ে ট্রেন বা বাসে আলোচনাতে বারবার উঠে এসেছে ডিএ প্রসঙ্গ।
Loading...

কোন মন্তব্য নেই

lishenjun থেকে নেওয়া থিমের ছবিগুলি. Blogger দ্বারা পরিচালিত.